স্টাফ রিপোর্টার-
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক মুক্তি পেয়েছেন। শুক্রবার (৩ মে) সকাল ১১টার কিছু আগে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শায়খুল হাদিস পরিষদের প্রচার সম্পাদক আল আবিদ শাকির বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য জানান।
গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালাও খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মামুনুল হকের জামিনে মুক্তি পাওয়ার খবরে কারা ফটকে ভিড় করেন তার সমর্থক ও হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা।
২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল রাজধানীর মোহাম্মদপুর জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেফতার হয়েছিলেন মামুনুল হক। তিনি হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব।
বৃহস্পতিবার রাতে তার মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল, তবে এ দিন তাকে মুক্তি দেয়নি প্রশাসন।
মামুনুল হকের ঘনিষ্ঠ এক আলেম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, হেফাজতে ইসলামের সাবেক এই কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সেক্রেটারিকে বৃহস্পতিবার রাতে স্বাগত জানাতে কারাগারের সামনে হেফাজত, খেলাফত মজলিস, শায়খুল হাদিস পরিষদের নেতাকর্মীরা গিয়েছিলেন। বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী জড়ো হওয়ার কারণে শেষ মুহূর্তে প্রশাসন রাতে মামুনুল হককে মুক্তি দেয়নি। কাল রাত থেকে মাওলানা মামুনুল হকের বড় ভাই মাওলানা মাহফুজুল হকও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
পরে রাষ্ট্রীয় একটি সংস্থার সূত্র গণমাধ্যমকে জানায়, মামুনুল হকের মুক্তিকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা থাকায় তাকে রাতে মুক্তি দেওয়া হয়নি।
শুক্রবার সকালে শায়খুল হাদিস পরিষদের একজন নেতা জানান, শুক্রবার সকালে মুক্তির সময় মাত্র কয়েকজন আলেম মামুনুল হককে বরণ করেন। ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টকাণ্ডের পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সংস্থা। ওই বছর বাংলাদেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আগমনকে কেন্দ্র করে ঢাকায় সংঘটিত সহিংসতার কয়েকটি মামলাও ছিল মামুনুল হকের বিরুদ্ধে। সবকটি মামলায় জামিন পাওয়ার পর আজ মুক্তি পেলেন মামুনুল হক।
এর আগে, ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বর মুভমেন্টে কেন্দ্র করেও মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মোট ৪১টি মামলা রয়েছে বলে জানান তার ঘনিষ্ঠ একজন আলেম।
২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মামুনুল হককে ঘেরাও করে। পরে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ভাঙচুর চালিয়ে তাকে নিয়ে যায়। ওই ঘটনার ১৫ দিন পর মামুনুল হককে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর তেজগাঁও বিভাগ পুলিশ। ২৭ দিন পর ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে ওই নারী বাদী হয়ে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের কথা বলে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন।