স্পোর্টস ডেস্ক-
১৯তম ওভারের চতুর্থ বলে অ্যাডাম মিলনের বলে বাউন্ডারি মেহেদী হাসানের। সঙ্গে সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে জয়ের উল্লাসে মাতল বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের করা ১৩৪ রানের জবাবে ৮ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের স্বাদ পায় বাংলার টাইগাররা। ৩৬ বলে ৪২ রানের অপরাজিত ইনিংসে দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন ওপেনিংয়ে নামা লিটন দাস।
এই সফরেই নিউজিল্যান্ডের মাঠে প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে জয় পায় বাংলাদেশ। এবার ইতিহাস তৈরি হলো টি-টোয়েন্টিতেও। এর আগে কিউইদের মাটিতে ৯টি টি-টোয়েন্টি খেললেও তাতে জয়ের মুখ দেখেনি টাইগাররা। দশম ম্যাচে এল ঐতিহাসিক জয়।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ১৩৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারে প্রথম উইকেট হারায় টাইগাররা। অ্যাডাম মিলনের বলে তুলে মারতে গিয়ে টিম সাউদিকে ক্যাচ দেন রনি তালুকদার। রনি ৭ বলে একটি ছক্কায় ১০ রান করেন। পাওয়ার প্লেতে জেমস নিশামের বলে ব্যক্তিগত ১৯ রানে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বাংলাদেশ অধিনায়ক ১৪ বলে ৪টি চারে ১৯ রান করেন।
৩৮ রানের দুই উইকেট হারিয়ে বিপদের শঙ্কায় থাকা বাংলাদেশকে দারুণভাবে টেনে নিতে থাকেন ওপেনার লিটন দাস ও চারে নামা সৌম্য সরকার। তবে দারুণ শুরু করলেও বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি তিনি। ৬৭ রানের মাথায় ফেরার আগে ১৫ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ২২ রান করেন তিনি। তৃতীয় উইকেটে ২৯ রান আসার পর চতুর্থ উইকেটেও আসে ২৯ রানের জুটি। ৯৬ রানের মাথায় তাওহীদ হৃদয় (১৯) ফিরলে ভাঙে এই জুটি। দলের সঙ্গে আর ১ রান যোগ হতে ফেরেন আফিফও। তবে অন্যপ্রান্তে লিটন ছিলেন অবিচল।
দলের জয়ের জন্য তখনো দরকার ৩৩ বলে ৩৭ রান। ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ। টাইগার ভক্ত-সমর্থকরাও কিছুটা শঙ্কায়। তবে সমর্থকদের মনে জন্ম নেওয়া ক্ষীণ শঙ্কা উড়িয়ে দিলেন লিটন। শেষ পর্যন্ত সাতে নামা শেখ মেহেদী হাসানকে সঙ্গে নিয়ে জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন তিনি। ৩৬ বলে ২টি চার ও ১ ছক্কায় ৪২ রান করে অপরাজিত ছিলেন লিটন। আর ১৬ বলে ১টি করে চার ও ছক্কায় অপরাজিত থাকেন মেহেদী।
এর আগে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। যেখানে টাইগারদের বোলিং তোপে প্রথমে ব্যাট করা কিউইরা নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রান করে। ফিল্ডিংয়ে নামা টাইগাররা প্রথম ২ ওভারেই মাত্র এক রানে ৩ উইকেট তুলে নেয়। পরে কিউইরা ২০ রানে আরও একটি উইকেট হারায়। এর মধ্যে দুইটি শরিফুল ইসলামের ও দুইটি মেহেদীর উইকেট।
এরপর ব্যাটিংয়ে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায় তারা। পঞ্চম উইকেটে ৩০ রানের জুটি আসে মার্ক চাপম্যান ও জিমি নিশামের ব্যাটে। ৫০ রানে চাপম্যানকে ফেরান লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। এরপর স্যান্টনারকে নিয়ে ৪১ রানের জুটি গড়েন নিশাম। ১৫তম ওভারে দলীয় ৯১ রানে শরিফুল ইসলাম তৃতীয়বার আঘাত করেন। ফিরিয়ে দেন ২৩ রান করা কিউই অধিনায়ককে।
১১০ রানের মাথায় নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর করা জেমস নিশামকে আউট করেন মোস্তাফিজুর রহমান। আফিফ হোসেনের ক্যাচে তাকে ফেরান ফিজ। নিশাম ২৯ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৮ রান করেন। কাটার মাস্টার নিজের পরের ওভারে মাঠ ছাড়া করান টিম সাউদিকে। ক্যাচ নেন সেই আফিফ। এরপর শেষ ওভারে ইস শোধিকে ফেরান অভিষেক হওয়া তানজিম সাকিব।
বাংলাদেশ বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট পান পেসার শরিফুল। এছাড়া মেহেদী ও মোস্তাফিজ ২টি করে উইকেট দখল করেন। একটি উইকেট পেলেও পেসার তানজিম হাসান সাকিব ছিলেন বেশ খরুচে। ৪ ওভারে দিয়েছেন ৪৫ রান।রান দেন।