আন্তর্জাতিক ডেস্ক
উড়িষ্যায় গত সপ্তাহের ভয়াবহ ট্রেন ট্রাজেডিতে নিহত হন প্রায় তিনশ মানুষ, আহত হন এক হাজারেরও বেশি। তাদের জন্য মোটা অংকের ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সেই টাকা হাতিয়ে নিতেই স্বামীর মৃত্যুর নাটক সাজিয়ে ক্ষতিপূরণ আদায়ের চেষ্টা করেছেন এক নারী।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে জানা যায়, কটক জেলার মানিয়াবান্দার বাসিন্দা গীতাঞ্জলি দত্ত দাবি করেছিলেন, তার স্বামী বিজয় দত্ত গত ২ জুনের ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এমনকি একটি মরদেহ তার স্বামীর বলে চিহ্নিতও করেছিলেন তিনি।
কিন্তু নথিপত্র যাচাই-বাছাইয়ে ধরা পড়ে, তার দাবি মিথ্যা। যদিও পুলিশ সেসময় তাকে শুধু মৌখিক হুঁশিয়ারি দিয়ে ছেড়ে দিয়েছিল। কিন্তু ঝামেলা শুরু হয় ওই নারীর স্বামী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে। এখন গ্রেফতারির ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অভিযুক্ত সেই নারী।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই নারী ও তার স্বামী ১৩ বছর ধরে আলাদা বসবাস করছেন। সরকারের অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা এবং তার মৃত্যু নিয়ে নাটক সাজানোয় স্ত্রীর কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন বিজয় দত্ত।
মানিয়াবান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বসন্ত কুমার সতপতী বলেন, পুলিশ গীতাঞ্জলির স্বামীকে বালাসোর জেলার বাহানাগা থানায় মামলা দায়ের করতে বলে, কারণ ঘটনাটি সেখানেই ঘটেছিল।
এরই মধ্যে ভারতীয় রেলওয়ে এবং রাজ্য পুলিশকে নিহতদের নিয়ে ভুয়া দাবিদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন উড়িষ্যার মুখ্য সচিব প্রশান্ত কুমার জেনা।
গত ২ জুন উড়িষ্যায় দুটি যাত্রীবাহী ও একটি মালবাহী ট্রেনের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়। এতে প্রাণ হারান ২৮৮ জন, আহত হন ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি। বিগত দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে ভারতে এটিই ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী ট্রেন দুর্ঘটনা।
এ ট্রাজেডির পরপরই নিহতদের পরিবারগুলোকে ১০ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দেয় ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পাঁচ লাখ এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আরও দুই লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। আহতদেরও ৫০ হাজার রুপি করে দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। অর্থাৎ, ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতিটি পরিবার মোট ১৭ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ পাবে। এই লোভই হয়তো সামলাতে পারেননি গীতাঞ্জলি দত্ত। সে জন্যই স্বামীর মৃত্যুর নাটক সাজান তিনি।
বা বু ম / অ