1. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  2. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  3. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ঢাকাবাসীকে নিরাপত্তা প্রদানের মহান দায়িত্বে পিছিয়ে থাকার কোন সুযোগ নেই-ডিএমপি কমিশনার আজ ঢাকায় আসছে মার্কিন প্রতিনিধি দল সবজি, পেঁয়াজ ও মুরগির দাম কমলেও, কমেনি আলুর দাম ঘোষিত হলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ডিএমপি কমিশনার মোঃ সাজ্জাত আলীর দায়িত্বভার গ্রহণ নতুন পুলিশ প্রধানের দায়িত্বভার গ্রহণ এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে জনগণই সকল ক্ষমতার মালিক হবেন- প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টা ও খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎ ঢাকা মহানগরে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার শেষেই দ্রুত সম্ভব নির্বাচন সংঘটিত হবে-আইন উপদেষ্টা

চিকিৎসার অভাবে বন্দি জীবন কাটছে শংকরীর

  • সময় : শনিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২১
  • ১৩৬

আল নোমান শান্ত
দুর্গাপুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধিঃ

যে বয়সে শংকরীর স্বামী সন্তান নিয়ে একটি সাজানো-গুছানো সংসার থাকার কথা সে বয়সে কিনা বাড়ির পুকুর পাড়ের এক পাশে টিনের তৈরি ভাঙা-চোরা পরিত্যক্ত একটি টয়লেটে বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন। অর্থের অভাবে বিনা চিকিৎসায় ২০ বছর যাবত এভাবে কাটছে মানসিক ভারসাম্যহীন ৪৫ বছর বয়সী শংকরীর জীবন। তিনি নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার পৌর শহরের আমলাপাড়া এলাকার মৃত শম্ভুলাল গুহের মেয়ে। তিন বোন, এক ভাইয়ের মধ্যে শংকরী দ্বিতীয়। তার পরিবার ও স্থানীয়রা জানিয়েছে, ‘লেখাপড়ায় খুব মেধাবী ছিলো শংকরী । স্থানীয় একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়াকালীন তার বাবার মৃত্যু হয়। আর্থিক সংকটের কারণে তখন তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সংসারের কাজে মনোযোগ দেয় সে। ২০০১ সালে হঠাৎ করে একদিন নাকের পলিপ সমস্যা দেখা দেয়। পরিবারের সদস্যরা তার অনেক চিকিৎসা করিয়েছেন তবুও সুস্থ করে তোলা সম্ভব হয়নি।

এরপর থেকে অস্বাভাবিকভাবে পরিবর্তন হতে শুরু করে শংকরীর আচরণে। একপর্যায়ে পুরোপুরি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। তখন থেকে শুরু হয় তার বন্দি জীবন। এরপর তার মা তাকে দেখাশোনা করতো। ২০১৩ সালের শেষ দিকে তিনিও পারি জমিয়েছেন পরপারে। এরপর থেকে সংসারের সকল দায় দায়িত্ব পড়ে তার ছোট ভাই জীবন লাল গুহের কাঁধে। সামান্য বেতনে জীবন লাল গুহ চাকরি করেন স্থানীয় একটি প্যাথলজিতে। সে টাকায় তিনবেলা সবার মুখে খাবার যোগাতেই হিমশিম খায় সে। তার উপর শংকরীর উন্নত চিকিৎসা কেনোভাবেই করানো সম্ভব হয়নি তার।

শংকরীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাদের সম্পদ বলতে যা আছে একটি ভাঙা ঘর। ওই ঘরে শংকরীর ছোট ভাই জীবন লাল গুহ তার স্ত্রী ও এক সন্তানকে নিয়ে বসবাস করছে। বাড়ির পাশের পুকুর পাড়ের এক পাশে টিনে মোড়ানো পরিত্যক্ত ভাঙা টয়লেটে বসসাস করছে শংকরী। টয়লেটে বাঁশের মাচার ওপর কাঠের তক্তা পেতে বিছানা বালিশ ছাড়া শুয়ে বসে জীবনের ২০ বছর পার করছে শংকরী। খাওয়া-দাওয়া, ঘুম,পয়ঃনিষ্কাশনসহ সব কিছু চলছে টয়লেটের ভেতরেই।

বর্তমানে চিকিৎসা না হওয়ায় মানসিক অবস্থা আরো অবনতি হয়েছে শংকরীর। তবে উন্নত চিকিৎসা ও সহযোগীতা পেলে শংকরী আবারো সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে বলে মনে করছেন প্রতিবেশিরা।

প্রতিবেশী ধনেশ পত্রনবীশ বলেন, দীর্ঘ ২০ বছর যাবত শংকরী মানসিক ভানসাম্য হারিয়ে এভাবে বসবাস করছে। তার ভাইয়ের সামর্থ্য নেই যে বোনকে উন্নত চিকিৎসা করাবে। কারণ সে নিজেই থাকে একটি ভাঙা ঘরে। সরকার ও এলাকার জনপ্রতিনিধিরা এগিয়ে এসে শংকরীকে উন্নত চিকিৎসা করালে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে।

শংকরীর ভাই জীবন লাল গুহ বলেন, ২০০১ সালে আমার বোন মানসিক ভারসাম্য হারান। এরপর বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করিয়েছি কিন্ত টাকার অভাবে কখনও উন্নত চিকিৎসা করাতে পারিনি বোনটিকে। আমার সামান্য বেতনে কেনো রকম সংসার চালায় । সরকার ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে আমার আকুল আবেদন আমার বোনটির জন্য উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থ্য করা।

পৌর মেয়র মো. আলা উদ্দিন বলেন, শংকরীর বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। অতিদ্রুত শংকরীকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করবো।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাজীব উল আহসান বলেন, শংকরীর বিষয়টি শুনে উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রাথমিকভাবে তার ঘর বানানোর জন্য টিন ও আর্থিক সহায়তা দিয়েছি। পরবর্তীতে সকল ধরনের সরকারি সহযোগিতা করা হবে শংকরীকে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪