1. boyd94289@gmail.com : Ayon Islam : Ayon Islam
  2. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  3. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  4. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
  5. bangladeshbulleting646@gmail.com : Sohel Desk : Sohel Desk
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:১০ পূর্বাহ্ন

পঞ্চগড়ের শুরু হয়েছে ভাদর কাটানি উৎসব স্বামীর মঙ্গলের জন্য

  • সময় : সোমবার, ১৬ আগস্ট, ২০২১
  • ৩৭৮

মোঃ মনিরুজ্জামান প্রত্যাশা
পঞ্চগড় প্রতিনিধি

স্বামীর মঙ্গল কামনায় শুরু ভাদর কাটানি উৎসব।পালনকারীদের বিশ্বাস, বিয়ের পর প্রথম ভাদ্র মাসে স্বামীর মুখ দেখলে অমঙ্গল হয়। এ জন্য নববধূ শ্রাবণের শেষদিকে বাবার বাড়ি চলে যান।

ভাদ্র মাসের প্রথম তিন থেকে সাত দিন নববধূ স্বামীর মুখ দেখলে অমঙ্গল হতে পারে—এমন বিশ্বাস থেকে শ্রাবণ মাসের শেষদিকে শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবার বাড়ি চলে যান নববধূরা। পঞ্চগড়ে এমন ধারণায় বিশ্বাসী নববধূরা বাবার বাড়ি যাওয়ার রীতিকে পালন করেন উৎসবের মতো করে। সে উৎসবেরই নাম ভাদর কাটানি।

পঞ্চিকা অনুযায়ী, আগামী সোমবার থেকে শুরু হবে ভাদ্র মাস। এর আগেই পঞ্চগড় সদরসহ বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়েছে ভাদর কাটানি উৎসব। একসময় নববধূরা গরু-মহিষের গাড়িতে করে বাবার বাড়িতে নাইওর যেতেন। এখন তাঁরা মাইক্রোবাস, ইজিবাইকে করে বাবার বাড়ি যান।

এই উৎসব পালনকারী নারীরা জানান, শ্রাবণ মাসের শেষ সপ্তাহে নববধূকে আনতে তাঁর ছোট ভাই-বোন, বান্ধবী, নানি, চাচি, ফুফু ও প্রতিবেশীরা বরের বাড়িতে যান। এ সময় তাঁরা সামর্থ্য অনুযায়ী মুড়ি, পায়েস, নানা রকম ফলসহ মিষ্টি সঙ্গে নেন। ওই দিন বরপক্ষ তাদের সাধ্যমতো অতিথিদের আপ্যায়ন করে নববধূকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। নববধূ মা-বাবার বাড়িতে তিন দিন অথবা সাত দিন থাকেন। এরপর বরপক্ষের লোকজনও বিভিন্ন পদের খাবার নিয়ে নববধূকে আনতে যায়। সাধারণত, বিয়ের পর প্রথম ভাদ্র মাসে এই উৎসব পালন করেন নববধূরা।

ঠিক কবে থেকে এই উৎসবের শুরু, তার কোনো লিখিত দলিল নেই। তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাবিবুর রহমান বলেন, ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে কৃষ্ণের জন্মদিন কেন্দ্র করে জন্মাষ্টমী ব্রত পালন করা হয়, একই রকমভাবে ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে রাধাষ্টমী ব্রত পালন করা হয়। বিয়ের আচার হিসেবে এসব ব্রত থেকে ক্রমে ভাদর কাটানি উৎসব বা সংস্কারের উদ্ভব বলা যায়।

হাবিবুর রহমান বলেন, ভাদ্র মাসজুড়ে পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমান, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ অঞ্চলে ভাদু নামক লৌকিক দেবীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এর সঙ্গেও বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গে প্রচলিত এই উৎসবের সম্পর্ক থাকতে পারে। কেননা ভাদু উৎসবে নারীর মনের কামনা, বাসনা এবং রাম-সীতার কাহিনি বিশেষভাবে স্থান পায়।

হিন্দু সংস্কৃতি ও আচার–অনুষ্ঠান থেকে এ ভাদর কাটানির উদ্ভব হলেও বর্তমানে এটা এ অঞ্চলের অনেকেই পালন করেন। হাবিবুর রহমান বলেন, সুদূর অতীতকাল থেকে হিন্দু-বৌদ্ধ-শৈবতান্ত্রিক, ইসলাম-বৈষ্ণব-খ্রিষ্টান প্রভৃতি ধর্ম ও সংস্কৃতির সহাবস্থানের প্রতীক হিসেবে ভাদর কাটানি উৎসব এখনো ধর্ম-বর্ণ–সম্প্রদায়নির্বিশেষে পঞ্চগড় অঞ্চলে প্রচলিত রয়েছে।

পঞ্চগড় শহরের কায়েতপাড়া এলাকার তরুণী সিভানা নাসরিনের দেড় মাস আগে বিয়ে হয়। নাসরিন বলেন, ভাদর কাটানি সম্পর্কে বেশি কিছু জানেন না। তাঁর মা–বাবা, দাদা-দাদিরাও এই রীতি পালন করেছেন। সে হিসেবে তাঁকেও বাবার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪