ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে প্রেমিক অন্য মেয়েকে বিয়ে করায় চিরকুট লিখে গলায় ওড়না পেচিয়ে ফাঁস দিয়ে প্রেমিকা মমতা মিতুর আত্মহত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে।
সোমবার মমতা মিতুর মামা মমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে ধর্ষণ, আত্মহত্যার প্ররোচণা এবং ভয়ভীতি প্রদর্শণের অভিযোগে প্রেমিক রাজু সহ চার জনকে আসামী করে ফুলবাড়ী থানায় এ মামলা দায়ের করেছেন।
জানা গেছে, উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের তালুক শিমুলবাড়ী গ্রামের মৃত আফাজ উদ্দিনের মেয়ে এবং শিমুলবাড়ী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মমতা মিতু (১৫)’র সাথে একই এলাকার দলিল লেখক মকু মিয়ার অনার্স পড়ুয়া ছেলে রাজু মিয়া (২২)’র প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
মামলার বাদী মমিনুল ইসলাম জানান, রাজুর সঙ্গে মমতার প্রেমের সম্পর্কের কথা সকলেই জানে। গত ৩০ জুলাই গভীর রাতে রাজু মমতার সাথে সাক্ষাত করতে গেলে এক ঘরে থাকা অবস্থায় তাকে আটক করা হয়।
পরের দিন ফুলবাড়ী থানার পুলিশ গিয়ে রাজুকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এক পর্যায়ে রাজুর পরিবার বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিলে আমরা মামলা করিনি। পরে সন্দেহজনক আটক মামলায় রাজুকে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। জামিনে বেরিয়ে এসে অন্যত্র বিয়ে করে বাড়ীতে নতুন বউ নিয়ে আসে রাজু।
গত রবিবার রাজুর বাড়িতে বৌ- ভাতের অনুষ্ঠান চলাকালীন বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে চিরকুট লিখে ক্ষোভে, দুঃখে অপমানে ঘরের আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে মমতা মিতু। চিরকুটে লেখা ছিল, “আমি মমতা মিতু। আমি রাজুকে খুব ভালবাসি। রাজুর জন্য আত্মহত্যা করলাম।
কারণ আমি ও রাজু দুজনেই দুজনকে খুব ভাল বাসতাম। কিন্তু রাজুর মা-বাবা আমাদের সর্ম্পকটা মানতে চান না। তাই রাজুর বিয়ে দিয়েছে। আজ ওর বৌ-ভাত, আমি এটা মানতে পারছিনা। তাই আমি এই পৃথিবী ছাড়লাম।
কিন্তু এই শাস্তি আমি একাই ভোগ করছি না। আমি চাই আমাদের এই সর্ম্পকটার মাঝে যারা বাঁধা ছিল,তারা যেন আইনি শাস্তি পায়। ইতি মিতু—।”
তিনি আরও জানান, রাজুর বিয়ের খবর শুনে আমার ভাগনী আত্মহত্যা করেছে। আমি প্রতারক রাজুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ প্রসঙ্গে ফুলবাড়ী থানার ওসি (তদন্ত) সারওয়ার পারভেজ জানান, বাদী ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় এবং দন্ডবিধি ৩০৬ ও ৫০৬ ধারায় চার জন আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলা নম্বর-০৯ তারিখ-০৯/০৮/২০২