ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার বেলজানী গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে বিবদমান দু’পক্ষের মধ্যে চলে আসছে সংঘর্ষ-ভাংচুরসহ নানা ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা। নিজেদের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষে গত দুই বছরে উভয় পক্ষের মাধ্যমে থানায় ১৪টিরও বেশী মামলা হয়েছে। উভয় গ্রæপে পঙ্গুত্ব বরণ করতে যাচ্ছে বেশ কয়েকজন। প্রায় দুই যুগ ধরে চলে আসা এই সংঘর্ষ-হানাহানির অবসান ঘটাতে উভয় পক্ষের নেতৃ স্থানীয়রা সম্মত হয়েছেন বলে জানা গেছে।বিশ্বস্ত সুত্র জানায়, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় পার্শ্ববর্তী ঘোষপুর ইউনিয়নের রাখালগাছি গ্রামে উভয় পক্ষের নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয়, তারা আর গ্রামে কোন প্রকার সংঘর্ষ-মারামারিতে যাবে না। আদালতে চলমান মামলাগুলো একে একে তুলে আনা হবে। সুত্র জানায় উভয় পক্ষ নিজ নিজ মামলা নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় তুলে আনতে সম্মত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ডিগ্রী কলেজের সভাপতি, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন এর উপস্থিতিতে এবং তাঁর আন্তরিক প্রচেষ্টায় প্রফেসার রেজাউল হক টিটোর আহবানে সাড়া দিয়ে দুই পক্ষের শীর্ষ নেতারা এই শালিশ বৈঠকে অংশ নেন। ময়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির মো: সেলিম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শালিশ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শালিশের অন্যতম সমন্বয়কারী খরসূতী উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি মোহাম্মদ তারিখ হোসেন টুটুল, প্রফেসার শাহিনুল ইসলাম শাহিন, প্রফেসার আবুল কালাম আজাদ, মেম্বার সবুজ মুন্সি অপর পক্ষে আলহাজ্ব রেজাউল করিম, প্রাক্তন মেম্বার মো: নায়েব আলী, মো: আলাউদ্দীন মাতুব্বর, সার্জেন্ট মো. রেজাউল হকসহ আরও অনেকে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ্যাডভোকেট আমিন-উর-রহমান একটি অঙ্গিকারনামা তৈরী করবেন। উক্ত অঙ্গিকারনামায় উভয় পক্ষ স্বাক্ষর করবেন। পরবর্তীতে উভয় পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে আমিন-উর-রহমানের মাধ্যমে আদালত থেকে মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হবে।জানা গেছে, ‘শান্তিপূর্ণ বেলজানী পুনরুত্থানের’ নেপথ্য কারিগর ছিলেন এক সময়ের মেধাবী ছাত্রী, সফল ব্যবসায়ী বেলজানী গ্রামের ঐতিহ্যবাহী মোল্যা পরিবারের সন্তান শামীমা আক্তার মায়া। গ্রামের সর্বস্তরের মানুষ মায়ার এই মহতী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে। সাধারণ গ্রামবাসীর কামনা, দীর্ঘদিনের চলমান হিংসা-বিদ্বেষ-দলাদলি ভ‚লে বেলজানী গ্রামে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে একসাথে সকলে মিলে সুন্দর বাসযোগ্য গ্রাম গড়ে উঠুক। আর কোন রক্ত ঝড়া দেখতে চায় না তারা। শান্তির সুবাতাস বয়ে যাক বেলজানী গ্রামের
সর্বত্র।