কুবি প্রতিনিধিঃ
কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) বিভিন্ন বিভাগে বড় ধরণের সেশন জট সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে বন্ধে আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো সশরীরে গ্রহণ শুরু করেও তা মাঝপথেই দুইবার স্থগিত হয়ে যায়।
সেশনজটের ধাক্কা সামলাতে ডিজাস্টার রিকভারি প্ল্যান ও অনলাইন পরীক্ষার জন্য কমিটি গঠন করা হলেও প্রশাসন থেকে কমিটিগুলোর আহ্বায়কদ্বয় এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি পাননি। এ অবস্থায় শিক্ষা জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে দ্রুত সংকট নিরসনে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।
নৃবিজ্ঞান ১১ তম আববর্তনের শিক্ষার্থী, ইশতিয়াক আহমেদ পরীক্ষার স্থগিত ও সেশনজট নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত অনলাইন এক্সামের কার্যক্রম শুরু করা, এতে আমরা আমাদের স্থগিত পরীক্ষা গুলে যেমন শেষ করতে পারবো তেমনি সেশন জট দীর্ঘ হবার যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে তা হ্রাস পাবে।
এদিকে পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নূরুল করিম চৌধুরী বলেন, অনলাইনে পরীক্ষার ব্যাপারে আমাদের কাছে এখনো কোন সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আসেনি। ইতোমধ্যে অনলাইন পরীক্ষার ব্যাপারে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, ওই কমিটি থেকে যেই সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা আসবে সেই আলোকেই আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে থাকব।
অনলাইন পরীক্ষা গ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়ের জন্য গঠিত কমিটির আহ্বায়ক ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন মোঃ তোফায়েল আহমেদ বলেন, এটা আসলে কমিটিটা যে হয়েছে, সেটা একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটে যতদূর জানি পাশ হয়েছে। চিঠি এবং টার্মস এন্ড কন্ডিশনগুলো না জানা পর্যন্ত কিছু বলতে পারছি না। চিঠি পেলে আমরা কাজ শুরু করতে পারবো।
ডাইজেস্টার রিকভারি প্ল্যান কমিটির আহ্বায়ক মো: রশিদুল ইসলাম শেখ’ বলেন, আপনারা যেটা শুনেছেন, আমাকে যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এটা হল মৌখিক আদেশ। কাগজপত্র পেলে আমি বুঝব আমাকে আসলে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কাগজপত্র না পেলে আমি কী করে বুঝব আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে? আনুষ্ঠানিক চিঠি পেলেই যতদ্রুত সম্ভব ওই নির্দেশনার আলোকে আমরা কমিটি মেম্বাররা মিটিং কল করে সেই বিষয়ে একটা কর্মপরিকল্পনা তৈরি করব।
সার্বিক বিষয়ে কুবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, আমরা অপেক্ষা করছি, যদি অবস্থা খারাপ হয়, আমাদের তো শিডিউল আছেই, যারা ফাইনাল ইয়ার, যেমন মাস্টার্স ২-১ টা পরীক্ষা বাকি আছে বা অনার্স তাদেরকে অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা রুটিনটা রিশিডিউল করে শুরু করে দিবো। প্রত্যেকটা দিনই তো এখন আনসার্টেইন, অবস্থা একটু ভালো হলে আবার শিডিউল দিয়ে দিবো।
অনলাইন পরীক্ষা সম্পর্কে তিনি বলেন, অনলাইন পরীক্ষা তো ইম্পসিবল! কেউ পারতেছে না। অনলাইনে নিলে তো একই অবস্থা! অনলাইনে প্রথম কথা হচ্ছে নেট থাকে না, ক্লাসই করতে পারে না। সবাই তো এটেন্ডই করতে পারবে না।
অপরদিকে কমিটিদ্বয়ের আহ্বায়কদের কাছে চিঠিপত্র না পৌঁছানোর বিষয়ে করোনা ও লকডাউনের কথা উল্লেখ করে কুবি উপাচার্য বলেন, ‘পেয়ে যাবে, কাজ শুরু করে দিবে, আমি বলবো।’