ডেস্ক নিউজ:
শেষ আট নিশ্চিত ছিল, তবে গ্রুপ শ্রেষ্ঠত্বটা ছিল ঝুলে। তবে দলে যখন লিওনেল মেসি থাকেন তখন আর ভাবনা কিসের? দুটো গোল করে, একটি করিয়ে বলিভিয়ার বিপক্ষে আর্জেন্টিনার ৪-১ ব্যবধানের জয়ে মেসি রেখেছেন বড় অবদান। ফলে আলবিসেলেস্তেরা শেষমেশ গ্রুপসেরা হয়েই উঠে গেছে শেষ আটে।
গ্রুপে নিজেদের অবস্থানের ওপর নির্ভর করছিল কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ। সমীকরণটা ছিল এমন, গ্রুপসেরা হলে প্রতিপক্ষ হবে ইকুয়েডর আর রানার্স আপ হলে প্রতিপক্ষ হবে শক্তিশালী কলম্বিয়া। দিনের অন্য ম্যাচে উরুগুয়ে জিতে চলে এসেছিল আর্জেন্টিনার সঙ্গে সমতায়, দুই পয়েন্ট ছিল সমান সাত। গোল ব্যবধানেও ছিল সমতা। আর্জেন্টিনা শেষ ম্যাচে বলিভিয়ার কাছে হেরে গেলে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে মেসিরা গ্রুপপর্ব শেষ করতেন দ্বিতীয় অবস্থানে।
এমন সমীকরণ অবশ্য কোনো চাপে ফেলেনি আর্জেন্টিনাকে। বরং শেষ ম্যাচেই যেন দেখা মিলল আরও ক্ষুরধার আর্জেন্টিনার। কোচ স্ক্যালোনির কৃতিত্বও আছে বৈকি! গ্রুপ পর্ব আর বিশ্বকাপ বাছাই মিলিয়ে এর আগের পাঁচ ম্যাচে শুরুতে এগিয়ে গিয়ে বাকি সময় রক্ষণকাজটা করেই জয় আদায় করতে চেয়েছিলেন তিনি, আজ সে পথে হাঁটেননি। তাতেই দেখা মিলল অন্য আর্জেন্টিনার।
কোচ লিওনেল স্ক্যালোনি এদিন ছয়টি পরিবর্তন এনেছিলেন দলে। ছয় খেলোয়াড় হলুদ কার্ড দেখে নিষেধাজ্ঞার শঙ্কায় ছিলেন, তাদেরকেই বিশ্রাম দিয়েছিলেন কোচ। তাদের বদলে একাদশে এসেছিলেন গোলরক্ষক ফ্র্যাঙ্কো আরমানি, লিসান্দ্রো মার্টিনেজ, গিদো রদ্রিগেজ, এক্সেকিয়েল পালাসিওস, হেরমান পেজ্জেলা ও আনহেল কোরেয়া।
গ্রুপ শ্রেষ্ঠত্ব নিশ্চিত করার ম্যাচে মেসি জাদুতেই যেন বিমোহিত ছিল আর্জেন্টিনা, এগিয়ে গিয়েছিল ষষ্ঠ মিনিটেই। সতীর্থ আলেসান্দ্রো পাপু গোমেজকে দিয়ে মেসি করালেন এক গোল। এরপর ৩২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে করলেন একটি, টুর্নামেন্টে ‘ওপেন প্লে’ থেকে নিজের প্রথম গোলের দেখাও পেলেন এর একটু পরেই। তাতে চলে গেলেন হ্যাটট্রিকের খুব কাছে। তাতে আর্জেন্টিনা বিরতিতে যায় ৩-০ গোলের বিশাল এক ব্যবধান নিয়ে।
প্রথমার্ধে যে দাপটটা নিয়ে খেলেছে আলবিসেলেস্তেরা, সেটা তারা ধরে রেখেছিল বিরতির পরেও। ৬০ মিনিটে বলিভিয়ার গোলটা এসেছে অনেকটা স্রোতের বিপরীতেই। জাস্টিনিয়ানোর বাড়ানো বলে দারুণ এক ফিনিশে এরউইন সাভেদ্রা ফাঁকি দেন টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা ফ্র্যাঙ্কো আরমানিকে।
তবে গোল হজম করেও আর্জেন্টিনা একটুও বিচলিত হয়নি। বরং আবারও তিন গোলের লিড ফেরত পেয়েছে সাত মিনিটেই। মেসির বাড়ানো বলে আকুনইয়ার ক্রস আসে বক্সে। সেখানে দুটো শট সেভ দিলেও বদলি হিসেবে মাঠে নামা লাওতারো মার্টিনেজের শট আর ঠেকাতে পারেননি বলিভিয়া গোলরক্ষক লাম্পে। ৪-১ গোলে এগিয়ে যায় মেসির দল।
এরপর লাওতারো হ্যাটট্রিকও করে বসতে পারতেন, যদি না লাম্পে অতিমানব হয়ে উঠতেন। তার এমন পারফর্ম্যান্সের শিকার হতে হয়েছে মেসিকেও। শেষ দিকে তারও দুটো শট ঠেকিয়ে হ্যাটট্রিক করতে দেননি বলিভিয়া গোলরক্ষক। সেজন্যেই বলিভিয়া আরও বড় লজ্জার হাত থেকে রেহাই পেয়েছে।
তবে তাতে আর্জেন্টিনার ক্ষতি হয়নি আদৌ। এই জয়ের ফলে ৪ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তারা উঠে গেছে তালিকার শীর্ষে। এ গ্রুপের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে শেষ আটে উঠে গেছে। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ হবে ইকুয়েডর।