করোনার সংকট স্থবিরতা যেনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যাচ্ছেই না। করোনা কারনে ১৭ মার্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনার প্রায় ৮ মাস হলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আশঙ্কায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে নারাজ শিক্ষা মন্ত্রনালয়। এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় গুলো পরীক্ষা ছাড়াই পরের সেমিস্টার অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছে, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে অটো পাস সহ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা স্ব-শরীলে আয়োজন নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ছে উপাচার্যরা। করোনা দ্বিতীয় ঢেউ সম্ভাবনায় শিক্ষার্থীদের ভাবনা শুনেছেন
মো: ইসরাফিল আলম রাফিল।
করোনা মহামারীর জন্য গত মার্চ থেকেই অস্থিরতা প্রায় প্রতিটি খাতে। এর মধ্যে শিক্ষাখাত অন্যতম। ইতোমধ্যে ধীরে ধীরে সব স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও শিক্ষাখাত এখনো থমকে আছে। মার্চ থেকে শিক্ষাকার্যক্রম একরকম বন্ধ হয়ে আছে।
অন্যদিকে, শীতকালীন আবহাওয়ার জন্য বিশ্বস্বাস্থ্যসংস্থা করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে আগাম সতর্কও করেছেন। এমনকি ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যর অনেক দেশেই দ্বিতীয় মেয়াদে পুনরায় লকডাউনের মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিষয়টি আমলে নিয়েছেন এবং মাস্ক ব্যবহারের জোর তাগিদ দিয়েছেন।
এমতাবস্থায়, শীতের সময়টিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার উপযুক্ত পরিবেশ মনে করছিনা। সেক্ষেত্রে সরকারীভাবে অনলাইনভিত্তিক পাঠদানের বিষয়টি আরো গুরুত্ব দেয়া ও পরিবেশ নিশ্চিত করা অতীব জরুরি।
ফুরকান শাহ্
ফার্মেসি বিভাগ
ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়
২০২০ সাল চলে যাচ্ছে, এবছর মনে হয়নি আমি একজন শিক্ষার্থী। সাধারণত অনার্সের লেখাপড়ার গতি খুবই স্থবির। অনার্সে লেখাপড়া মানে পরীক্ষার আগে পড়ার বিশাল ধুম কিন্তু ২০২০ সালে এই ইতিহাসের পরিবর্তন ঘটেছে আমার জীবনে। আমি আমার লেখাপড়ার জীবনকে খুব মিস করছি।
প্রথমে লকডাউন খুব উপভোগ করেছি কিন্তু কথায় আছে অতিরিক্ত কোনকিছু ভালোনা। এই ব্যাপক সময়কার লকডাউনই কাল হয়ে দাড়িয়েছে। তবুও ক্যাম্পাস খোলার অপেক্ষায় থাকি। শীতকাল আসতেছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসার আশঙ্কা বাড়ছে। তার মানে আবার লকডাউন। এটা খুবই ক্ষতিকর শিক্ষার্থীদের জন্য । অনলাইন ক্লাসগুলো হচ্ছে তবে এতে আমাদের নানা দুর্ভোগ হচ্ছে, অনেকসময় নেটের সমস্যার কারণে ক্লাস ও করতে পারছি না।
সর্বোপরি, লেখাপড়া এমনিতেও নাই হয়ে যাচ্ছে। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারিতে ক্যাম্পাস খোলা সম্ভাবনা ছিল তাও এখন ধোঁয়াশা। আমাদের শিক্ষাজীবন হুমকিস্বরূপ হয়ে পড়েছে।
খাদিজা আক্তার মুন
খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগ,
ময়মনসিংহ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ
৮ ই মার্চে করোনা প্রাদুর্ভাব শুরু হলেও তীব্রতা বাড়ে জুনের দিকে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে জুনের শেষের দিকে আশঙ্কাজনকভাবে নমুনা পরীক্ষা কমতে থাকে। একটা বিষয় লক্ষনীয় যে,যত দিন যাচ্ছে মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মধ্যেও উদাসীনতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে শীতকালে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে জনজীবনের নেমে আসতে পারে স্থবিরতা, শিক্ষা ব্যবস্থায় স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেক প্রভাব ফেলতে পারে।
সর্বোচ্চ সংখ্যক আইসোলেশন নিশ্চিত করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া দরকার। করোনার দ্বিতীয় প্রকোপ ঠেকাতে সার্বিক দিক গুলোতে আরো বেশি ফোকাস করা দরকার। দিনশেষে সবাই করোনামুক্ত একটা সুস্থ পৃথিবীর অপেক্ষায়।
মোঃআল-আমিন ইসলাম
PME ডিপার্টমেন্ট
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগীর সন্ধান মিললে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিলো সারাদেশে,স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা লোকজনের সংখ্যা ও ছিলো প্রচুর। কিন্তু সংক্রমণের দুই তিন মাসের মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় অনীহা দেখা যাচ্ছে লোকজনের মধ্যে।
শীতকালে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে আশঙ্কায় আছেন বিশেষজ্ঞরা যার কারণে এখনও পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শীতকালে শ্বাসতন্ত্রের রোগ প্রকোপ হয় যার কারণে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শীতকালীন পরিস্থিতি কে নাজুক করে তুলতে পারে। চলতি মাসের প্রথম দিন থেকেই দেখা দিয়েছে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রকোপ,হঠাৎ করেই বেড়ে গিয়েছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার।
করোনা নামক চলমান এই যুদ্ধের দ্বিতীয় ঢেউ এর সাথে লড়াই করার জন্য পর্যাপ্ত পূর্ব প্রস্তুতি থাকতে হবে অন্যথায় বাংলাদেশ কে চরম বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হবে। নিজে মাস্ক পরতে হবে এবং অন্য কে এ ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে,এ ব্যাপারে দায়িত্ব আমাদের সবারই।
জান্নাতুন নূর অমি
ইংরেজি বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
বর্তমান বিশ্বে মারাত্মক আতঙ্কের নাম করোনা ভাইরাস। এই করোনাকালীন সময়ে ঘরবন্দী আমরা শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ ৬ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরে এইসএইসসি পরীক্ষা না হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়, এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা সিদ্ধান্ত নেওয়ার পালা।কবে হবে ভর্তি পরীক্ষা হবে, কিভাবে হবে, কোথায় হবে কিছুই জানা নেই আমাদের। সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছি আমরা সঠিক প্রস্তুতিও নিতে পারছিনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন দেখে অনলাইন ক্লাস করে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু বাংলায় একটা প্রচলিত কথা আছে,” দুধের স্বাদ কি আর ঘোলে মিটে ” স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবো, নতুন বন্ধু হবে,আড্ডা দিবো, বিভিন্ন খেলাধুলায় মাতাবো ক্যাম্পাসের সোনালী দিনের কথা চিন্তা করেই কাটছে দিন।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আশঙ্কা নতুন করে চিন্তিত করছে। সবশেষে, আমরা এমন একটি সকালের অপেক্ষায় যেদিন ঘুম থেকে উঠেই শুনবো পৃথিবী করোনামুক্ত।
মোসাঃনুরজাহান
মানবিক বিভাগ
ধামুরা ডিগ্রি কলেজ।