ইউনুস আলী খলিফা শামীম বয়স (৫০) বরিশাল নগরীর গোরাচাঁদ দাস রোডের ভাড়াটিয়া। পরিবারের একমাত্র উপার্জন কারী ব্যক্তি তিনি। ২ মাসের এক কন্যা সন্তানকে রেখে আজ ৪০ দিন হলো স্ত্রী কে হারিয়েছেন তিনি। শারীরিক বিভিন্ন অসুস্থতায় এখন কর্মহীন। কিছুদিন পূর্বেও দিনমজুরের কাজ করে দিন কাটাতে পারত কিন্তু অসুস্থতা এবং করোনা প্রভাবের কারণে এখন তাও পারছেননা। শিশু সন্তানের লালন পালন এবং তার খাবার দুধ কেনার জন্য অনেকের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে শেষ পর্যন্ত একটু সহযোগিতার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন।
গত সপ্তাহে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় নিয়মিত গণশুনানিতে আসলে তার কথা শুনে জেলা প্রশাসক সত্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রবেশন অফিসার কে বলেন।
একই দিনে নগরীর ১০ নম্বর ওয়ার্ড কেডিসির বাসিন্দা মামাতো ফুফাতো ভাই মানিক খলিফা বয়স (২৫) এবং মোঃ শাহিন বয়স (২৬) তারা দুজনেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। মানিক খলিফা পুরানো নষ্ট ব্যাটারি কিনে ভাঙ্গারির কাছে বিক্রি করতো কিন্তু করোনা কালিন সময়ে তাও বন্ধ হয়ে গেলো এখন সে দারিদ্র্যের সাথে যুদ্ধ করে মা বাবা নিয়ে কষ্টে জীবন কাটাচ্ছে। এদিকে শাহীন কোন কাজ করতে পারছেনা শারীরিক অক্ষমতার কারণে স্ত্রী এবং ছোট দুটি ছেলে মেয়ে নিয়ে তার কোন মতে দিন কাটছে। শারীরিক প্রতিবন্ধী হবার কারনে তার দুই ভাই একই সাথে চলাফেরা করে। তারাও একটু সহযোগিতার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে হাত বাড়িয়েছে।
গণশুনানিতে তাদের কথা শুনে নিয়ম মেনে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ এবং উপপরিচালক জেলা সমাজসেবা কার্যালয় বরিশাল আল-মামুন তালুকদারকে বলেন। পরবর্তীতে তাদেরকে সাথে নিয়ে জেলা প্রশাসক বরিশাল এস, এম, অজিয়র রহমান আজ ১৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকালে ইউনুস আলী খলিফা কে একটি ভ্যান গাড়ী কিনে দেওয়ার পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় সবজি বিক্রয়ের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে সহযোগিতা করেন এবং তার শিশু সন্তান টির লালন পালনের জন্য নগদ ৭ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করেন। একই সময় মানিক এবং শাহিন কে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে একটি ভ্যান গাড়ী কিনে দেওয়ার পাশাপাশি কিছু ফল মূল কিনে দেন ব্যবসা করার জন্য। এমনকি পুঁজি হিসেবে তাদের হাতে ৬ হাজার টাকা তুলে দেন জেলা প্রশাসক। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপ-পরিচালক জেলা সমাজসেবা কার্যালয় বরিশাল আল-মামুন তালুকদার, সিনিয়র সহসভাপতি জেলা আওয়ামী লীগ বরিশাল মোঃ হোসেন চৌধুরী, প্রবেশন অফিসার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বরিশাল সাজ্জাদ পারভেজসহ আরও অনেকে।
সহযোগিতা পেয়ে তাদের এবং তাদের পরিবারের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। জেলা প্রশাসক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গরীব দুঃখী মানুষের জন্য দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন, আজ তার মানবিক উদ্যোগকে একটু এগিয়ে নিতে দরিদ্র মানুষদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে একটু ছোট্ট প্রয়াস মাত্র।