সম্প্রতি বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবিতে নারী শিশুসহ ৩৪ জনের প্রাণহানির ঘটনায় নৌপরিহন মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে আজ মঙ্গলবার প্রকাশ করা হচ্ছে।সোমবার রাতে তদন্ত প্রতিবেদন নৌপরিহন মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি। সেখানে ‘এমএল মর্নিং বার্ড’ লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার ঘটনায় ‘এমভি ময়ূর-২’ লঞ্চটিকে দায়ী করা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
এছাড়া পুরো ঘটনায় ময়ূর-২ এর মাস্টার ও চালকসহ সকল স্টাফদের অবহেলা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানা যায়।লঞ্চ ডুবির ঘটনায় মন্ত্রণালয় ওই দিনই সাত সদস্যের উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। মন্ত্রণালয়ের বেধে দেওয়া সাত দিনের সময় শেষে সোমবার এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।জানা যায়, তদন্ত কমিটিতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন) রফিকুল ইসলাম খানকে আহ্বায়ক এবং বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিএ) পরিচালক (নৌ নিরাপত্তা) রফিকুল ইসলামকে সদস্য সচিব করা হয়।
কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটন, দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তি বা সংস্থাকে শনাক্তকরণ এবং দুর্ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় উল্লেখ করে সুনির্দিষ্ট সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। সাতদিনের মাথায় সোমবার রাতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি।তদন্ত কমিটির এক সদস্য আজ সকালে গনমাধ্যমকে জানান, ঘটনার পর তারা প্রত্যক্ষদর্শীসহ অন্তত ৫০ জনের সাক্ষ্য নিয়েছেন। এছাড়া লঞ্চডুবির ঘটনার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করেছেন। তাদের অনুসন্ধানে মর্নিং বার্ড লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার একমাত্র কারণ হিসেবে ময়ূর-২ লঞ্চের ধাক্কা দেওয়াটাই প্রধান ও একমাত্র কারণ হিসেবে উঠে এসেছে।
এছাড়া পুরো ঘটনায় ময়ূর-২ এর মাস্টার, সাকিন, চালকসহ সকল স্টাফদের অবহেলা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার প্রমাণ পাওয়া গেছে।গত ২৯ জুন রাজধানীর সদরঘাটের কাছে শ্যামবাজার এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীতে ‘এমভি ময়ূর-২’ এর ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চ ‘এমএল মর্নিং বার্ড’ ডুবে যায়। সকালে মুন্সীগঞ্জের কাঠপট্টি থেকে ঢাকার সদরঘাটের দিকে আসা মর্নিং বার্ড লঞ্চটি শতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়। এই ঘটনায় এই পর্যন্ত ৩৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।অপর দিকে, বুড়িগঙ্গায় লঞ্জ ডুবির ঘটনায় ওই রাতেই নৌপুলিশ সদরঘাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ শামসুল আলম বাদি হয়ে অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগ এনে সাত জনের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলো, এমভি ময়ূর-২ এর মালিক মোসাদ্দেক হানিফ সোয়াদ, লঞ্চের মাস্টার আবুল বাশার মোল্লা ও জাকির হোসেন, চালক শিপন হাওলাদার ও শাকিল হোসেন এবং সুকানি নাসির মৃধা ও মো. হৃদয়।অভিযুক্ত লঞ্চের মালিক, মাস্টার ও চালক পলাতক রয়েছে। এখনও কোনও আসামি গ্রেফতার হয়নি।