স্টাফ রিপোর্টার-
সাভার থেকে ফারজানা নামের এক গর্ভবতী নারীকে অপহরণ ও নির্যাতনে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় কয়েকজননের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
অভিযোগ উঠেছে গর্ভবতী নারীকে অপহরণ ও হত্যার নেপথ্যে রয়েছেন মিরপুরের চিহ্নিত অপরাধী আসলাম গাজী।
ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, আসলামের নির্দেশেই সাভার থেকে গর্ভবতী ও এক সন্তানের জননী ফরজানাকে অপহরণ করে এনে পল্লবীর বাউনিয়াবাদ এলাকার একটি বাসায় আটকে রাখা হয়। সেখানেই দু’দিন ধরে চলতে থাকে পাশবিক নির্যাতন যার পরিণতিতে ফরজানার মৃত্যু হয়।

জানা যায়, ফরজানা নামের ওই ইহিনারী আগে থেকেই গর্ভবতী ছিলেন। তাকে পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করে আনা হয় এবং আসলাম গাজীর নির্দেশে তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা তার ওপর নির্যাতন চালায়। ঘটনা সংঘটনের দুই দিন পর তার মরদেহ উদ্ধার হয়। বিষয়টি জানাজানি হতেই পুরো এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
এই ঘটনায় নিহত ফরজানার পরিবারের পক্ষ থেকে পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ফারজানা নামের এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা হয়েছে।
আসলাম গাজীর সংশ্লিষ্টতার বিষয় জানতে চাইলে ওসি বলেন, এমনটা শোনা যাচ্ছে। এই বিষয় এজাহার দেখে বিস্তারিত বলতে পারবো।
আসলাম গাজীর অপরাধের ফিরিস্তি :
আসলাম গাজী বহু বছর ধরেই বিভিন্ন অপরাধে জড়িত। তার বিরুদ্ধে রয়েছে চাঁদাবাজি, জমি দখল, অস্ত্র ও মাদক ব্যবসা এবং খুনের অভিযোগ।
রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী ও আশেপাশের এলাকায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত নাম আসলাম গাজী। পল্লবীর চাঞ্চল্যকর রফিক হত্যার সঙ্গেও তার সংশ্লিষ্টতার কথা শোনা যায়, তবে অদৃশ্য শক্তির কারণে মামলায় তার নাম আসে নি। আসলাম জমি দখল, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। স্থানীয়দের মতে, প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তার ছত্রছায়ায় সে গড়ে তুলেছে একটি অপরাধের সাম্রাজ্য।
অপরাধ জগতের উত্থান:
আসলাম গাজীর উত্থান শুরু হয় নব্বই দশকের শেষ দিকে। তখন সে ছিল একজন স্থানীয় মাস্তান, মিরপুর-১১ নম্বর সেকশনের কয়েকটি পকেট এলাকায় চাঁদাবাজি করত। অল্প সময়ের মধ্যেই সে সংগঠিত করে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ। গ্যাংটির প্রধান কাজ ছিল জমি দখল, ভবন নির্মাণে চাঁদা আদায়, এবং প্রতিপক্ষকে হুমকি দেওয়া।
সূত্র মতে, আসলাম গাজী বর্তমানে একাধিক বাণিজ্যিক ভবনের মালিক হলেও, তার অধিকাংশ সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করা। কোনো ব্যক্তি যদি জমি বা ফ্ল্যাট বিক্রি করতে চায়, তাদেরকে বাধ্য করা হয় চাঁদা দিতে অথবা সরাসরি তাকে বিক্রি করতে হয় আসলাম গাজীর নিয়ন্ত্রণে থাকা দালালদের কাছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের নিরবতা ও রাজনৈতিক আশ্রয়ে আসলাম গাজী বিভিন্ন সময় থেকেছে। ফলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও, বেশিরভাগ সময়েই আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি।