স্পোর্টস ডেস্ক-
টানা দ্বিতীয়বারের মতো কোপা আমেরিকার এবারের আসরের জয়ের মুকুটের ধরা অব্যাহত রাখল আর্জেন্টিনা।
কোপা আমেরিকার ফাইনাল খেলেই জাতীয় দলের জার্সি তুলে রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন ডি মারিয়া। তাই শিরোপা উঁচিয়ে ধরেই আর্জেন্টিনাকে বিদায় জানাতে চেয়েছিলেন এই তারকা। তার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। লাউতারো মার্টিনেজের একমাত্র গোলে কোপা আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা।
আজ সোমবার (১৫ জুলাই) ফাইনালের নির্ধারিত ৯০ মিনিটেও গোল না হওয়ায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে ১১২ মিনিটের মাথায় লাওতারো মার্টিনেজের গোলে লিড নেয় আর্জেন্টিনা। শেষ পর্যন্ত কলম্বিয়া সেই গোল শোধ করতে না পারায় শিরোপা উল্লাসে মাতেন আলবেসেলেস্তেরা। এটি কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনার টানা দ্বিতীয় শিরোপা।
সবমিলিয়ে টানা তৃতীয় বড় শিরোপা জিতলো আর্জেন্টিনা। যার শুরুটা হয়েছিল ২০২১ সালের কোপা আমেরিকায় টুর্নামেন্ট দিয়ে। ওই আসরের ফাইনালে ব্রাজিলকে ১-০ গোল হারিয়ে ২৮ বছরের শিরোপা খরা ঘুচায় মেসিবাহিনী। এর পরের বছর কাতারে ফ্রান্সকে হারিয়ে বিশ্বকাপের শিরোপা উল্লাস করে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। এবার কলম্বিয়াকে হারিয়ে কোপার শিরোপা ধরে রাখলো আকাশি-সাদারা।
ম্যাচ শেষে আর্জেন্টিনা যতটা উল্লাসে মেতেছে ম্যাচ চলাকালীন ততটাই হয়তো দুশ্চিন্তায় ছিল। কলম্বিয়ার অ্যাটাকের বিপরীতে আর্জেন্টিনার ভুল পাস আর মিস ভাবাচ্ছিল কোচ স্কালোনিকে। এর মধ্যে ম্যাচের ৬৫ মিনিটে ইনজুরির পড়ে মাঠ ছাড়েন আর্জেন্টিনার ভরসার মূল চাবিকাঠি মেসি। খেলোয়াড়, দর্শক থেকে শুরু করে মেসিও যেন মাঠ ছাড়ার কষ্ট ভুলতে পারছিলেন না। বেঞ্চে বসে অঝোরে কেঁদেছেন এই ফুটবল জাদুকর। শেষ পর্যন্ত লাওতারোর গোলে মেসির কান্না রূপ নেয় উল্লাসে। জয়ের পর বুনোউল্লাসে মেতেছেন মেসি নিজেও।
যদিও এই ম্যাচে কম নাটকীয়তা ছিল না। দর্শক–বিশৃঙ্খলার কারণে প্রায় ১ ঘণ্টা ২২ মিনিট দেরিতে শুরু হয় আর্জেন্টিনা–কলম্বিয়ার ফাইনাল ম্যাচ। মেসির বদলি হিসেবে নামা নিকো গঞ্জালেস ম্যাচের ৭৬ মিনিটে বল জালে জড়িয়েছিলেন। সেই গোল আবার অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। এতে আরও হতাশা বাড়ে আর্জেন্টিনা শিবিরে। অতিরিক্ত সময়ে বদলি হিসেবে নামা লাউতারোই শেষ পর্যন্ত আর্জেন্টিনাকে শিরোপা স্বাদ দেন।
সর্বশেষ ৫ম গোল আদায় করে এবারের আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতার গোল্ডেন বুট পেয়েছেন লাওতারো মার্তিনেজ।
সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার গোল্ডেন গ্লাভস জিতেছেন এমিলিয়ানো মার্তিনেজের হাতে। আর্জেন্টাইন এই তারকা আসরে ইকুয়েডরের বিপক্ষে ম্যাচে জিতিয়েছেন টাইব্রেকার। ফাইনালে চাপের মুখে দিয়েছেন একের পর এক সেভ। পুরো আসর মিলিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে কেবল এক ম্যাচেই গোল হজম করেছেন তিনি। গত কোপা আমেরিকা এবং বিশ্বকাপেও তিনিই ছিলেন সেরা গোলরক্ষক।
এদিকে আসরের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার হাতে পুরেছেন কলম্বিয়ার হামেস রদ্রিগেজ। আসরে ৬ অ্যাসিস্ট করেছেন। ভেঙেছেন লিওনেল মেসির এক আসরে ৫ অ্যাসিস্ট করার রেকর্ড। করেছেন ১ গোলও। ৩৩ বছর বয়সী এই অ্যাটাকারের দল হারলেও ব্যক্তিগত পুরস্কার ঠিকই নিজের করে নিয়েছেন।