1. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  2. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  3. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ০৩:৩০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
গাজায় পুনরায় ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা প্রকাশ বাংলাদেশের বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন – তুলসী গ্যাবার্ড নির্বাচনের সময় পুলিশকে  শক্ত অবস্থানে থাকতে হবে- প্রধান উপদেষ্টা ডিএমটিসিএলের ৪ চার কর্মীকে মারধরের ঘটনায় পুলিশের ২ সদস্য বরখাস্ত বাংলাদেশে এসে পৌঁছালেন হামজা চৌধুরী পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বগুড়ায় আ.লীগ ট্যাগ দিয়ে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানের মামলা আশুলিয়ায় ছাত্রদলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত সাভারে জুলাই বিপ্লবে শহীদ ও আহত পরিবারদের সম্মানে শিবিরের ইফতার মাহফিল সাভারে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে জামায়াতের ইফতার মাহফিল

কোমর ব্যথায় অবহেলা নয়,সচেতন হোন

  • সময় : বুধবার, ৫ জুন, ২০২৪
  • ১৪০

অধ্যাপক ডা. আবদুস সালাম

আমাদের দেশে শতকরা ৯০ শতাংশ লোক জীবনের কোনো না কোনো সময়ে কোমর ব্যথায় ভোগে। স্বল্পমেয়াদি ব্যথা এক মাসের কম সময় থাকে এবং দীর্ঘমেয়াদি বা ক্রোনিক ব্যথা এক মাসের অধিক সময় থাকে। যথা সময়ে উপযুক্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করলে ৯০ শতাংশ রোগী দুই মাসের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। আর যারা অবহেলা করেন, তাদের কথা আর নাই বা বললাম। তারা নিজেরাই সেটা জানেন। একটি ব্যথা হচ্ছে লাম্বার স্পনডোলাইসিস। আমাদের সবার কোমরে পাঁচটি হাড় আছে। কোমরের হাড়গুলো যদি বয়সের কারণে বা বংশগত কারণে ক্ষয় হয়ে যায়, তখন তাকে বলা হয় লাম্বার স্পনভোলাইসিস। আরেটি ব্যথা হচ্ছে, পিএলআইডি। এটিও শক্তিশালী। সাধারণত ২৫ থেকে ৪০ বছরের মানুষের ক্ষেত্রে এই ব্যথাটা বেশি দেখা যায়। প্রত্যেক মানুষের হাড়ের মধ্যে ফাঁকা জায়গা একটা থাকে। এটি পূরণ থাকে তালের শাঁসের মতো ডিস্ক বা চাকতি দিয়ে। এ ডিস্ক যদি কোনো কারণে বের হয়ে যায়, তখন স্নায়ুমূলের ওপরে চাপ ফেলে। এর ফলে কোমরে ব্যথা হতে পারে।

এর বাইরে আরো বেশ কিছু কারণ আছে। এই কোমর ব্যথায় লক্ষ্য রাখবেন বড় কোনো আঘাতের ইতিহাস আছে কি না। কোমর ব্যথার পাশাপাশি বুকে ব্যথা হলে বা আপনার যদি আগে কখনও যক্ষ্মা হয়ে থাকে তবে এই ব্যথাকে একটু বাড়তি গুরুত্ব দিতে হবে। দ্রুত যোগাযোগ করুন আপনার চিকিৎসকের সাথে।

এ ছাড়া ক্যান্সার, অস্টিওপোরোসিস, এইডস, দীর্ঘকাল স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবনের ইতিহাস থাকলেও কোমর ব্যথা হতে পারে। এই ধরনের ব্যথা হলে আমি বলবো মোটেও অবহেলা করবেন না।

লক্ষ্য রাখবেন, ব্যথার পাশাপাশি জ্বর, শরীরের ওজন হ্রাস, অরুচি, অতিরিক্ত ঘাম ইত্যাদি উপসর্গ আছে কি? ব্যথাটা কোমর ছাড়িয়ে পায়ের দিকে বিশেষ করে এক পায়ের হাঁটুর নিচ পর্যন্ত ছড়াচ্ছে কি? অথবা এক পায়ে তীব্র ব্যথা বা অবশভাব মনে হচ্ছে? দ্রুত সতর্ক হন, চিকিৎসকের কাছে যান।

কোমর ব্যথার পাশাপাশি, প্রস্রাব বা পায়খানার সমস্যা, মলদ্বারের আশপাশে বোধহীনতা, মেরুদণ্ডে বক্রতা, পায়ের দুর্বলতা বা পায়ের মাংসপেশির শুষ্কতা ইত্যাদি উপসর্গকে বিশেষ গুরুত্ব দিন। এগুলো ভালো লক্ষণ নয়। কোমর ব্যথার সঙ্গে উল্লিখিত যে কোনো উপসর্গ থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কোমর ব্যথাকে কখনো হালকাভাবে নিবেন না । প্রথম দিকে এ ব্যথা

কম থাকে এবং ক্রমান্বয়ে তা কিন্তু বাড়তে থাকে। এর চরিত্রটাই এমন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে চিৎ হয়ে শুয়ে থাকলে এ ব্যথা কিছুটা কমে আসে। আবার কোমরে সামান্য নড়াচড়া হলেই এ ব্যথা বেড়ে যায়। ব্যথার সঙ্গে পায়ে ব্যথা নামতে বা উঠতে পারে, হাঁটতে গেলে পা খিঁচে আসে বা আটকে যেতে পারে, ব্যথা দুই পায়ে বা যে কোনো এক পায়ে নামতে পারে। কোমরের মাংসপেশি কামড়ানো ও শক্ত ভাব হয়ে যাওয়া। প্রাত্যহিক কাজে, যেমন- নামাজ পড়া, তোলা পানিতে গোসল করা, হাঁটাহাঁটি করা ইত্যাদিতে কোমরের ব্যথা বেড়ে যায়। কোমর ব্যথার সময় আর যা যা সমস্যা হয় সে সম্পর্কেও কিছু আলোচনা করা যাক।

প্রথমে কোমরে অল্প ব্যথা থাকলেও ধীরে ধীরে ব্যথা বাড়তে থাকে। অনেক সময় হয়তো রোগী হাঁটতেই পারে না। ব্যথা কখনও কখনও কোমর থেকে পায়ে ছড়িয়ে পড়ে। পায়ে ঝিনঝিন ধরে থাকে। সকালে ঘুম থেকে উঠে পা ফেলতে সমস্যা হতে পারে। পা অবশ ও ভারী হয়ে যায়। পায়ের শক্তি কমে যায়। মাংসপেশি মাঝে মধ্যে সংকুচিত হয়ে যায়।

আমি বারবার বলছি। কোমর ব্যথাকে গুরুত্ব দিন। সমস্যা হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

এবার বলবো, প্রাথমিক ক্ষেত্রে আপনার করণীয় কি। সব সময় শক্ত সমান বিছানায় ঘুমাতে হবে। ফোমের বিছানায় ঘুমানো যাবে না এবং ফোমের নরম সোফায় অনেকক্ষণ বসা যাবে না। ঝুঁকে বা মেরুদণ্ড বাঁকা করে কোনো কাজ করবেন না। ঘাড়ে ভারী কিছু তোলা থেকে বিরত থাকুন। নিতান্তই দরকার হলে ভারী জিনিসটি শরীরের কাছাকাছি এনে কোমরে চাপ না দিয়ে তোলার চেষ্টা করুন। নিয়মিত শারীরিক অর্থাৎ কায়িক পরিশ্রম করতে হবে। শারীরিক শ্রমের সুযোগ না থাকলে ব্যায়াম অথবা হাঁটার যতটুকু সুযোগ আছে তাকে কাজে লাগাতে হবে। মোটা ব্যক্তির শরীরের ওজন কমাতে হবে। সবার ক্ষেত্রেই সবসময় ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। একই জায়গায় বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে অথবা বসে থাকা যাবে না। ঘুমানোর সময় সোজা হয়ে ঘুমাতে হবে। বেশি নড়াচড়া করা যাবে না। ঘুম থেকে ওঠার সময় যে কোনো একদিকে কাত হয়ে ওঠার চেষ্টা করতে হবে।

হালকা ব্যথা হলে অবহেলা না করে ওষুধ এবং পূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে। কোমরে গরম ভাপ দিলে উপকার পেতে পারেন। কোমর ব্যথার বিভিন্ন মলম ব্যবহার করতে পারেন। তবে মালিশ করা যাবে না। ব্যথা তিন দিনের বেশি স্থায়ী হলে অবশ্যই একজন অর্থোপেডিকস, ফিজিওথেরাপিস্ট কিংবা নিউরোলজিস্টের পরামর্শ নিতে হবে। ব্যথা তীব্র হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। অনেকেই মনে করেন, ব্যথা উপশমের জন্য ফিজিওথেরাপি অনেক কাজে লাগে। আমিও বলবো, সঠিক। তবে তার আগে আপনি আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। কম ব্যথা হলে আউটডোর ফিজিওথেরাপি দেয়া হয়ে থাকে। অনেকেই কোমর ব্যথা হলে বিভিন্ন ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে ফেলে। এটা একেবারে ঠিক নয়। বিভিন্ন কারণে কোমরে ব্যথা হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করা প্রয়োজন।

ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনও এমন ওষুধ তৈরি হয়নি যে ওষুধ খেলে আপনার মাংসপেশি লম্বা হবে, শক্তিশালী হবে এবং আপনার জয়েন্ট মবিলিটি বেড়ে যাবে।

লেখক- অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুস সালাম, অর্থো সার্জন, নিটোর, ঢাকা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪