আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পাকিস্তানের কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের চেয়ারম্যান ইমরান খানের সাজা স্থগিতের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি)।
আইএইচসির প্রধান বিচারক আমের ফারুক অবশ্য বলেছেন, এই আবেদনের ওপর নিয়মিত শুনানি হবে; তবে কবে থেকে এই শুনানি শুরু হবে—সে সম্পর্কে সিদ্ধান্তে আসতে আরও ৪ থেকে ৫ দিন সময় নেবেন আদালত।
উল্লেখ্য, আলোচিত তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানকে দোষী সাব্যস্ত করে গত শনিবার রায় ঘোষণা করেন ইসলামাবাদের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত। সেই রায়ে ইমরানকে তিন বছরের কারাদণ্ড, ১ লাখ রুপি জরিমানা এবং গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়।
আদালত এই রায় ঘোষণার অল্প সময়ের মধ্যে ৭০ বছর বয়স্ক ইমরান খানকে লাহোরের অভিযাত এলাকা জামান পার্কের বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানে তাকে পাঞ্জাবের অ্যাটক কারাগারে রাখা হয়েছে।
আদালতের এই রায় ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরই পাকিস্তানের রাজনীতিতে ইমরানকে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা দেয় দেশটির নির্বাচন কমিশন।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বুধবার ইমরান খানের আইনজীবী খাজা হারিস এই সাজার ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে আপিল করেন। আপিলের পক্ষে যুক্তি দিয়ে হারিস বলেন, ‘তোশাখানা মামলায় বিচারিক আদালত যে রায় দিয়েছেন, তা আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তাই এই রায়ের ওপর আমরা স্থগিতাদেশ চাইছি।’
যুক্ততর্ক উপস্থাপন শেষে আসামিপক্ষের এই আবেদন খারিজ করে দেন ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আমের ফারুক। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘আবেদনটি নিয়মিত শুনানির জন্য নথিভুক্ত করা হলো। কবে থেকে এটির ওপর শুনানি শুরু হবে— তা ৪-৫ দিন পর জানানো হবে।’
এই দিন ইমরান খানের সাজা সম্পর্কিত আরও একটি আবেদন জমা দেন তার আইনজীবী খাজা হারিস। সেই আবেদনে তাকে অ্যাটক কারাগার থেকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে স্থানান্তরের অনুরোধ জানিয়ে বলা হয়, ইসলামাবাদের সেশন ও দায়রা আদালতের রায়ে ইমরান খানকে আদিয়ালা করাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন, কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করে তাকে রাখা হয়েছে অ্যাটক কারাগারে।
এই আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্ট এ সম্পর্কে কেন্দ্রীয় ও পাঞ্জাব প্রাদেশিক সরকারকে আগামী ১১ আগস্টের মধ্যে লিখিতভাবে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেন।
২০২৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের কাছ থেকে যেসব দামি উপহার ইমরান খান পেয়েছিলেন, সেসবের মধ্যে বেশ কিছু উপহার রাষ্ট্রীয় তোশাখানায় জমা না দিয়ে গোপনে বিক্রি করে দিয়েছিলেন তিনি। এসব উপহার বিক্রির মাধ্যমে পিটিআই চেয়ারম্যান ২০ কোটি রুপিরও বেশি উপার্জন করেছেন বলেও জানা গেছে।
রাষ্ট্রের আইন অমান্য করে উপহার বিক্রির অভিযোগে ইমরান খানের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দেশটির নির্বাচন কমিশন। শনিবার সেই মামলারই রায় দিয়েছেন ইসলামাবাদের জেলা ও দায়রা আদালত।
বা বু ম / অ জি