টেকনাফ, কক্সবাজার সংবাদদাতা
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় তিন রোহিঙ্গা যুবককে অপহরণের খবর পাওয়া গেছে। অপহরণের এক দিন পর ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। স্বজনদের দাবি, ওই যুবকদের মালয়েশিয়ায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির থেকে বের করার পর অজানা স্থানে নিয়ে আটকে রাখেন দালাল চক্রের সদস্যরা। এরপর মুক্তিপণ হিসেবে টাকা দাবি করা হচ্ছে।
অপহৃত তিনজন হলেন টেকনাফের হোয়াইক্যং চাকমারকুল ২১ নম্বর আশ্রয়শিবিরে সি-১ ব্লকের নবী হোসাইনের ছেলে রজিম উল্লাহ (২৫), একই ব্লকের মো. খলিলের ছেলে রিয়াজ উদ্দিন (২১) ও মো. ইসমাইলের ছেলে মুজিবুল্লাহ (২৬)। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে আশ্রয়শিবির থেকে বের হওয়ার পর তাঁরা অপহৃত হন।
চাকমারকুল ২১ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান (মাঝি) মো. আজিজুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গতকাল সকালের দিকে চাকমারকুল আশ্রয়শিবিরে সি-১ ব্লকের রজিম উল্লাহ, রিয়াজ উদ্দিন ও মুজিবুল্লাহ আশ্রয়শিবির থেকে দালাল চক্রের মাধ্যমে সমুদ্রপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার উদ্দেশে ঘর থেকে বের হয়। এরপর আজ সকালে ওই তিনজনের স্বজনদের কাছে ফোন করে বলা হয়, তাঁদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন করা হচ্ছে, তাঁদের অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণকারীরা তাঁদের কাছে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছেন। মুক্তিপণের টাকা না পেলে তাঁদের হত্যা করা হবে।
এ বিষয়ে ওই আশ্রয়শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) পুলিশ সুপার মো. জামাল পাশার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, তাঁরা ওই যুবককে উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।
চাকমারকুল এপিবিএন পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত পরিদর্শক সরেজ চন্দ্র বলেন, গতকাল সন্ধ্যার দিকে তিনজন রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির থেকে বের হওয়ার পর আর ফিরে আসেননি। আজ সকালে মিয়ানমারের একটি নম্বর থেকে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে ফোন করে মুক্তিপণের টাকা দাবি করা হয়েছে বলে শুনেছেন। পুলিশ তাঁদের উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
গত ৭ মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৭৭ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৩৬ জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকি ৪১ জন রোহিঙ্গা। অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৩৯ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন বলে ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
বা বু ম / অ জি