রংপুর সংবাদদাতা
১৩ বছর পলাতক থাকার পর অবশেষে গ্রেপ্তার হয়েছেন ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি শহিদুল ইসলাম (৩৬)। গতকাল সোমবার (১৯ জুন) রাতে রংপুর নগরীর তাজহাট শেখপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গ্রেপ্তার শহিদুল ইসলাম রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার কাফ্রিখাল এলাকার সৈয়দ জামানের ছেলে। তিনি ২০১০ সালে আদালতের রায়ের পর থেকে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিলেন।
মঙ্গলবার (২০ জুন) দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব-১৩ রংপুরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মোর্ত্তূজা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আসামি শহিদুল ইসলাম ঢাকারু সদরঘাট এলাকার এক কাপড় ব্যবসায়ীর বাসায় নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে চাকরি করতেন। সেখানে ২০০৩ সালের ১৪ অক্টোবর ওই বাসায় কাজের কথা বলে ভিকটিমকে নিয়ে যান। আসামি বাসার সকলের অগোচরে ভিকটিমকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দিতে থাকেন। এতে ভিকটিম রাজি না হলে তাকে ধর্ষণ করেন। পরে ভিকটিম অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।
বাসার মালিক বিষয়টি জানতে পারলে ভিকটিম ও আসামি শহিদুল ইসলামকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেন। পরবর্তীতে ভিকটিমের পরিবার বিষয়টি জানতে পারলে গর্ভবতী মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে এসে স্থানীয়ভাবে সালিসের মাধ্যমে আসামির সঙ্গে বিয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করে। কিন্তু স্থানীয় কুচক্রী মহলের হস্তক্ষেপে সালিস ব্যর্থ হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত ২০১০ সালের ২৭ এপ্রিল রায়ে আসামি শহিদুল ইসলামকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ টাকা জরিমানার আদেশ দেন।
আদালতের রায়ের পর থেকে আসামি শহিদুল ইসলাম দীর্ঘ ১৩ বছর যাবত ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেছিল।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামির অবস্থান সম্পর্কে র্যাব বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে আসামির অবস্থান নিশ্চিত করে। সোমবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাত আড়াইটার দিকে রংপুর নগরীর তাজহাট থানা এলাকায় শেখপাড়া গ্রাম অভিযান চালিয়ে শহিদুলকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাব-১৩ এর রংপুরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মোর্ত্তূজা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি ভিকটিমকে একাধিকবার ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে আসামিকে মিঠাপুকুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনার বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
বা বু ম / অ জি