চাঁদপুর সংবাদদাতা
চাঁদপুরে আমিনুল ইসলাম আরিফ নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদেরকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৯ জুন) বিকেলে চাঁদপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. মহসিনুল হক এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা এলাকার আব্দুল ওয়াদুদের ছেলে ওমর শরীফ, সন্তোষপুর গ্রামের ইমান হকের ছেলে কামরুল হাছান, মুন্সীগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলার হাসাইল গ্রামের হাফিজ উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম ও রাজধানীর খিলগাঁও থানার উত্তর গোরান এলাকার সিপাহী বাড়ির ভাড়াটিয়া ইউনূস মিয়ার স্ত্রী সাহিদা বেগম ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মহাদেরপুর এলাকার সামছুল ইসলামের ছেলে আমিনুল ইসলাম আরিফ। তিনি রাজধানীর খিলগাঁও থানার উত্তর গোরান সিপাহীবাগে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একই এলাকার বাসিন্দা জনৈক ইউনুছের মেয়ে পিংকিকে গোপনে আদালতে গিয়ে বিয়ে করেন। এ ঘটনা উভয় পরিবারে জানাজানি হলে পিংকির মা সাহিদা বেগম আরিফকে তুলে নিয়ে স্থানীয় ভাড়া করা লোকজন দিয়ে গোপন আস্তানায় রাখেন। আরিফ এই সংবাদ তার আপন খালা নিলা বেগমকে জানান। নিলা বেগম ঘটনাস্থলে গিয়ে সাহিদা বেগমকে পান। সাহিদা বেগমকে বুঝিয়ে সেখান থেকে আরিফকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। এরপর থেকে উভয় পরিবারে শত্রুতা চলতে থাকে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পিংকির মা সাহিদা বেগম পরিকল্পিতভাবে ২০০৮ সালের ৪ মে রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে ওমর শরীফ, কামরুল ও সাইফুলকে আরিফদের বাসায় পাঠিয়ে তাকে তুলে নিয়ে যান। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ বালিথুবা গ্রামে ওমর শরীফের বাড়িতে নিয়ে আরিফকে গলায়, বুকে, তলপেটসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যার পর বাড়ির পুকুরে ফেলে দেন।
এ ঘটনায় নিহত আমিনুল ইসলাম আরিফের চাচা তাজুল ইসলাম পাটওয়ারী বাদী ২০০৮ সালের ৫ মে আসামিদের বিরুদ্ধে ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মামলাটি দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর চলাকালে আদালত ৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। স্বাক্ষ্যগ্রহণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে আসামিদের অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আজ আদালত এই রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি ওমর শরীফ পলাতক ছিলেন। বাকি তিন আসামি উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রনজিত রায় চৌধুরী।
আসামিপক্ষের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, এই রায়ের বিপক্ষে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
বা বু ম / অ জি