নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশে আবারও আশঙ্কাজনক হারে ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়ছে। এই অবস্থায় হাসপাতালে তুলনামূলক রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও ডেঙ্গু চিকিৎসায় সারা দেশের সকল হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মো. খুরশিদ আলম।
তিনি বলেন, চলতি বছরে ঢাকার বাইরে তেমন রোগী ভর্তি নেই। বেশিরভাগ রোগী রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন হাসাপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আজ (শনিবার) দেশের বর্তমান ডেঙ্গু সংক্রমণ পরিস্থিতি ও করণীয় শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
খুরশিদ আলম বলেন, বর্তমানে ঢাকায় সর্বোচ্চ ১৪৭ জন ডেঙ্গু রোগী মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে। সারাদেশে রোগী সংখ্যা কম থাকলেও আমরা সারা দেশের সকল হাসপাতাল প্রস্তুত রেখেছি। এ বিষয়ে সকলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সংশোধিত গাইডলাইন প্রত্যেক হাসপাতালে সরবরাহ করা হয়েছে। হাসপাতালগুলোর চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসক, ওষুধসহ সবকিছু সরবরাহ করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য ডিজি বলেন, চলতি বছর এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের প্রায় প্রত্যেকে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিন্ড্রোমে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা ক্লিনিক্যালি তাদের মৃত্যুর কারণ জানান চেষ্টা করেছি। আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত মৃতদের প্রায় প্রত্যেকে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিন্ড্রোমে তাদের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও অন্য আরও কারণ থাকতে পারে। যা জানার জন্য ময়নাতদন্ত করা প্রয়োজন। কিন্তু তা পরিবার অনুমোদন দেবে না। আর এটা সাধারণ প্র্যাকটিসও নয়।
পরীক্ষার বিষয়ে ঘাটতি রয়েছে কি না জানতে চাইলে অধ্যাপক খুরশীদ আলম বলেন, যারা আমদের কাছে আসছে তাদের ডায়াগনোসিস কর হচ্ছে৷ যারা আসছে না তাদের তো করা সম্ভব না। এ বিষয়ে আমরা সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছি। গণমাধ্যমসহ সকলকেও এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। মানুষকে সচেতন করতে হবে। জ্বর হলে তারা যেন ডেঙ্গু পরীক্ষা করান।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যেক বিভাগে ডেঙ্গু চিকিৎসায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে মশা নিধন করাটা সব চেয়ে জরুরি। সিটি করপোরেশন ও স্থানীয় সরকার বিভাগসহ সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এটি সফল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। একইসঙ্গে প্রত্যেক হাসপাতালে মশারি সরবরাহ করা হচ্ছে তবে রোগীরা মশারির ভেতর থাকছেন না বলেও জানান স্বাস্থ্য ডিজি।
হাসপাতাল শাখার পরিচালক জানান, ডেঙ্গু পরীক্ষায় গুরুত্ব দিতে সকল হাসপাতালকে নির্দেশনা দেওয়া আছে। এক্ষেত্রে আমাদের গত বছরই পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। প্রত্যেক হাসপাতলে গাইডলাইন সরবরাহ করা হয়েছে। সকল রোগীর জন্য মশারি নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু রোগীরা মশারির ভেতর থাকছেন না। চিকিৎসক এলে তারা মশারির ভেতর থাকছেন, বাকি সময়টা বাইরে থাকছেন। রোগীদের মশারির ভেতর রাখার বিষয়ে পুলিশিং ব্যবস্থা আমাদের নেই। এ বিষয়ে আমাদের রোগীদেরই সচেতন হতে হবে।
ডেঙ্গু জ্বর থেকে সুস্থ হওয়ার পর রোগীদের জটিলতা বেশি দেখা যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
ডেঙ্গু রোগীদের সকল তথ্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে জানিয়ে অধিদপ্তরের এমআইএস শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের তথ্য ও ডেঙ্গুর গতিবিধি পর্যবেক্ষণে রোগীদের তথ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালগুলোকে আগত রোগীদের মোবাইল নম্বর ও ঠিকানা সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।
বা বু ম / এস আর