ডেস্ক নিউজ:
মেডিকেল শিক্ষার্থী’কে যৌন হয়রানির দায়েরকৃত মামলার অভিযোগে হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ আবু সালেহ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন চৌধুরী’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে র্যাব নারী ও শিশু অধিকার রক্ষার্থে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করছে। র্যাবের অভিযানে অদ্যাবধি বর্ণিত বিষয়ে ২৯১ জন অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি উদ্ধার করা হয়েছে ২৭৬ ভিকটিম। যেখানে নারীর অধিকার ক্ষুন্ন হয়েছে সেখানে র্যাব সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়ে আসামীদের গ্রেফতার করেছে। সম্প্রতি কক্সবাজারে ঘটে যাওয়া দুটি নির্মম, মর্মান্তিক ও পৈশাচিক ধর্ষণের ঘটনায় মূল আসামীকে গ্রেফতার করে জনসাধারণের প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মী ও দেশবাসীর পূর্ণ সমর্থন নিয়ে র্যাব নারীর অধিকার রক্ষার্থে সাফল্য ধরে রাখতে বদ্ধ পরিকর।
সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজের এক সহকারী অধ্যাপক এর বিরুদ্ধে একজন শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় সমগ্র দেশব্যাপী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বর্ণিত বিষয়ে ভূক্তভোগী শিক্ষার্থী বর্ণিত প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষকে অবগত করেন। এছাড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি ও থানায় গত ২৮ ডিসেম্বর ২০২১ নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা রুজু করা হয়। বর্ণিত প্রেক্ষাপটে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৩ এর অভিযানে অদ্য রাজধানীর বড় মগবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগে ডাঃ আবু সালেহ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন চৌধুরী (৩৭), পিতাঃ মৃত সাবের আহম্মদ চৌধুরী, ঢাকা’কে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত বর্ণিত ঘটনার সম্পৃক্ততার বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য প্রদান করে।
অভিযুক্ত ডাঃ আবু সালেহ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন চৌধুরী বর্তমানে চাকুরীরত প্রতিষ্ঠান হতে এমবিবিএস সম্পন্ন করে উক্ত প্রতিষ্ঠানে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ভিকটিম অভিযুক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে অভিযোগ করেন যে, গত ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে অভিযুক্ত ভিকটিমকে তার নিজ বাসায় গিয়ে পড়তে বলেন; কিন্তু ভিকটিম তাতে অসম্মতি জানায়। এরপর করোনা মহামারীর কারণে মেডিকেল কলেজ বন্ধ থাকায় অনলাইনে আইটেম পরীক্ষা নেওয়ার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ সিন্ধান্ত নিলে অভিযুক্ত ভিকটিমের সাথে বিভিন্ন সময়ে অনলাইনে যোগাযোগ করেন এবং বিভিন্নভাবে তাকে অভিযুক্তের সাথে কলেজে ও বাসায় দেখা করতে বলেন। কিন্তু তাতে কোন সাড়া না পেয়ে অভিযুক্ত কলেজে ভিকটিমের সাথে বিভিন্ন সময়ে দেখা করে তাকে বিভিন্ন রকম অনৈতিক এবং অপ্রাসঙ্গিক প্রস্তাব দিতে থাকে; অন্যথায় তাকে ক্ষতি করা হবে বলে হুমকি প্রদান করেন। তাতেও কোন সাড়া না দিলে ভিকটিম কলেজে গেলে ক্লাসের বিভিন্ন সময় অভিযুক্ত তাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। ভিকটিম আরো উল্লেখ করেন যে, গত ০৬ নভেম্বর ২০২১ তারিখ দুপুর ১৩০০ ঘটিকায় কলেজের একটি স্থানে ভিকটিমকে একা পেয়ে যৌন হয়রানির চেষ্টা করেন। এমতাবস্থায় এক বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এছাড়াও ভিকটিম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযুক্ত ব্যক্তির কাছ থেকে বিব্রতকর অনৈতিক এবং অশালীন টেক্সট্ পেতেন। এতে ভিকটিম মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হতাশা প্রকাশ করেন।
গ্রেফতারকৃতকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তিনি ভূক্তভোগীকে বিভিন্ন সময় অশালীন, অনৈতিক ও বিব্রতকর টেক্সট করেছেন। যার ডিজিটাল ফুট প্রিন্ট রয়েছে। ভূক্তভোগীর অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি উক্ত শিক্ষার্থীকে বাসায় টিউশন প্রদানের বিষয়ে প্রস্তাব করেছেন বলেও স্বীকার করেন।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।