ডেস্ক নিউজ:
নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীকে রাজধানীর পান্থপথ এলাকা থেকে আটক করার পর তাকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শুক্রবার (৬ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে পান্থপথ সিগন্যালে চয়নিকা চৌধুরীর গাড়িটি ঘিরে ধরে পুলিশ। পরে তাকে সেখান থেকে ডিবি হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়।
চয়নিকা চৌধুরী নির্মিত ‘বিশ্বসুন্দরী’ সিনেমার নায়িকা ছিলেন পরীমনি। এই নির্মাতার ওয়েব ফিল্ম ‘অন্তরালে’র জন্য সম্প্রতি চুক্তিবদ্ধ হন পরীমনি। এর শুটিং শুরু হওয়ার কথা আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে।
চয়নিকা চৌধুরী ও পরীমনির মধ্যে যে সখ্য রয়েছে, তা সবারই জানা। চয়নিকা চৌধুরীকে নিজের ‘মা’ বলে সম্বোধন করে থাকেন পরীমনি। উত্তরা বোট ক্লাব কাণ্ডের পর পরীমনির পাশে ছায়ার মতো দেখা গেছে তাকে।
এর আগে বুধবার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় বনানীর বাসা থেকে ঢাকাই সিনেমার অন্যতম নায়িকা পরীমনিকে আটক করা হয়। রাত আটটার পরে তাকে বাসা থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় পরীর সঙ্গে আরও দুজনকে আটক করা হয়েছে।
পরীমণির বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, পরীমনির বাসায় একটা মিনিবার ছিল। তার বাসায় নিয়মিত পার্টি হতো। সেই পার্টিতে মদসহ সব ধরনের মাদক সাপ্লাই দিতের প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজ। রাজের নেতৃত্বে একটা সিন্ডিকেট ছিল, যাদের কাজই হলো উঠতি বয়সী তরুণীদের দিয়ে নানারকম অপকর্ম করানো।
পরীমনিকে আটকের পর বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) চয়নিকা চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘অন্যদের মতো টেলিভিশন লাইভে আমিও ঘটনাটি দেখেছি। তবে পরীমনির বাসায় যাইনি। কারণ এটা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপার। তারা যা ভালো বুঝবেন, সেটাই করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আমাদের সম্মান আছে। ঘটনাটি মাত্রই ঘটল। এখন কিছু বলা ঠিক নয়। আমরা অপেক্ষা করবো কিছুদিন। অবস্থা বুঝে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ও টিমের সঙ্গে বসে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’
উল্লেখ্য, গত ৯ জুন মধ্যরাতে সাভারে অবস্থিত ঢাকা বোট ক্লাবে চিত্রনায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ করেন নায়িকা।
ঘটনার চার দিন পর ১৩ জুন রাত ৮টার দিকে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে এবং রাত ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘটনা প্রকাশ করেন নায়িকা পরীমনি। সংবাদ সম্মেলনের পুরো সময় তার পাশে ছিলেন চয়নিকা চৌধুরী।
পরদিন ১৪ জুন সকালে ব্যবসায়ী নাসিরউদ্দিন মাহমুদ ও অমিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেন তিনি। ওইদিন বিকালে উত্তরা থেকে নাসির ও অমিসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়। এর পর ডিবির গুলশান জোনাল টিমের উপপরিদর্শক (এসআই) মানিক কুমার সিকদার বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন।
ওই মামলায় গত ১৫ জুন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসি নাসির ও অমির সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে ওই মামলায় রিমান্ড শেষে পরীমনির মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাদের।
২৯ জুন পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলায় প্রধান আসামি নাসিরউদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমি জামিন পান।পরে ৩০ জুন দিবাগত রাত ৮টার দিকে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে নাসির মুক্তি পান।