ডেস্ক নিউজ:
টাইগারদের স্বল্প পুঁজির রান টপকাতে পারল না অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশি বোলারদের সামনে যেন অজি ব্যাটসম্যানদের অসহায় আত্মসমর্পণ। ১৩২ রানের ছোট্ট লক্ষ্যের পেছনে ছুটে শেষ পর্যন্ত ১০৮ রানে গুটিয়ে গেছে সফরকারীদের ইনিংস। আর তাতেই ২৩ রানের জয়ে মাঠ ছাড়ে টিম বাংলাদেশ। যা টি-টোয়েন্টি ফরমেটে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম জয় টাইগারদের।
পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টির প্রথম ম্যাচে টাইগারদের ব্যাটিংটা ঠিকঠাক হয়নি। ধীরগতির ব্যাটিংয়ে স্বল্প পুঁজি। ম্যাচ জিততে চায় ভিন্ন কিছু। দায়িত্বটা স্বভাবতই বর্তায় বোলারদের ওপর। বোলিংয়ে এসে সেটার প্রমাণ মিলল শুরুতেই। বাংলাদেশের তিন স্পিনারই নিজের প্রথম ওভারে বল করতে এসে ব্রেক থ্রু এনে দেন।
মেহেদী, নাসুম আর সাকিব মিলে যা করলেন, তা রেকর্ড হয়ে থাকল। দলীয় মাত্র ১১ রানেই অজিদের ৩ উইকেট তুলে নেন টাইগাররা। টি-টোয়েন্টিতে এত কম রানে ৩ উইকেট এর আগে মাত্র একবারই হারিয়েছিল তারা। এবার দ্বিতীয়বারের মত এই দৃশ্যের অবতারণা হলো। এর আগে ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ রানে ৩ উইকেট পড়েছিল অজিদের।
ইনিংসের প্রথম বলেই মেহেদী হাসানের বাজিমাত। সরাসরি বোল্ড হয়ে শূন্য রানে ফিরে যান অ্যালেক্স ক্যারি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে এই প্রথম অস্ট্রেলিয়ার কোনো ব্যাটসম্যান ইনিংসের প্রথম বলে আউট হয়েছেন। ১৩২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে রানের খাতা খোলার আগে ফিরে যান তিনি। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে করা বলের লাইন মিস করে হয়েছেন বোল্ড।
মেহেদীর পর নাসুমের বলে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন ফিলিপে। তিনি ফিরে যান ৫ বলে ৯ রান করে। পরপর দুই উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে যায় সফরকারীরা। তবে পরের ওভারে আরও চেপে ধরেন সাকিব আল হাসান। বোলিংয়ে এসেই ফেরান ময়েসেজ হেনড্রিকসকে। মাত্র ১ রান করে সাকিবের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন মিচেল মার্শ। ৪৫ বলে ৪৫ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এছাড়া ম্যাথু ওয়েড করেন ১৩ রান। মিচেল স্টার্কের ব্যাট থেকে আসে ১৪ রান।
বাংলাদেশের হয়ে নাসুম নিয়েছেন ৪টি উইকেট। মুস্তাফিজ ও শরীফুল নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। এছাড়া সাকিব এবং মেহেদী নিয়েছেন ১টি করে উইকেট।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩১ রানে থামে স্বাগতিক বাংলাদেশের ইনিংস। ব্যাটিংয়ে নেমে কচ্ছপ গতিতে রান তোলে টিম বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে ছিল না চিরাচরিত টি-টোয়েন্টি মেজাজ।
ইনিংসের শুরুটা হয় ছয় দিয়ে। মিচেল স্টার্কের দ্বিতীয় বলেই ওভার বাউন্ডারি মারেন নাঈম শেখ। তবে সেই উত্তাপ ধরে রাখতে পারেনি তারা। নিমিষেই যেন ঝিমিয়ে যায়। স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলেন না ওপেনার সৌম্য সরকার। অজি বোলারদের দাপটে বেশ ভুগছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত পরাস্ত হন হ্যাজেলউডের কাছে। ৯ বলে ২ রান করে বোল্ড হয়ে ফিরে যান তিনি।
অন্যপ্রান্তে এগিয়ে নিচ্ছিলেন নাঈম শেখ। ভালোই খেলতে নাঈম শেখ পরাস্ত হন জাম্পার জাদুতে। রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফিরে যান তিনি
কচ্ছপ গতিতে রান তোলার দিনে জ্বলে উঠতে পারেননি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও। খেলেছেন ধীরলয়ে। শেষ দিকে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন আফিফ হোসেনের সঙ্গে। কিন্তু তাতে বাধ সাধেন হ্যাজেলউড। ৩৩ বলে ৩৭ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন এই অলরাউন্ডার।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে প্রশংসায় ভেসে যাওয়া শামীম পাটোয়ারীও ব্যর্থ হয়েছেন ব্যাট হাতে। মাত্র ৪ রান করে স্টার্কের শিকার হয়েছেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে হ্যাজেলউড ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। এছাড়া স্টার্ক ২টি এবং জাম্পা ও টাই নেন ১টি করে উইকেট।