ভোলায় পিসিআর ল্যাব স্থাপন করার কাজ শেষ হয়েছে। ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ভোলা জেনারেল হাসপাতালে করোনা (কোভিড-১৯) পরীক্ষার জন্য পলিমার চেইন রি-এ্যাকশন (আরটি-পিসিআর) মেশিন স্থাপন করা কাজ মঙ্গলবার শেষ করেন ঢাকা থেকে আসা প্রকৌশলী দল।
পিসিআর মেশিন পরিচালনার জন্য ১৮ জনের একটি চিকিৎসক ও টেকনোলজিষ্ট দলকে প্রশিক্ষণ দিতে বুধবার ঢাকা থেকে দুই জন বিশেষজ্ঞ এক্সপার্ট ভোলা এসে পৌঁছেছে। তাদের প্রশিক্ষনের কাজও শেষ। মাত্র ২৪০ টি কিট দিয়ে প্রশিক্ষন শুরু করে। এতে কিছু কিট নস্ট হয়েছে। বাকি যে কিট রয়েছে তা দিয়ে টেস্টের কাজ শুরু করা সম্ভব নয়। কিটের ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালকের সাথে কথা হয়েছে। টেস্টের জন্য প্রয়োজনীয় কিট হাতে পাওয়া গেলেই করোনা টেস্টের কাজ শুরু হবে।
সিভিল সার্জন ডা.রতন কুমার ঢালী ও ২৫০ শয্যা ভোলা জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. সিরাজ উদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তারা আরো জানান, পিসিআর মেশিন পরিচালনার জন্য ভোলার ৮ জন চিকিৎসক ও ১০ জন টেকনোলজিষ্টকে ঢাকা থেকে আসা বিশেষজ্ঞ এক্সপার্টরা প্রশিক্ষণ দিয়েছে। প্রশিক্ষণ চলাকালে পরীক্ষা মূলক স্বল্প সংখ্যক করোনা টেস্ট করা হয়। এই ল্যাব থেকে দিনে শতাধিক নমুনা পরীক্ষা করা যাবে বলেও জানান তারা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আরটি-পিসিআর মেশিনের আনুসাঙ্গিক যন্ত্রপাতি ভোলা পাঠানো হয়।
এরপর শনিবার থেকে মেশিন ও যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ শুরু করেন ঢাকার প্রকৌশলী দল। এছাড়া পিসিআর ল্যাবের জন্য আরো ৮ জনের নতুন জনবল নিয়োগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে আবেদন করেছে ভোলার স্বাস্থ্য বিভাগ। নতুন জনবল নিয়োগ করা হলে এর কাজ আরো ত্বরান্বিত হবে বলে জানান তারা। ভোলা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের প্রচেষ্টায় দ্রুত ভোলাবাসীর কাঙ্খিত এই পিসিআর ল্যাবের কাজ ও মেশিন স্থাপন দ্রুত শেষ হয়েছে বলেও জানান তারা। ভোলা গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাজী শরীফ উদ্দিন আহমেদ জানান, গত ১০ জুন ল্যাব এর অবকাঠামো নির্মানের কাজ শেষ করে গণপূর্ত বিভাগ।
ভোলা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় প্রায় ৯০০ বর্গ ফুট যায়গায় ৩২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ল্যাবটি স্থাপন করে প্রতিষ্ঠনটির স্বাস্থ্য উইং। ল্যাবটি তৈরী করতে মাত্র ৭ দিন সময় নেয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শামি ট্রেডার্স। সেখানে আরটি পিসিআর ল্যাব কক্ষসহ স্যাম্পল রিসিভ রুম, পিপিই চেঞ্জিং রুম, স্যাম্পল প্রসেসিং রুম, মাস্টার মিক্সিং রুম, পিসি আর রুম, ডোফিং রুম তৈরী করা হয়েছে। ভোলা জেলার দায়িত্ব প্রাপ্ত সচিব( করোনা ও ত্রান) পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য আবুল কালাম আজাদ এবং গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বে গণপূর্ত স্বাস্থ্য উইংয়ের প্রকৌশলীরা সার্বক্ষণিক পিসিআর ল্যাব স্থাপন কাজের তদারকি করেন বলেও জানান ভোলা স্বাস্থ বিভাগ।
এর আগে ভোলা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সভা কক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে এক ভিডিও কনফারেন্সে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মমিন টুলু ভোলা জেলা বিচ্ছিন্ন ও দুর্গম এলাকা হওয়ায় করোনা পরীক্ষার জন্য জেলায় একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জন্য প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানান। তারই প্রেক্ষিতে ভোলায় পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হল। এখন ভোলাবাসী রয়েছে করোনা টেস্টের অপেক্ষায়।