ডেস্ক নিউজ:
দেশের গণমাধ্যমের উন্নয়নের স্বার্থে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কাজ করছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেছেন, স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর টিআরপি নির্ধারণে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রস্তুত আছে। কারণ দেখা যাচ্ছে যে একটি বা দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দুইশোরও কম নমুনা বা স্যাম্পল নিয়ে টেলিভিশনগুলোর টিআরপি নির্ধারণ করছে।যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।কারণ দেশের জনসংখ্যা ও টেলিভিশন দর্শকের সংখ্যার নিরিখে কমপক্ষে ধারাবাহিক দশহাজার স্যাম্পল নিলে তবেই প্রকৃত টিআরপি নির্ধারণ করা যাবে। আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারতেও তাদের জনসংখ্যার অনুপাতে ৭০-৮০ হাজার স্যাম্পল নিয়ে সরকারের আওতাধীন/নিয়ন্ত্রনাধীন কয়েকটি সংস্থার মাধ্যমে টিআরপি নির্ধারিত হয়। কিন্তু দুঃখজঙ্ক হলেও সত্যি আমাদের দেশে এতোদিন সম্পূর্ণ ভৌতিক উপায়ে এ টিআরপি নির্ধারিত হচ্ছে। তাই সরকার এ জায়গায় স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই একটি কমিটি গঠন করার পাশাপাশি কয়েকটি বৈঠকও করেছে।সুতরাং বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে প্রকৃত চ্যানেলগুলোর টিআরপি সহসাই আমরা একটি সিদ্ধান্তে/নীতিমালায় পৌছাবো।
আজ(০১-০২-২০২১) সকালে রাজধানীর বাংলা মোটরস্থ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে প্রধান কার্যালয়ের মনিটরিং রুম পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে এ মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ । টিআরপির এ নীতিমালা ওটিটি প্লাটফর্মগুলোর ক্ষেত্রেও কার্যকর হবে বলে তিনি জানান।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানান, বিদেশি চ্যানেলে বাংলাদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন আমরা আইন অনুযায়ী বন্ধ করেছি। তেমনি বিদেশি চ্যানেলগুলোতেও বিদেশি বা তাদের পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার আমাদের বিদ্যমান আইন সমর্থন করে না। এ নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছিলাম কিন্তু করোনা সংকটের কারণে সে প্রক্রিয়া কিছুটা শ্লথ হলেও আমরা আবার শুরু করেছি। যদিও বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী চ্যানেল কর্তৃপক্ষ বা যারা এখানে প্রদর্শন করছে তাদের দায়িত্ব চ্যানেলগুলোকে ক্লিনফিড(বিজ্ঞাপন ব্যাতীত) করে পাঠানো। আমরা অনেকদিন ধরেই তাদের এ ব্যাপারে বলছিলাম। কিন্তু তারা ট্যাকনিক্যাল সমস্যা, বিনিয়োগ ইত্যাদি অসুবিধার কথা বলে আসছিল। আনন্দের সংবাদ হচ্ছে যে, আজকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ট্যাকনিক্যাল টিম আমাদের দেখিয়েছে সরকার কিংবা প্রদর্শক কেউ যদি চায় তাহলে তারা চ্যানেলগুলোকে ক্লিনফিড(বিজ্ঞাপন ব্যাতীত) করে দিতে পারবে। এতে আমাদের দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সর্বোপরি গণমাধ্যম উপকৃত হবে।
ওটিটি প্লাটফর্ম নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ওটিটি প্লাটফর্ম আধুনিক বিশ্বের নতুন বাস্তবতা। বিভিন্ন দেশে ওটিটি চালু হওয়ার পরে নীতিমালা/বিধিমালা চালু হয়েছে, সেখানে কিভাবে এগুলো চলে তা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই আমাদের দেশে ওটিটি প্লাটফর্মকেও নিয়ন্ত্রণ নয় বরং একটি নীতিমালার মধ্যে আনার জন্য সরকার কাজ করছে । ইতিমধ্যেই কাজ অনেক এগিয়েছে, আশা করছি আগামী দেড় থেকে দু’ মাসের মধ্যে আমরা এ সংক্রান্ত নীতিমালা চুড়ান্ত করতে পারবো। এবং এটি থেকে এখন ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন কর আদায় হচ্ছে অর্থ্যাৎ ব্যবহারকারীরা ভ্যাট দিচ্ছেন। কিন্তু যারা সার্ভিস প্রোভাইডার তারা ট্যাক্স দিচ্ছেনা। এ ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে সাথে নিয়ে আমরা কাজ করছি। আশা করি অচিরেই এ সংক্রান্ত একটি সিদ্ধান্তে আসতে পারবো।
এ সময় তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের আর্থিক সুরক্ষা নিয়ে আরেক প্রশ্নে বলেন, আমরা গণমাধ্যমকর্মী আইন দ্রুত সংসদে তোলার ব্যবস্থা করছি। আশা করছি এ আইন পাশ হলে সংবাদকর্মীদের আর্থিক সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত হবে।
এর আগে তথ্যমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কক্ষ ও মনিটরিং কক্ষ ঘুরে দেখেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার চৌধুরীসহ প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ।