আজ শুক্রবার সারাদিন বাসায় ছিলাম। বাহির হব হব ভাবছি কিন্তু তা ও পারছিনা।পকেটে মাত্র 12 টাকা।আজ প্রায় চার মাস হয়ে গেল কোন চাকরি বাকরি নেই। করোনা লকডাউন এর কারণে বন্দী জেলখানার একজন কয়েদীর মত লাগে নিজেকে। এই করোনা ভাইরাসের কারণে সবাই যেন মানসিক রোগী হয়ে গিয়েছে। কি বলবো বলেন পকেটে নাই টাকা পত্রিকা কিনার টাকাটাও আজ পকেটে নেই। দুপুর আড়াইটায় সেদিন গিয়েছিলাম মাক্স পরে পাশের বাড়ির সম্মানিত এক ব্যবসায়ীর বাড়ির নিচতলার অফিস রুমের পাশে। কিন্তু অবাক লাগলো জানালার পাশ দিয়ে যখন আমি খবর দেখার জন্য উঁকি মারলাম তখন সরাসরি বাড়িওয়ালা এসে জানালাটা লাগিয়ে দিল। তখন বুঝতে আমার আর বাকি রইল না আমার কারণে যদি তাদের করোনাভাইরাস হয়।
আমি চলে আসলাম আমার নিজ ঘরে।শুনছি আজ নাকি কোন বড় ওয়ালা লোক গভীর রাতে এসে ত্রাণ দিয়ে যাবে। তাই আর ঘুমালাম না রাত যখন দুইটা বেজে 20 মিনিট হঠাৎ ভাঙ্গা দরজায় কে যেন কড়া নাড়লো। আমি আনন্দিত হয়ে দরজা খুলিয়া তাকিয়ে দেখি এক বস্তা চাল,ডাল আর কত কি। কিন্তু দুঃখের বিষয় সবাই কেন যেন মোবাইলে সেলফি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন।হয়তো এটা তাদের অন্যরকম ভালোবাসা বুঝেও না বোঝার চেষ্টা করলাম। পরের দিন সকাল 11:10 মিনিট আমার ভাঙ্গা ঘরের সামনে এক বৃদ্ধ মহিলা বসে বসে কাঁদছে আমি জিজ্ঞেস করলাম আপনি কেন কাঁদছেন। উনি আমায় উত্তর দিলেন তার নাতি পুতি আর অসুস্থ বড় ছেলেটা এই করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউন থাকাতে কোন কাজকর্ম করতে না পেরে খুবই কষ্টে আছে।অনেক দিন হয়ে গেল শুধু ডাল ভাত খেয়ে দিন কেটে যাচ্ছে।বয়স্ক বৃদ্ধ মহিলাটি ঘরের ভেতর কান্না না করে বাহিরে এসে কান্না করছে যাতে কেউ না দেখে তার পরিবারের কেউ।আমার ভেতরটা কষ্টে জর্জরিত হয়ে গেল। আমি ঘরের ভেতর থেকে সেই ত্রাণের বস্তাটা এনে বৃদ্ধ মহিলা টা কে দিয়ে দিলাম।তবে সেই মুহূর্তে আমার সেলফি তোলার তেমন মন মানসিকতা ছিল না। কারণ আমি তো আর কোন সমাজসেবক অথবা কোন রাজনীতির নেতা নই।