প্রবীণ অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা এখন অত্যন্ত সঙ্কটজনক ৷ সম্ভবত আজ রাতেই তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হবে৷ কিছুক্ষণ আগে কলকাতার বেলভিউ ক্লিনিক সূত্রে এ’খবর জানা গেছে৷ তাঁর শরীরে ইউরিক এসিডের পরিমাণ বেড়েছে ৷ সোডিয়াম, পটাসিয়ামের মাত্রা ওঠানামা করছে ৷ কিডনিও ভাল কাজ করছে না ৷ সবচেয়ে বড় কথা, মস্তিস্কের কোনও স্নায়ূ সচল নেই ৷ এককথায়, তাঁকে সুস্থ করে তোলার সব চেষ্টাই এখন বিফলে বলা যায় ৷
তাই, নেফ্রোলজিস্টদের সঙ্গে পরামর্শ করা হচ্ছে৷
শনিবার রাত থেকেই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবনতি ঘটতে থাকে ৷ রবিবার সকালে ১৬জনের মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ডা: অরিন্দম কর জানিয়েছিলেন যে, আপাতত সৌমিত্রবাবু চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন না৷ তাই তাঁরা যে কোনও মুহূর্তে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন৷ তারই ফলশ্রুতি হয়ত ভেন্টিলেশন
গত ৭২ ঘন্টায় সত্যজিৎ রায়ের “অপু”-র আচ্ছন্নভাব কাটেনি ৷ চেতনা নেই ৷ কোভিড সংক্রান্ত এনসেফালোপ্যাথির কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে ৷ এবং বিভিন্ন টেস্ট-এর রিপোর্টেও দেখা যাচ্ছে, এনসেফালোপ্যাথি ক্রমশ বাড়ছে ৷ দু’দিন আগে নতুনভাবে ইমিউনোগ্লোবিন ও স্টেরয়েড দিয়ে অবস্থা সামলানোর চেষ্টা করেও, চিকিৎসকরা তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য ফল পাননি ৷ অবশ্য রবিবার দুপুরেও অভিনেতা-আবৃত্তিকার সৌমিত্রর ফুসফুস ঠিকমত কাজ করছিল ৷ রক্তচাপও স্বাভাবিক ছিল ৷ কিন্তু, ৮৫ বছর বয়স এবং কোমর্বিডিটির কারণে চিকিৎসকরা স্বস্তিতে ছিলেন না ৷
গত ৬ই অক্টোবর করোনা-আক্রান্ত হয়ে সবার প্রিয় “পুলু” নার্সিংহোমে ভর্তি হন ৷ যদিও, কয়েকদিনের মধ্যেই তাঁর দ্বিতীয় করোনা রিপোর্ট আসে “নেগেটিভ”৷ কিন্তু, এনসেফালোপ্যাথির জন্য তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে৷ রবিবার সকালে ডা: অরিন্দম কর একথাও জানিয়েছিলেন যে, দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে তাঁরা ইতিমধ্যেই এ’বিষয়ে আলোচনা করেছেন ৷ যাতে জানা গেছে, এনসেফালোপ্যাথির কারণে একজন রোগী এক থেকে তিন মাস অবধি এই অবস্থায় থাকতে পারেন ৷
তাই, প্রথাগত চিকিৎসার পাশাপাশি চিকিৎসক ও শিল্পীর বাড়ির লোকেদের অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনও পথ নেই৷ কিন্তু, তারই মধ্যে সন্ধ্যার পর থেকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক পরিস্থিতি চরম সঙ্কটজনক হয়ে উঠেছে৷