1. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  2. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  3. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ঢাকাবাসীকে নিরাপত্তা প্রদানের মহান দায়িত্বে পিছিয়ে থাকার কোন সুযোগ নেই-ডিএমপি কমিশনার আজ ঢাকায় আসছে মার্কিন প্রতিনিধি দল সবজি, পেঁয়াজ ও মুরগির দাম কমলেও, কমেনি আলুর দাম ঘোষিত হলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ডিএমপি কমিশনার মোঃ সাজ্জাত আলীর দায়িত্বভার গ্রহণ নতুন পুলিশ প্রধানের দায়িত্বভার গ্রহণ এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে জনগণই সকল ক্ষমতার মালিক হবেন- প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টা ও খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎ ঢাকা মহানগরে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার শেষেই দ্রুত সম্ভব নির্বাচন সংঘটিত হবে-আইন উপদেষ্টা

বিড়াল নিয়ে বিপাকে নায়লা নাঈম

  • সময় : রবিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২০
  • ২১৩

বিড়ালের বিষ্ঠার দুর্গন্ধ, খাবার হিসেবে পচা মাছ, মুরগি নিয়ে উঠানামার সময় স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হচ্ছে ফ্লাটের অন্যান্য বাসিন্দাদের, এমনি ঘোরতর অভিযোগ মডেল ও অভিনেত্রী নায়লা নাঈমের বিরুদ্ধে। ফ্লাটে চার শতাধিক বিড়াল পালন নিয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ঝগড়ায় জড়িয়ে আছে আলোচিত-সমালোচিত মডেল জান্নাতুল নাঈম ওরফে নায়লা নাঈম। ভবনের অন্য বাসিন্দাদের অভিযোগ, নায়লা নাঈম বাণিজ্যিক উদ্দেশে খামার আকারে বিপুল সংখ্যক বিড়াল পালন করে আসছেন।

২০১৭ সাল থেকে নায়লার এমন কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে ভবনের বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে বারবার লিখিত অভিযোগ দেন। এসবের পর নায়লা নাঈম একাধিকবার বিড়াল সরিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রক্ষা করেননি বলে অভিযোগ প্রতিবেশীদের।

বিষয়টি সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে গত ১০ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করেন নায়লা নাঈম। সংবাদ সম্মেলনে তিনি উল্টো ভবনের অন্যান্য বাসিন্দা ও পুলিশের বিরুদ্ধে তাকে হয়রানির অভিযোগ তোলেন।

রাজধানীর আফতাব নগরে জ্যাক মূনীসা ভিলা নামে সাত তলা একটি ভবনে দুটি ফ্ল্যাট কিনে বসবাস শুরু করেন নায়লা নাঈম। তবে ওই ভবনের ফ্লাট মালিকদের অভিযোগ, সংবাদ সম্মেলনে নায়লা নাঈম মিথ্যাচার করেছেন। নায়লার সংবাদ সম্মেলনের পরিপ্রেক্ষিতে ভবন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে সম্প্রতি অনলাইনে এক পাল্টা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে মালিক সমিতির সভাপতি শেখ আব্দুল মান্নান, সহ-সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, কার্যকরী সদস্য ও অন্যান্য প্রতিবেশীরা উপস্থিত ছিলেন।

নায়লার সংবাদ সম্মেলনের পরিপ্রেক্ষিতে ভবন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে সম্প্রতি অনলাইনে এক পাল্টা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে মালিক সমিতির সভাপতি শেখ আব্দুল মান্নান, সহ-সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, কার্যকরী সদস্য ও অন্যান্য প্রতিবেশীরা উপস্থিত ছিলেন।

মালিক সমিতির সভাপতি শেখ আব্দুল মান্নান লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ১০ অক্টোবর আমাদের ফ্ল্যাটের ৭ম তলার বাসিন্দা মিস নায়লা নাইম একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। তার সংবাদ সম্মেলন আমাদের দৃষ্টিগোচর হওয়ায় প্রকৃত ঘটনা সবাইকে জানানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি।

তিনি আরও বলেন, মিস নায়লা নাইম ২০১৭ সাল থেকে বিপুল সংখ্যক বিড়াল নিয়ে তার ফ্ল্যাটে বসবাস শুরু করেন। এরপর থেকেই বিড়ালের খাবার, পচা মাছ মাংস শুরু ও লিফট দিয়ে নামানো-ওঠানোর কারণে লিফট ও সিঁড়ি গন্ধ হয়ে যায়। তিনি বিড়াল পোষার কারণে সেসবের গন্ধে অন্যান্য ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া ও মালিকরা প্রতিনিয়ত মালিক সমিতির কাছে অভিযোগ দেয়া শুরু করে। এরপর সমিতির পক্ষ থেকে নায়লা নাইমকে বিড়ালগুলো সরিয়ে নেবার জন্য বারবার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু গত এক বছরও অনুরোধ করে কোনো কাজ হয়নি।

মালিক সমিতির অভিযোগ, ২০১৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ভবন মালিক সমিতির মিটিং এ নায়লা নাইমের প্রতিনিধি তার বাবার উপস্থিতিতে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে বিড়ালগুলো সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। বিগত ১০ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে নায়লা নাইম নিজে মালিক সমিতির কাছে নিজে উপস্থিত হয়ে বিড়াল অপসারণের জন্য আরো কিছুদিন সময় চান।

পরে গত ২৮ নভেম্বর ২০১৯ সালে নায়লা নাইমের বাবা আবারো মালিক সমিতির কাছে বিড়াল সরানোর জন্য আরো ৬ মাস সময় চেয়ে আবেদন করেন। ৬ মাসেও বিড়াল সরানো না হলে নায়লা নাইমকে সমিতির পক্ষ থেকে একটি লিখিত নোটিশ পাঠানো হয়, কিন্তু তিনি নোটিশের কোনো জবাব দেন নি।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০২০ সালের ২ মে সমিতির সভায় উপস্থিত হতে বললেও তিনি উপস্থিত হননি। সমিতির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ সদর দপ্তর, সিটি করপোরেশন বরাবর এর প্রতিকার চেয়ে আবেদন করা হয় এবং বাড্ডা থানায় একটি জিডি করা হয়। কাজেই নায়লা নাইমকে কোনো সময় দেয়া হয়নি বা তাকে সমিতির মিটিং এ ডাকা হয়নি এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা।

এ সংক্রান্ত ৪ মিটিং এর দুটিতে তার বাবা, একটিতে তিনি নিজে উপস্থিত ছিলেন। একটি মিটিং এ তিনি আসেন নি। ২০১৭ সাল থেকে মে ২০২০ সাল পর্যন্ত মালিক সমিতি তাকে বিড়াল অপসারণের জন্য সময় দিয়েছিল।

সমিতির সভাপতি বলেন, জিডি করায় আফতাব নগর থানার একজন এসআই আমাদের ভবনে তদন্ত করতে আসলে নায়লা নাইম ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ এর মধ্য বিড়ালগুলো সরিয়ে নেবেন বলে জানান। আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তর সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার বাড্ডা থানা জোনকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি উভয়পক্ষকে ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে তার কার্যালয়ে উপস্থিত হতে বলেন। আমরা সময় মতো গেলেও নাইলা নাইম সময় মতো আসেন নি। এরপর তিনি ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিড়াল সরিয়ে নেবেন বলে লিখিত অঙ্গীকার করেন। যা আমরা টেলিফোনের মাধ্যমে জানতে পারি।

পরবর্তীতে ৫ অক্টোবর উক্ত এসআই মহিলা পুলিশসহ বিড়াল অপসারণ করা হয়েছে কিনা তা দেখতে আসেন। তখন নায়লা নাইমকে না পেয়ে পুলিশ তার সঙ্গে ফোনে কথা বলে চলে যান। কাজেই আমরা মনে করি পুলিশ তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে গেছেন।

সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়, পুলিশ তাকে হয়রানি করেছে এমন কিছু আমাদের চোখে পড়েনি। প্রতিবেশীরা তার ওপর মানসিক নির্যাতন করেছেন এটিও ঠিক নয়। কারণ আমরা প্রতিবেশীরাই গত ৪ বছর বিড়ালের অসহনীয় দুর্গন্ধের মধ্য বসবাস করছি। তিনি মানসিকভাবে নির্যাতিত হননি, হয়েছি আমরা প্রতিবেশীরা। আমাদের পাওয়া তথ্য মতে প্রায় তিন থেকে চারশো বিড়ালের কথা আমরা আবেদনে উল্লেখ করেছি।

আব্দুল মান্নান বলেন, অবশেষে বলতে চাই, পরিবেশ নষ্ট করে আবাসিক বাসায় তিনি বিপুল সংখ্যক বিড়াল পালতে পারেন না। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তিনি বিড়াল অপসারণ করেছেন বললেও এখনো অনেক বিড়াল তার বাসায় রয়ে গেছে। যা অতিদ্রুত অপসারণের জন্য অনুরোধ করছি।

আব্দুল মান্নান বলেন, অবশেষে বলতে চাই, পরিবেশ নষ্ট করে আবাসিক বাসায় তিনি বিপুল সংখ্যক বিড়াল পালতে পারেন না। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তিনি বিড়াল অপসারণ করেছেন বললেও এখনো অনেক বিড়াল তার বাসায় রয়ে গেছে। যা অতিদ্রুত অপসারণের জন্য অনুরোধ করছি।

তিনি বলেন, নাইলা নাইমের ভাষ্যমতে তিনি বিড়াল অপসারণ করলেও এখনো অনেক বিড়াল রয়ে গেছে। বিড়ালের গন্ধে আমরা থাকতে পারছি না। এসব বিড়াল অপসারণের জন্য আমরা তাকে বিনীতভাবে অনুরোধ করছি।

জ্যাক মুনীসা ভিলা ফ্ল্যাট মালিক সমিতির সদস্য বলেন, ২০১৭ সাল থেকেই নায়লা নাইমের বিড়ালের গন্ধে আমরা খুব কষ্টে দিন পার করছি। দিনের পর দিন তার বিড়ালের সংখ্যা শুধুই বেড়েছে।

নাইলা নাইম সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তিনি কোনো ক্রিমিনাল এক্ট করছেন না। কিন্তু আবাসিক এলাকায় থাকতে গেলে কিছু কমিউনিটি গাইড লাইন মেনে চলতে হয় যা তিনি উপেক্ষা করে যাচ্ছেন। প্রতিবেশীর সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে নায়লা নাইমের কখনোই কোনো মাথাব্যাথা ছিল না। গত ১৫ দিন আগেই দুটি বিড়াল তার বাসা থেকে পড়ে মারা যায় ও গন্ধ বের হয়। সেখানে তার কাছে মানবিকতার কথা একদমই বেমানান। বিড়াল সরিয়ে নিয়েছেন বললেও এখনো আমরা গন্ধে এখানে থাকতে পারছি না। ওনার কাছে অনুরোধ প্রতিবেশী ও বিড়ালগুলোর কথা চিন্তা করে বিড়ালগুলোকে দ্রুত অপসারণ করে নিক।

জ্যাক মুনীসা ভিলা ফ্ল্যাট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বলেন, ২০১৭ সালে ফ্ল্যাট কিনে নায়লা নাইম অনেক বিড়ালসহ বাড়িতে ওঠেন। এসবের গন্ধে আমরা প্রতিবেশীরা কেও আর এখানে থাকতে পারছি না। মালিকরা থাকতে বাধ্য হলেও ভাড়াটিয়ারা কেও থাকেন না। তাকে বিড়াল সরাতে অনেকবার অনুরোধ করলেও তিনি আমাদের অনুরোধে সাড়া দেন নি। তার বাসায় কোনো কাজের মেয়েও তিন চার মাসের বেশি থাকে না। করোনা ভাইরাসের কারণে আমরা বাইরে যেতে পারছি না, আবার বিড়ালের গন্ধেও ছাদে যেতে পারছি না। সংবাদ সম্মেলনে তিনি যেসব অভিযোগ করেছেন সবই মিথ্যে ও ভিত্তিহীন। আমরা চাই তিনি সব বিড়াল অপসারণ করে আমাদেরকে গন্ধহীন ভাবে থাকার ব্যবস্থা করে দিবেন।

এসব বিষয়ে ইতিপূর্বে নায়লা নাঈমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি তো সংবাদ সম্মেলন করে বলেই দিয়েছি আমি বিড়াল সরিয়ে নিবো। তাহলে এত কথা কেন? এ ব্যাপারে পুলিশ নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন বাড্ডা জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার। তিনি বলেন, আইজিপি অফিস থেকে আমাদের তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। পরবর্তীতে আমরা চেষ্টা করেছি নায়লা নাঈমের বাসায় যেতে। তবে, তিনি এ ব্যাপারে কোনো সহায়তা করেননি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪