ধর্ষন ও নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের দাবিতে দ্বিতীয় দিনেও প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছিল রংপুর মহানগরী। এরই মধ্যে জাতীয় ছাত্রসমাজের মিছিলে পুলিশের বাধা দিয়ে নিয়ে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে নগরীতে।
আজ বুধবার বিকেলে ৫ টায় ধর্ষন ও নারীর প্রতি নিপীড়নের প্রতিবাদে নগরীর সেন্ট্রাল রোডস্থ জাতীয় পার্টি কার্যালয় থেকে একটি মিছিল বের করে জাতীয় সমাজ। মিছিলটি গেট দিয়ে বের হওয়া মাত্রই পুলিশ তাতে বাঁধা দেয়। এসময় পুলিশের সাথে ছাত্রসমাজের তীব্র বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এরই মধ্যে পুলিশ ব্যানার ছিড়ে ফিললে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠে। প্রায় আধাঘান্টাব্যাপি পুলিশের সাথে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে সেখানে উপস্থিত হন মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির।
তিনি আসা মাত্রই পুলিশী বাধা ডিঙ্গিয়ে মিছিলটি পায়রাচত্বরে হয়ে ঘুারে পার্টি অফিসে সমাবেশ করে। এসময় বক্তব্য রাখেন মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির, জেলা জাতীয় ছাত্রসমাজের আহবায়ক আরিফুল ইসলাম আরিফ, সদস্য সচিব সালিউর রহমান সৈকত, যুগ্ম আহবায়ক আকাশ, মুহিন সরকার, শহিদ বাবু, আরিফ হক, সামিউল ইসলাম শ্রমিক পার্টির মহানগর সাধারণ সম্পাদক রাজু আহম্মেদ প্রমুভ। এসময় বক্তারা বলেন, মিছিলে বাঁধা দিয়ে ও এরশাদের ছবি সংবলিত ব্যানার ছিড়ে ফেলে পুলিশ প্রমাণ করেছে তারা ধর্ষনের পক্ষে।
জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তি দাবি করে বক্তারা বলেন এখন থেকে প্রতিদিনই রংপুরের প্রতিটি উপজেলা ও পাড়ামহল্লায় জাতীয় ছাত্রসমাজ ধর্ষন বিরোধী মিছিল করবে। তারা ধর্ষনের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রকাশ্য মৃত্যুদন্ডের আইন পাশেরও দাবি জানান।
অন্যদিকে বুধবার সকাল ১১ টা থেকে রংপুর মহানগরীর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, রংপুরের সকল স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, জাতীয় যুব সংহতি, ছাত্রফ্রন্টসহ বিভিন্ন সংগঠন। এসময় বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছামিউল ইসলাম, রামিয়া, হাজি দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়া সিদ্দিকী, শুভ সরকার প্রমুখ। দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা ব্যানারের মিছিল থেকে শিবির সন্দেহে সালমন, সোহাগ ও হাদিয়া নামের তিনজন ফ্র্যিলান্সারকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এ ব্যপারে কোতয়ালী থানার ওসি আব্দুর রশিদ জানান, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
আন্দোলনকারী তাদের বুকে রাষ্ট্রতুমি ধর্ষকের ফাঁসি দাও-নয়তো জনগনের হাতে ছেড়ে দাও, যে দেশ চালায় নারী-সেদেশে কেন রোজ ধর্ষিত হয় নারী, হে রাষ্ট্র কুকুর নিধন বাদ দিয়ে ধর্ষক নিধন করাসহ বিভিন্ন ধরনের প্লাকার্ড প্রদর্শন করেন। এসময় তারা ধর্ষন ও নারীর প্রতি সহিসংতা বেড়ে যাওয়ার জন্য বিচারহীনতা এবং রাষ্ট্রের দুর্বল পদক্ষেপকে দায়ি করে বলেন ধর্ষনের শাস্তি দ্রুত বিচার ট্রাইবনুালে বিচার করে প্রকাশ্যে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করতে হবে।
একই দাবিতে সকাল থেকে নগরীর লালবাগ এবং কাচারী বাজার এলাকায়ও মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থী জনতা।