ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, শিশুদের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে অনেক বেশি সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ এর এ সময়ে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের সফল বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে অনেক বেশি সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে এবং ক্যাম্পেইনকালীন পরিচালিত কেন্দ্রসমূহে আগত বাচ্চাদেরকে সরাসরি স্বাস্থ্যকর্মীদের ক্যাপসুল খাওয়ানোর বদলে শিশুর সাথে উপস্থিত তার মা কিংবা অভিভাবককে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝিয়ে এই ক্যাপসুল খাওয়াতে পারলে,
অধিকতর সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সেজন্য অবশ্যই আমাদের স্বাস্থ্যকর্মী ও সংশ্লিষ্ট সকলকে শিশুদের ও তার পিতা-মাতার প্রতি অনেক বেশি সংবেদনশীল ও আন্তরিক আচরণ করতে হবে।’ আজ নগর ভবনের মেয়র হানিফ অডিটোরিয়ামে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন ২০২০ উপলক্ষে ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আয়োজিত কেন্দ্রীয় অবহিতকরণ, পরিকল্পনা ও সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশন সভায় মেয়র এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আতঙ্ক নয়, সচেতনতাই কোভিড-১৯ মহামারি প্রতিরোধে মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারে।
ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, শিশুদের মধ্যে এখনো অনেকেরই শারীরিক প্রয়োজনীয়তা অনুসারে প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণের হার সন্তোষজনক নয়। এটা শুধু তাদের খাবারের ঘাটতির জন্য নয়, এর মূল কারণ হলো খাবারে সুষম পুষ্টি গ্রহণের ব্যাপারে আমাদের প্রয়োজনীয় সচেতনতার অভাব। সেজন্যই জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের গুরুত্ব অনেক বেশি।
ডিএসসিসি মেয়র শিশুদের মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ভিটামিন এ দিয়ে দেয়া মানেই মায়েদের দুধ খাওয়ানো লাগবে না এ কথা যেন কেউ মনে না করেন। বাচ্চাদের ক্যাপসুল দেয়ার সময় এই বার্তাটাও দেবেন যে, মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে। কারণ শিশুদের রোগ প্রতিরোধের ওষুধ হিসেবে কাজ করে মায়ের বুকের দুধ। সেটা যেন অন্তত দুই বছর পর্যন্ত খাওয়ানো হয়, সেজন্য মায়েদেরকেও উৎসাহিত করতে হবে।
ছোট মাছের মাথা যেন বাচ্চাদের খাওয়ানো হয়, সে বিষয়েও অভিভাবকদের সচেতন করার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে মেয়র তাপস বলেন, অনেকেই ছোট মাছ, বিশেষ করে মলা-ঢেলার মাথা কেটে ফেলে রান্না করেন। ছোট মাছের মাথায় যে ভিটামিন থাকে, সে বিষয়েও সচেতন থাকতে হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শরীফ আহমেদসহ
কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী এতে বক্তব্য রাখেন।
জাতীয় পুষ্টি সেবার লাইন ডাইরেক্টর, ঢাকার সিভিল সার্জন, কর্পোরেশনের সচিব আকরামুজ্জামান, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালের পরিচালকের প্রতিনিধিবৃন্দ, স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ, ইউপিএইচসিএসডিপি ও এনএইচএসডিপি প্রতিনিধিবৃন্দ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এসআইএমওরা ওরিয়েন্টশন সভায় উপস্থিত ছিলেন।
আগামী ৪ অক্টোবর থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত পক্ষকালব্যাপী এই ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হবে। ২ হাজার ৯৭৪ জন স্বেচ্ছাসেবক ও ১১২ জন সুপারভাইজারের তত্ত্বাবধানে কর্পোরেশন এলাকায় ১ হাজার ৪২৭টি কেন্দ্রে এই কর্মসূচি পালন করা হবে।
প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কেন্দ্রগুলোতে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। ক্যাম্পেইনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ৫২ হাজার ১৭৬ জন শিশুকে একটি করে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল এবং
১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৩ লাখ ৪ হাজার ৪৬০ শিশুকে একটি করে লাল রঙের ‘এ’ ক্যোপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।