মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানের তদবিরে মিথ্যা তথ্য দিয়ে দ্বিতীয়বার জাতীয় পরিচয়পত্র করিয়ে নেন জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী। সাবরিনার সঙ্গে ড. মিজান নিজেই গিয়েছিল নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে। এ কথা জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
যদিও বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ড. মিজান। এদিকে সাবরিনার দুটি এনআইডি তদন্তে কমিশনের কোনো কর্মকর্তার যোগসাজশ পাওয়া যায়নি। মিথ্যা তথ্য দিয়ে দ্বিতীয়বার ভোটার হওয়াকে কেন্দ্র করে আবারো আলোচনায় জেকেজি চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনার আরিফ চৌধুরী।
সাবরিনার এই এনআইডি জালিয়াতির ঘটনায় উঠে এসেছে মানবাধিকার কমিশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানের নাম।
ইসির তথ্যভাণ্ডার বলছে, দ্বিতীয়বার ভোটার হওয়ার সময় সাবরিনার আবেদন পত্রে ছিল ড. মিজানুর রহমানের রেফারেন্স। এমনকি ড. মিজান নিজেই উপস্থিত হয়ে সাবরিনার জন্য তদবির করেন বলে জানান এনআইডির টেকনিক্যাল এক্সপার্ট। এনআইডির টেকনিক্যাল এক্সপার্ট মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, ফাইলটাতে দেখলাম মিজানুর রহমান স্যারের কার্ড আছে। মিজান স্যার ওনাকে নিয়ে এসেছিলেন। এনআইডির টেকনিক্যাল এক্সপার্ট তাকে সাবরিনার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে দেখেছেন জানিয়ে ড. মিজানুর রহমানকে প্রশ্ন করা হয়, কেন তিনি সেখানে গিয়েছিলেন।
বিষয়টি অস্বীকার করেন ড. মিজান। তার দাবি, তিনি নাকি কখনো নির্বাচন কমিশনেই যাননি। এমনকি চেনেন না সাবরিনাকেও।
প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান বলেন, যে মানুষকে আমি চিনি না কোনদিন, সে কেন আমার নাম ব্যবহার করেছে।
এনআইডি মহাপরিচালক বলছেন, শুধু ইসি কর্মকর্তাই নয়, তদন্তের আওতায় নিয়ে আসা হবে তদবিরকারীকেও। এনআইডি মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম বলেন, যারা রেফারেন্স করেছিল, তারা কতটুকু দোষী, এগুলো দেখা হবে।
এনআইডি সার্ভারের সিকিউরিটি ফিচার অনুযায়ী, দ্বিতীয় ভোটার হতে আসলেই আঙুলের ছাপে ধরা পড়ে যায়। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে, কমিশনের কোনো কর্মকর্তার যোগসাজশ ছাড়া আদৌ দ্বৈত ভোটার হওয়া সম্ভব কিনা।
যদিও ইসির দুই দফা তদন্তে উঠে আসেনি কোনো কর্মকর্তার নাম। অধিকতর তদন্তের জন্য বুয়েট এবং কম্পিউটার কাউন্সিলের প্রতিনিধির সমন্বয়ে ৬ সদস্যের আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয় জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর বলেন, এই কমিটিতে বাইরের লোকও থাকবেন। অন্য এক্সপার্টরাও থাকবেন।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন ২০১০-এ, মিথ্যা তথ্য প্রদান এবং একাধিকবার ভোটার হওয়া, এ দুটি অপরাধের জন্য এক বছর করে কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। একই শাস্তি আওতায় পড়বেন অনিয়মে জড়িত কর্মকর্তাও।