আরে টিকাটুলির মোড়ে একটা অভিসার সিনেমা হল রয়েছে, হলে নাকি এয়ারকন্ডিশন রয়েছে’ একটি প্রেক্ষাগৃহ কতটা পরিচিতি পেয়েছে,তা বোঝার জন্য এই গানটিই যথেষ্ট। রাজধানীর টিকাটুলি বা হাটখোলার সঙ্গে ৫২ বছর ধরে জড়িয়ে আছে ‘অভিসার’ নামটি।
ব্যবসায়িক মন্দা আর করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে অনিশ্চয়তার শঙ্কা নিয়ে সেই অভিসার প্রেক্ষাগৃহটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মালিক পক্ষ। দুই মাস পনের দিন ধরে দেশের সব সিনেমা হল এবং সিনেমার শুটিং বন্ধ। গত ৩১ মে থেকে সরকারি সিদ্ধান্তে ধীরে ধীরে সবকিছু সীমিত পরিসরে চালু হলেও সিনেমা হলগুলো খোলা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সিনেমা হল খোলা হলেও তাতে দর্শক সমাগম হওয়া নিয়েও রয়েছে ঘোর শঙ্কা। সেই শঙ্কা থেকেই অনেক হল মালিক আর সিনেমা ব্যবসা করতে চাইছেন না বলে জানা গেছে।
অভিসার সিনেমা হলের অন্যতম মালিক সফর আলী ভুঁইয়া জানিয়েছেন,২৬ কাঠা জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত অভিসার হলটি ভেঙে পাঁচতলা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হবে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে। এ ভবনে একটি কমিউনিটি সেন্টার থাকবে। পাশাপাশি অন্য তলায় ব্যাংক-বিমা ও সায়েন্টিফিক সরঞ্জাম বিক্রির দোকান ভাড়া দেওয়া হবে।
সফর আলী ভুঁইয়া বলেন, সিনেমা ব্যবসা বলে এখন আর কিছু নেই। এটা পুরোটাই লস। বছরে ছবি হিট হয় হাতেগোনা এক-দুটি। তার মধ্যে হানা দিয়েছে মহামারি করোনা। আর কত লস গুনব? তাই প্রায় ৫২ বছরের পুরোনো অভিসার ভেঙে ফেলা হলেও স্মৃতি হিসেবে ভবনে দেড়শ আসনের একটি ছোটো সিনেমা হল (মাল্টিপ্লেক্স) রাখার পরিকল্পনা আছে আমাদের।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৮ সালের দিকে ব্যবসায়ী কামাল উদ্দিনের হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয় অভিসার। ১৯৯২ সালে তিনি দেনার দায়ে কে এম আর মঞ্জু ও সফর আলী ভুঁইয়ার কাছে অভিসার বিক্রি করে দেন। কেনার পর অভিসারের ওপর ‘নেপচুন’ নামে আরেকটি ছোটো সিনেমা হল তৈরি করেন তারা। অভিসারে মুক্তিপ্রাপ্ত নতুন ছায়াছবি এবং নেপচুনে প্রায় সারা বছরই এক টিকিটে দুই ছবি চলে আসছিল।