তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘এতদিন ধরে ১৫ আগস্ট বেগম জিয়ার ভুয়া জন্মদিন পালনের জন্য জাতির কাছে বিএনপির ক্ষমা চাওয়া উচিত।
আর সেই ভুয়া জন্মদিন না পালনের ঘোষণা দিয়ে বাহবা নেয়ার চেষ্টাও অপরাধ।’
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষে ‘জাতির পিতার হত্যাকান্ড : ষড়যন্ত্র দেশে-বিদেশে’ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
১৫ আগস্ট আর বেগম জিয়ার জন্মদিন পালন করবেনা বলে বিএনপি’র ঘোষণার বিষয়ে মন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘কবে থেকে ১৫ আগস্ট বেগম জিয়ার জন্মতারিখ হলো? পত্রিকার পাতায় আমরা জানলাম, ১৯৯৫ সালে হঠাৎ তিনি ১৫ আগস্ট জন্মগ্রহণ করলেন! এর আগেও তার তিন-চারটি জন্মদিনের কথা আমরা শুনেছি। এখন তারা যে এটি পালন করবেনা বলে বাহবা নেয়ার চেষ্টা করছে, সেটিও একটি অপরাধ।’
‘১৫ আগস্ট, যেদিন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়, হঠাৎ বেগম জিয়া সেদিন জন্মগ্রহণ করেছেন ঘোষণা দিয়ে তো হত্যাকান্ডকে সমর্থন করা হলো, হত্যাকারীদের উসাহিত করা হলো এবং এটি সেই নির্মম হত্যাকান্ডকে উপহাস করার শামিল। তাই আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো, তারা যে হঠাৎ করে ১৫ আগস্টকে বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন সেটি যে মিথ্যা-বানোয়াট ছিলো, সেটির জন্য জাতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে, তাহলে জাতি তাদের ক্ষমা করলেও করতে পারে।
ভুয়া জন্মদিন পালন করবেন না বলে তারা এটাই মনে করিয়ে দিচ্ছে, যে তারা জাতির পিতার হত্যাকান্ড নিয়ে উপহাস করতে চায়। দয়া করে এই নির্মম হত্যাকান্ড নিয়ে উপহাস করবেন না।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারী, নেপথ্যের নট-নটীদের মুখোশ উন্মোচন করে বিচারের আওতায় আনার জন্য আজ সাংবাদিক সমাজও দাবি জানিয়েছে।
আমি আগে থেকেই এটি বলে আসছি যে, শুধু এই হত্যাকান্ডের কুশীলবই নয়, যারা এর পটভূমি তৈরি করেছিলো, তাদেরও মুখোশ উন্মোচন করে বিচারের জন্য এখনই একটি কমিশন গঠন করা উচিত। মনে রাখতে হবে, এই হত্যাকান্ডের পর যারা এটিকে সমর্থন করেছিলো তাদেরও দায় আছে। যারা আওয়ামী লীগের পাঁচজন সংসদ সদস্যকে গুলি করে হত্যা করেছিল, এমনকি ঈদের জামাতে গুলি চালিয়েছিলো, যারা ‘বাসন্তী’কে জাল পরিয়ে ছবি তুলেছিলো, তাদের কি দায় নেই!’
মন্ত্রী এসময় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে শহীদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সকল সদস্য, শহীদ জাতীয় চার নেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে তাদের আত্মার শান্তিকামনা করেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলমের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, আব্দুল জলিল ভুঁইয়া, ওমর ফারুক, জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক শাহেদ চৌধুরী, মাইনুল আলম সেমিনারে বক্তব্য রাখেন।
সভাপতির বক্তৃতায় সাইফুল আলম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পেছনে যারা ছিলো এবং যারা আগে ও পরে এ হত্যাকে সমর্থন করেছে, তাদের মুখোশ উন্মোচন করে বিচারের আওতায় আনা এখন সময়ের দাবি।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ শ্যামল দত্ত ‘জাতির পিতার হত্যাকান্ড : ষড়যন্ত্র দেশে-বিদেশে’ মূল প্রবন্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ড ও এর পূর্বাপর ষড়যন্ত্রের পটভূমি বর্ণনা করেন।