এই দুই কর্মকর্তার মধ্যে ওই অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী হোসেনকে তৎকালিন ভূমি প্রতিমন্ত্রী বর্তমানে ভূমিমন্ত্রী ৬২ হাজার টাকাসহ হাতেনাতে ধরেন। পরে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। আর একই অফিসের জয়নাল আবেদিন নামের আরেক কর্মচারীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিলে বরখাস্ত হলেও খুঁটির জোরে গত আট মাস আগে ওই কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী হোসেন আবার সেই সফিপুর ভূমি অফিসে যোগদান করেন। এরপর থেকে দাপ্তরিক কাজে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করেই যাচ্ছেন বলে অভিযোগ।
ভুক্তভোগী জমির মালিক, ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা জানান, মোহাম্মদ আলী হোসেন অফিসে যোগদানের পর পরই নানা অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েন। ভূমি অফিসের বলিয়াম বইয়ের পাতা ছিড়ে খাজনা আটকে দেওয়া, খাজনার টাকা অতিরিক্ত আদায় করে রশিদে কম টাকা তুলে দেওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই অফিসের এক ওমেদার জানান, সফিপুর মৌজায় প্রতি শতাংশ জমির ভূমিকর ৪০ টাকা হলেও উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা সোহেল মামুন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী হোসেনের সাথে যোগসাজসে ৫ টাকা করে রশিদ দিচ্ছেন। কিন্তু ৫ টাকা হারে রশিদ দিলেও খাজনা বাবদ নেওয়া হচ্ছে হাজার হাজার টাকা। ফলে সরকার হাজার হাজার টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অভিলম্বে সফিপুর মৌজার অধিকাংশ ভূমি মালিকরা ওই দুই কর্মকর্তার অপসারন দাবি করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কৌজাকুঁড়ি মৌজার ৪৭৯৭ থেকে ৪৭৯৯ জোতের পুরো বলিয়ামের পাতাই ছিড়ে ফেলা হয়েছে। ওই জোতের মালিকরা খাজনা দিতে পারছেন না। তাদের ফের খারিজ করতে বলা হয়েছে।
কালিয়াকৈর এসিল্যান্ড থেকে সিরিয়ালে খারিজের প্রস্তাব আসলেও তদন্ত না করেই যারা মোটা অংকের টাকা দেয় তাদের প্রস্তাব নিষ্পত্তির জন্য এসিল্যান্ড অফিসে পাঠানো হয়। এবিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে তার জমির খারিজ প্রস্তাব বিনা কারণেই বাতিল করে দেওয়া হয়।
সফিপুর মৌজায় ৩৬১২নং জোতে ২০ শতাংশ জমির দলিলে চার একর ৪ শতাংশ জমি খারিজ করে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা সোহেল মামুনের বিরুদ্ধে।
ওই ভূমি কর্মকর্তা ‘ক’ তফসিলের ৫ শতাংশের দলিলে ৭৮ শতাংশ জমি খারিজ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শাকাশ্বর এলাকার রফিকুল ইসলাম বলেন, ওমেদারের মাধ্যমে ৮০ শতাংশ জমি খারিজের জন্য ৮০ হাজার টাকা দিয়েছি। তবে খাজনা দিতে মোটা অংকের টাকা দাবি করছেন সোহেল মামুন।
এবিষয়ে ভূমি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী হোসেন ও ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা সোহেল মামুন বলেন, ভাই কি করলে আপনি থামবেন জানান। পত্রিকায় খবর ছাপলে আমাদের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাবে।
কালিয়াকৈর ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার মো. আদনান চৌধুরী জানান, ওই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ উপস্থাপিত হলে খতিয়ে দেখা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।