নগরীর ৯৯টি স্থাপনায় ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় সংশ্লিষ্টদের প্রায় ৩ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি)।
এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নগরবাসীকে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দিতে দ্বিতীয় পর্যায়ে বিশেষ পরিছন্নতা অভিযান বা চিরুনী অভিযানের আজ দ্বিতীয় দিনে এ জরিমানা করা হয়।
ডিএনসিসি’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ ১৩ হাজার ২৯৯টি বাড়ি, স্থাপনা ও নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করে মোট ৯৯টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে।
এছাড়া ৭ হাজার ৭৯৪টি স্থাপনায় এডিস মশা বংশ বিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এ সময়ে ১৮টি মামলায় মোট ২ লাখ ৯৭ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উত্তরা অঞ্চলে (অঞ্চল-১) মোট ১ হাজার ১৩১ টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ১৯টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে ৪টি মামলায় মোট ১২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া ৯২৫টি স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।
মিরপুর অঞ্চলে (অঞ্চল-২) মোট ২ হাজার ৮৫৪টি স্থাপনা পরিদর্শন করে ৬টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায় এবং ৪২১টি স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।
এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৮টি মামলায় মোট ১ লাখ ৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মহাখালী অঞ্চলে (অঞ্চল-৩) মোট ১ হাজার ৪৯৮টি স্থাপনা পরিদর্শন করে ৩১টিতে এডিস মশার লার্ভা এবং ৯৯২টি স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া গেছে। এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ৩টি মামলায় ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মিরপুর-১০ অঞ্চলে (অঞ্চল-৪) ১ হাজার ৫৭২টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৩টিতে এডিস মশার লার্ভা ও ৭২৫টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া গেছে।
কারওয়ান বাজার অঞ্চলে (অঞ্চল-৫) মোট ২ হাজার ৯৪টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ১৫টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। এ সময়ে ২টি মামলায় মোট ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া ১ হাজার ৬১১টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।
হরিরামপুর অঞ্চলে (অঞ্চল-৬) মোট ১ হাজার ৩৫৫টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৮টিতে এডিস মশার লার্ভা লার্ভা পাওয়া যায়। এছাড়া ১ হাজার ৯৪টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ১টি মামলায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
দক্ষিণখান অঞ্চলে (অঞ্চল-৭) মোট ৯৪৬টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৩টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে বাড়ির মালিকদেরকে সতর্ক করে লার্ভা ধ্বংস করা হয়। এছাড়া ৭০৫টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।
উত্তরখান অঞ্চলে (অঞ্চল-৮) মোট ৭৩৩টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ৩টি স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। তবে ৫১০টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।
ভাটারা অঞ্চলে (অঞ্চল-৯) মোট ৪৯৮টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ৭টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। বাড়ির মালিকদেরকে সতর্ক করে লার্ভা ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়া ৩০৭টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।
সাঁতারকুল অঞ্চলে (অঞ্চল-১০) মোট ৬১৮টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ৪টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে বাড়ির মালিকদেরকে সতর্ক করে লার্ভা ধ্বংস করা হয়। এছাড়া ৫০৪টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।
উল্লিখিত সকল সম্ভাব্য এডিস মশার প্রজননস্থলে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনাপূর্বক কীটনাশক ছিটানো হয়েছে এবং জনসাধারণকে এ বিষয়ে পরবর্তীতে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রথম পর্যায়ের ১০ দিনব্যাপী (৬-১৫ জুন) চিরুনি অভিযানে ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডে মোট ১ লাখ ৩৪ হাজার ১৩৫টি বাড়ি, স্থাপনা, নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করে মোট ১ হাজার ৬০১টিতে এডিস মশার লার্ভা এবং ৮৯ হাজার ৬২৬টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।
এ সময়ে মোট ২১ লক্ষ ৮৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নগরবাসীকে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দিতে ডিএনসিসির চিরুনি অভিযান আগামীকালও অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়।