নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষা শনিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সারাদেশে ১৩৭টি কেন্দ্রে এই ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৫ লাখ ৬০ হাজার ৫৯৫ জন পরীক্ষার্থী আবেদন করেছিলেন।
জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। পরে এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএর ভিত্তিতে অধিভুক্ত কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু করে আওয়ামী সরকার। দীর্ঘ ১০ বছর পর সেই পদ্ধতিতে ফিরল প্রতিষ্ঠানটি।
এ পরীক্ষায় মানবিক শাখায় ২ লাখ ৭৪ হাজার ৭১৮ জন, বানিজ্য শাখায় ১ লাখ ১৭ হাজার ৩৬ জন, বিজ্ঞান শাখায় ১ লাখ ৬৮ হাজার ৮৪১ জন অংশগ্রহণ করেন। জেলা সদরের পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে এই ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ রাজধানীর একাধিক পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি পরীক্ষার প্রস্তুতি, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং পরীক্ষার্থীদের সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে সরেজমিনে খোঁজখবর নেন। তিনি সংশ্লিষ্ট কলেজ কর্তৃপক্ষ, পরীক্ষা কমিটির সদস্যবৃন্দ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সাথে কথা বলেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
সকাল সাড়ে ১০ টায় রাজধানীর লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজের পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনকালে উপাচার্য প্রফেসর আমানুল্লাহ বলেন, ‘প্রায় এক যুগ পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও ভর্তি পরীক্ষা চালু করতে পেরে আমরা আনন্দিত। এই পরীক্ষা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে উপাচার্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তার আমন্ত্রিত অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আজিম আখন্দ, গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জি. কে. এম. মোস্তাফিজুর রহমান-সহ ভর্তি পরীক্ষার নিয়ন্ত্রণ সেলে অনলাইন মনিটরিংয়ের মাধ্যমে সারা দেশে ভর্তি পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ করেন।
এদিকে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ধর্মপুর ডিগ্রি শাখার কলাভবনে পানিতে বসেই পরীক্ষা দেন শিক্ষার্থীরা। এদিন সকালে স্নাতক (অনার্স) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার শুরুতে বৃষ্টি না থাকলেও শেষে বৃষ্টির মধ্যে বাড়ি ফেরেন শিক্ষার্থীরা।
সাগরে গভীর নিম্নচাপের কারণে ভারি বর্ষণে হাঁটু থেকে কোমরসমান পানিতে ডুবে যায় এই কেন্দ্র।
স্নাতক ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া দিলরুবা সুলতানা জানান, ‘সকালে বসার বেঞ্চের ওপর দিয়ে হেঁটে তারা কলাভবনে ঢুকেছেন। কলেজ কর্তৃপক্ষই এমন ব্যবস্থা করেছেন। ক্যাম্পাসের প্রবেশ পথেও পানি ছিল। রেডক্রিসেন্টসহ সবাই আমাদের সহায়তা দিয়েছে।’
কলেজের অধ্যক্ষ আবুল বাশার ভূঁইয়া বলেন, ‘জলাবদ্ধতার সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলছে। মেঝে উঁচু করলেও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। আমরা চারদিক থেকে বাউন্ডারি নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি, যা হলে আশপাশের পানি প্রবেশ বন্ধ হবে।’