টাঙ্গাইল প্রতিনিধি-
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার সহদেবপুর ইউনিয়নের পৌজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ১২ বছর ধরে যথারীতি ভাবে বসছে পশুর হাট।এতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানালেও প্রতিকার মেলেনি।
প্রতি বছর ঈদুল আযহা উপলক্ষে স্কুলের মাঠে কোরবানির পশুর হাট বসে। ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকে কোরবানির পশুর হাট শুরু হয়, সেদিন নামমাত্র স্কুল খোলা হয়। যারা গরু কেনাবেচা করতে আসেন, তাদের হৈ-হল্লায় ক্লাস নেয়া কঠিন হয়ে পড়ে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্বস্তিতে লেখাপড়া করতে পারছে না। পশুর বর্জ্যরে গন্ধে বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, গরুর হাটের প্রয়োজন আছে। হাট থেকেই গরু কেনাবেচা করতে হয়। সমস্যা হচ্ছে- ওই স্থানে গরুর হাটের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা নেই। যে কারণে স্কুল মাঠে পশুর হাট বসানো হয়েছে।
প্রশ্ন হচ্ছে- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে এরকম হাট বসানো কতটা যৌক্তিক। বিদ্যালয় মাঠে পশুর হাট থাকলে এমনিতেই শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হয়। তার ওপর সেই হাট যদি স্কুলের মাঠ অবধি গড়ায় তখন শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির আর শেষ থাকে না।রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় কিংবা আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখলদারিত্ব চালিয়ে যায়। এতে লেখাপড়া বিঘ্নিত হয়। শিক্ষার্থীরা যে অবসরে খেলাধুলার আনন্দে ভাসবে- সেটাও তখন আর সম্ভব হয় না। পশুর হাটের দরকার আছে। তাই বলে স্কুলের মাঠ দখল করে সেটা হতে পারে না। স্কুল থেকে নিরাপদ দূরত্বে পৃথক স্থানে গরুর হাট বসানোই শ্রেয়। স্কুল ভিন্ন আর কোথায় হাট বসানো যায় সেটা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই ঠিক করতে হবে। শিক্ষার পরিবেশ কোনোমতেই নষ্ট হতে দেয়া যায় না। আমরা আশা করব, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।
অভিযোগ কারী শুকুর মাহমুদ বিজয় জানান, ঈদুল আযহার উপলক্ষে স্কুলের মাঠে কোরবানির পশুর হাট বন্ধের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট গত ৩-০৬-২০২৪ ইং তারিখেতএকটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগ দেওয়া হলে এ বিষয়ে নির্বাহী অফিসারের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আগামী সোমবার থেকে পশুর হাট শুরু এর মধ্যে হাটের বাঁশ খুটি পুঁতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন হাটের ইজারাদারা। তিনি আরো বলেন, পশুর হাটের প্রয়োজন কিন্তু স্কুলের আশে-পাশে ফাঁকা জায়গায় আছে সেখানে করতে পারে।
পৌজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, মোহাম্মদ মুর্তজ বলেন, নির্বাহী অফিসার পশুর হাটের অনুমোদন দিলে আমার কিছুই করার নেই। তিনি আরো বলেন অনুমোদন না দেওয়া হলে হাট হবে না।
পৌজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মুকসেদ আলী জানান, নির্বাহী অফিসারের নিকট ঈদুল আজহার পশুর হাটের জন্য আবেদন দিয়েছে অনুমোদন দেওয়া হলে হাট করতে পারবে। নির্বাহী অফিসার অনুমোদন না দিলে হাট হবে না।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহাদাত হুসেইন বলেন, পৌজান হাটের ইজারাদারদের ডেকে এনে বলে দিবো পশুর হাট অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য।