স্টাফ রিপোর্টার-
মোবাইল ব্যাংকিং এর নামে প্রতারণার অভিযোগে ভাবনা আক্তার (২১) নামে এক তরুণীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারী) তেজগাঁও থানার কাওরান বাজার বেলপট্রি মোড়ের রেলওয়ে মাকের্ট থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
শুক্রবার (১ মার্চ) ডিমপির তেজগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গ্রেফতারকৃত ভাবনা কিশোরগঞ্জের নিকলী থানারগুরই উত্তর হাটি গ্রামের সরোয়ার সরদারের মেয়ে। তিনি একজন প্রতারক। তার গ্রুপে নারীসহ আরও কয়েকজন সদস্য আছেন। তারা মূলত বিকাশ, নগদ, রকেটের মতো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের বিভিন্ন এজেন্টের সাথে প্রতারণা করেন। তাদের গ্রুপের একজন নারী সদস্য প্রথমে একটি দোকানে যান। সেখানে একটি নাম্বার বলে তাতে টাকা পাঠাতে বলেন। টাকা পাঠানোর সাথে সাথেই গ্রুপের আরেক সদস্য এসে কার্ড কিনতে আসেন। দোকানদার কার্ড দিতে একটু নীচু হলে বা অন্যমনস্ক হলেই তারা তখন নিজেদের মধ্যে মোবাইল পরিবর্তন করে ফেলেন! এরপর কার্ড নিয়ে অপর সদস্য চলে গেলে বিকাশ কিংবা নগদে টাকা আসেনি বলে দাবি করতে থাকেন ওই নারী সদস্য। পরে নিজের মোবাইলও দেখান।
এখানে উল্লেখ্য, তারা একই ধরনের দুইটি মোবাইল সেট রাখে এবং দুইটি সিম নাম্বারই থাকে প্রায় একই, শুধু একটি ডিজিটই আলাদা হয়। দোকানদার পরে ওই মোবাইল চেক করেন এবং দেখেন একটি ডিজিট ভুল হয়েছে ও টাকা অন্য নম্বরে চলে গেছে। এটা নিজের ভুল মনে করে পরে পুরো টাকা আবার ফেরত দিয়ে দেন অথবা আবারও বিকাশ কিংবা নগদে পাঠিয়ে দেন। ভাবনা এই প্রতারক চক্রের প্রধান। তিনিই মূলত বিভিন্ন এজেন্টের কাছে ক্রেতা সেজে যান।
তিনি আরও জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার কাওরান বাজার আনিশা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের দোকানে গিয়ে ১১,৫০০/- টাকা নগদে দিতে বলেন। দোকাদার কথামতো টাকা ক্যাশইন করেন। এসময় ভাবনার গ্রুপের আরেকজন এসে বাংলালিংকের রিচার্জ কার্ড দিতে বলেন। দোকানদার কার্ড দিলে ওই ব্যক্তি চলে যান। এদিকে তখন ভাবনা বলেন, ভাই এখনও আমার মোবাইলে ক্যাশইন হয় নাই।
তখন দোকানদার ভাবনার মোবাইল নিয়ে দেখেন যে, ০১৮৮৬-৯৫৯৩৭৯ নাম্বারের পরিবর্তে ০১৮৮৬-৮৫৯৩৭৯ নাম্বারে টাকা ক্যাশইন হয়েছে। তখন ভাবনা টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চিৎকার শুরু করেন। পরে আশপাশের লোকজন জড়ো হলে দোকানে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হয়। তাতে দেখা যায়, ক্রেতা সেজে কার্ড কিনতে আসা গ্রুপের আরেক সদস্যের কাছে ভাবনা কৌশলে ক্যাশইন করা ০১৮৮৬-৮৫৯৩৭৯ নাম্বারের মোবাইল ফোনটি পরিবর্তন করে একই রং ও মডেলের ০১৮৮৬-৯৫৯৩৭৯ নাম্বারের নিয়ে নেন।
ওসি মহসীন বলেন, সিসি ক্যামেরায় এই প্রতারণা ধরা পরার পর তারা ভাবনাকে আটক করে পুলিশকে জানালে তাকে আমরা গ্রেফতার করি। এ পর্যন্ত শতাধিক এমন প্রতারণার ঘটনা তারা ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন ভাবনা। তারা ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, সাভার, নারায়ণগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী এলাকায় এই ধরনের প্রতারণা করে থাকেন।”