টাঙ্গাইল প্রতিনিধি-
প্রতিবছর সাদা ফুলকপি চাষ করলেও টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার কৃষক আজিজুলের ক্ষেতে এখন শোভা পাচ্ছে বর্ণিল ফুলকপি।
স্থানীয় বাজারেও বেশ সাড়া ফেলেছে এই সবজি; কৌতুহলবশত কিনছেন অনেকে, বিক্রিও হচ্ছে বেশি দামে।
কালিহাতীর উপজেলার ঝাটিবাড়ি গ্রামের কৃষক আজিজুল জানান, রঙিন ফুলকপি চাষে প্রথমে সাহস পাচ্ছিলেন না। ভয় ছিল লোকসানের। পরে কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে উদ্যোগী হন। আর প্রথমবারেই তার সফলতা দেখে এখন উৎসাহ পাচ্ছেন অন্য কৃষকরাও।
আজিজুল বলেন, “আমার ১৫ শতক জমিতে প্রায় দেড় হাজারের বেশি ফুলকপির চারা লাগিয়েছিলাম। সবগুলোই ভালোভাবে বড় হয়েছে। এখন বাজারে ৬০ টাকা কেজি পাইকারি দরে বিক্রি করি। সেগুলো আবার খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৭০-৯০ টাকা কেজিতে।”
স্থানীয় কৃষক আমজাদ ও ইব্রাহিম জানান, সাদা ফুলকপির মতই রঙিন ফুলকপির চাষ হবে কিনা, প্রথমে সেটা নিয়ে সংশয় ছিল। কিন্তু আজিজুল ১৫ শতক জমিতে সফলভাবেই চাষ করেছেন।
আজিজুলের রঙিন ফুলকপির ক্ষেত দেখতে আসছেন অনেকে। কেউ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ আবার ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করছেন।
রঙিন ফুলকপি চাষে খরচ কেমন জানতে চাইলে আজিজুল বলেন, খরচ মোটামুটি একইরকম। তবে জৈব সার দিতে হয় বেশি। সাদা ফুলকপির মত রঙিন ফুলকপিও আকারে বেশ বড় হয়।
আজিজুলের রঙিন ফুলকপির পাইকারি ক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, “নতুন হিসেবে ভালোই বেচাকেনা হচ্ছে। সাদা কপি বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা কেজি, সেখানে রঙিন ফুলকপি বিক্রি করছি ৭০-৯০ টাকা কেজিতে। ক্রেতাদের বাড়তি আগ্রহ থাকায় ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে।
অনেক ক্রেতা এসে বলছেন, রঙিন ফুলকপির স্বাদও ভালো। আমি প্রতিদিন ৩৫-৪০টা বিক্রি করছি।”
কালিহাতী উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রীনা রাণী দে বলেন, “প্রথমে তো আজিজুল রঙিন ফুলকপি চাষে রাজি হয়নি। সে বলেছিল লোকসানে পড়বে। পরে অনেক বুঝিয়ে তাকে রাজি করাই।
“এখন তো এলাকায় ব্যাপক সাড়া পড়ে গেছে। বাজারে দামও বেশি, আজিজুলও খুশি। এছাড়া রঙিন ফুলকপিতে পুষ্টিও বেশি।”
জানতে চাইলে কালিহাতী কৃষি কর্মকর্তা ফারহানা মামুন বলেন, “এগুলো ইন্ডিয়ান জাতের ফুলকপি। আমাদের দেশে মাত্র দুই বছর আগে আবাদ শুরু হয়। কালিহাতীতে সাধারণত সাদা কপিই চাষ হয়, এবারই প্রথম এই রঙিন কপি চাষ করা হয়েছে। আগামীতে কেউ আগ্রহী হলে আমরা সহযোগিতা করব।”