1. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  2. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  3. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ঢাকাবাসীকে নিরাপত্তা প্রদানের মহান দায়িত্বে পিছিয়ে থাকার কোন সুযোগ নেই-ডিএমপি কমিশনার আজ ঢাকায় আসছে মার্কিন প্রতিনিধি দল সবজি, পেঁয়াজ ও মুরগির দাম কমলেও, কমেনি আলুর দাম ঘোষিত হলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ডিএমপি কমিশনার মোঃ সাজ্জাত আলীর দায়িত্বভার গ্রহণ নতুন পুলিশ প্রধানের দায়িত্বভার গ্রহণ এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে জনগণই সকল ক্ষমতার মালিক হবেন- প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টা ও খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎ ঢাকা মহানগরে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার শেষেই দ্রুত সম্ভব নির্বাচন সংঘটিত হবে-আইন উপদেষ্টা

পুলিশ কর্মকর্তার ভুয়া ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে প্রতারণার অভিযোগে একজন গ্রেফতার

  • সময় : শনিবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ৭৫

স্টাফ রিপোর্টার-

পুলিশ কর্মকর্তার ভুয়া ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে প্রতারণার অভিযোগে গাইবান্ধা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) গাইবান্ধা জেলার সদর থানার ইসলাম প্রিন্টিং প্রেস নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন (৩০)।

শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে তেজগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, সাইবার প্রতারণার অভিযোগে
গ্রেফতার আনোয়ার দীর্ঘদিন ধরে মোহাম্মদ মহসীন (MD Mohshin) নামে একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি চালিয়ে আসছেন। ওই আইডিতে তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীনের মূল আইডির অনুরূপ ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করেন তিনি। ম্যাসেঞ্জারে সেই আইডি থেকে তিনি ওসি মহসীন সেজে বিভিন্ন মেয়ের সাথে চ্যাট করেন।

তিনি আরও বলেন, এদের মধ্যে কারও কারও সাথে আপত্তিকর কথাবার্তা বলেন, কারও কারও সাথে আপত্তিকর ছবি আদান-প্রদান করেন, আবার কারও কারও কাছ থেকে টাকাও দাবি করেন।

এ ব্যাপারে ওসি মহসীন প্রথমে গত ৫ সেপ্টেম্বর মিরপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরবর্তীতে গত ২২ জানুয়ারি নিজেই বাদি হয়ে তেজগাঁও থানায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলার প্রেক্ষিতেই গতকাল তেজগাঁও থানা পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেফতার করে।
রাষ্ট্রপতি থেকে ইউপি চেয়ারম্যান সবার নামেই ফেসবুক আইডি চালাতেন আনোয়ার-

ইউপি চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে মহামান্য রাষ্ট্রপতির নামেও ফেসবুক একাউন্ট খুলেছেন এই আনোয়ার। তার এই ভুয়া আইডির তালিকায় আছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলার ১০ নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম খান, চিত্রনায়ক শান্ত খান, অভিনেতা ও মডেল আব্দুন নুর সজল, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

এর মধ্যে কিছু আইডি ডিজএ্যাবল থাকলেও বাকিগুলো সবই সচল আছে। এসব আইডি থেকে আনোয়ার ওই ব্যক্তি সেজেই বিভিন্ন পোস্ট, ছবি দেন। আর ম্যাসেঞ্জারে বিভিন্ন মানুষের সাথে চ্যাট করেতেন।

ওসি সেজে ৭৭১ মেয়ের সাথে চ্যাট করেন আনোয়ার!

আনোয়ারের পড়াশোনার দৌড় ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত। তিনি গাইবান্ধা সদরের খোলাবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়েন। ৫ম শ্রেণিতে ফেল করার পর পড়াশোনা আর চালিয়ে যাননি। কিন্তু এই ৫ম শ্রেণি ফেল আনোয়ারই মেয়েদের সাথে চ্যাট করেন ওসি সেজে! তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীনের নাম ও ছবি ব্যবহার করে তিনি একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলেন। মূল আইডি থেকে ছবি ও স্ট্যাটাস নিয়ে ভুয়া এই আইডিতে নিয়মিত পোস্ট করেন আনোয়ার। আর ম্যাসেঞ্জারে বিভিন্ন মেয়ের সাথে চ্যাট করেন। এ পর্যন্ত ৭৭১ জন মেয়ের সাথে ম্যাসেঞ্জারে চ্যাট করেন আনোয়ার।

শিক্ষার্থী, গৃহিণী, প্রবাসী, মডেল সবাই আছেন তার এই তালিকায়। ম্যাসেঞ্জারে কথা বলার পরে হোয়াটসএপেও তাদের সাথে কথা বলেন। কথা বললেও কারও সাথে ভিডিও কলে আসতেন না তিনি। আবার কেউ তাকে দেখতে চাইলে কিংবা সন্দেহ করলে সাথে সাথেই তাকে ব্লক করে দিতেন আনোয়ার। তিনি মূলত মেয়েদের সাথে আপত্তিকর কথাবার্তা বলতেন। এদের মধ্যে কারও কারও সাথে ছবিও আদান প্রদান করেছেন। আবার কারও কারও কাছে টাকাও দাবি করেছেন।

নায়িকা হতে আনোয়ারের কাছে ধর্ণা!

চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলার ১০ নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম খানের নামে একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলেন আনোয়ার। ওই আইডিতে নিজেকে চলচ্চিত্র প্রযোজক হিসেবে দাবি করেন তিনি। সেই পরিচয় দেখেই তার সাথে বিভিন্ন মেয়ে ম্যাসেঞ্জারে কথা বলেন। মূলত নায়িকা হওয়ার জন্যই তারা যোগাযোগ করতেন। তারা ম্যাসেঞ্জারে সেলিম খান মনে করে আনোয়ারকে অনুরোধ করেন। আনোয়ারও এসব মেয়ের সরলতার সুযোগ নিতেন। তিনি নায়িকা বানাবে বলে তাদেরকে ছবি পাঠাতে বলেন। ছবি দেখে যেসব মেয়ে সুন্দর আনোয়ার তাদেরকে নায়িকা বানানোর আশ্বাস দিয়ে দিনের পর দিন কথা চালাতে থাকেন। এক পর্যায়ে গিয়ে কোন কোন মেয়ে নিজেরাই যোগাযোগ বন্ধ করে দিত। আর মাঝে মাঝে ধরা পরে যাওয়ার ভয়ে আনোয়ার নিজেই কোন কোন মেয়েকে ব্লক করে দিতেন। আর বাকিদের আরও স্লিম হতে হবে, স্মার্ট হতে হবে ইত্যাদি বলে এড়িয়ে যেতেন।

প্রেসের কর্মচারী হয়ে সাজতেন চলচ্চিত্র নায়ক-

আনোয়ার চাকুরি করেন ইসলাম প্রিন্টিং প্রেস নামের একটি প্রতিষ্ঠানে। সেখানে তিনি প্রিন্টিং মেশিনের হেলপার হিসেবে চাকরী করেন। কিন্তু তিনি ফেসবুকে শত শত মেয়ের সাথে কথা বলেন চলচ্চিত্র নায়ক শান্ত খান ও আব্দুন নুর সজল হিসেবে! এই দুই অভিনেতার নামেও ভুয়া আইডি খুলেন আনোয়ার। সেই আইডি থেকে বিভিন্ন মানুষের স্ট্যাটাসে কমেন্ট করেন তিনি। আর ম্যাসেঞ্জারে বিভিন্ন মেয়ের সাথে চ্যাট করেন। মেয়েরাও অভিনেতা শান্ত ও সজল মনে করে তাদের সাথে কথা বলে।

ইউটিউব দেখে দেখে ‘ফেসবুক মাস্টার’
আনোয়ারের কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া আনোয়ার চাকুরি করেন ইসলাম প্রিন্টিং প্রেস নামের একটি প্রতিষ্ঠানে। চাকুরির ফাঁকে ফাঁকেই তিনি ইউটিউব দেখে দেখে ফেসবুকের বিভিন্ন কলাকৌশল শেখেন। এভাবে শিখে শিখেই তিনি বিভিন্ন মানুষের ফেসবুকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে দেন। খোলাবাড়ি গ্রাম ও দাশ বেকারি মোড় এলাকায় তিনি ‘ফেসবুক মাস্টার’ নামেই পরিচিত। আইডি, পাসওয়ার্ড হারিয়ে গেলে তা উদ্ধার করা, পেইজ ভেরিফিকেশন, রিপোর্ট কিংবা স্ট্রাইক খাওয়া পেইজ রিকভারসহ ফেসবুকের যেকোন সমস্যার সহজ সমাধান হয়ে উঠেন আনোয়ার।

মেয়েদের ফেসবুক আইডি, পাসওয়ার্ড কৌশলে নিজের করে নেন আনোয়ার!

কারও ফেসবুক আইডি, পাসওয়ার্ড হারিয়ে গেলে তা উদ্ধার করে দেন আনোয়ার। এজন্য তার কাছে বিভিন্ন মেয়েরা আইডি, পাসওয়ার্ড উদ্ধারেও যোগাযোগ করতেন। কিন্তু যেসব আইডি তিনি উদ্ধার করে দিতেন সেসব আইডিই আনোয়ারের হয়ে যেত। আনোয়ার বিশেষ একটি কৌশল অবলম্বন করতেন, যার ফলে পরবর্তীতে ওই আইডি আনোয়ারের কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে যেত। পরে আনোয়ার সে আইডিই ব্যবহার করতেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪