বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে বলিউড, টালিউড এবং ঢালিউড তথা আমাদের দেশের গোটা মিডিয়া নড়েচড়ে বসেছে। আমাদের আশপাশের অনেকেই হয়তো নিজের অজান্তেই বিষন্নতায় আক্রান্ত।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের সময়ে এর প্রবনতা আরও কয়েকগুন বেড়ে চলেছে । আর্থসামাজিক নানা উদ্বেগ চারদিকে। এ ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে অনেককে। অন্যদিকে দীপিকা পাড়ুকোন বিষন্নতা কাটিয়ে ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিজীবনের স্বর্ণালি সময় পার করছেন। ঢাকার শোবিজের অনেক তারকা বিষন্নতাকে জয় করেছেন। এ বিষয়ে চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি বলেন,আমি প্রথমে বুঝতেই পারিনি ভেতরে ভেতরে আমাকে বিষন্নতা ঘিরে ধরেছে।
প্রচন্ড রকম অস্থিরতায় ভুগতাম, ইনসিকিউরড ফিল করতাম।পরে জানতে পেরেছি এগুলো মানসিক রোগের লক্ষ্মণ ।আমাদের সবারই পেশাগত কাজের পাশাপাশি ব্যক্তিগত, সামাজিক জীবন যাপনের বিষয়াদি আমাদের জীবন যাত্রাকে প্রভাবিত করে।
ক্যারিয়ারের নানা কারণে আমার মধ্যে হতাশা কাজ করা শুরু করে ২০১০ থেকে। সেটা মাত্রাতিরিক্ত আকার ধারণ করে ২০১১ সালের শেষের দিকে। সাথে আমার কিছু ব্যক্তিগত ঝামেলার কারনে আমি গভীরভাবে বিষন্নতায় ভুগতে শুরু করি। আমি খুব সহজ-সরল জীবনযাপন করা একটি মফস্বলের মেয়ে। সেখান থেকে আমি চলে এসেছিলাম আলো ঝলমল করা রঙীন দুনিয়ায়। কিন্তু এই দুনিয়া বাইরে থেকে যতটা আলোকোজ্জ্বল, ভেতরে চিত্রটা আলাদা।
এখানেও বিভিন্ন ধরনের পলিটিক্স হয়, যার কারনে অনেকেই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন।প্রথম দিকে মিডিয়াতে একটি নতুন মেয়ে বা ছেলে কাজ করতে এলে কেউই তেমন ভাবে কোনো সাপোর্ট করেন না। আমার ক্ষেত্রেও দেখতাম, আমার যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অনেক কাজ আমার হাত থেকে চলে যাচ্ছে। এবং পাশাপাশি আমার থেকে কম যোগত্যা সম্পন্ন হয়ত কেউ কেউ অনেক কাজ করছেন।
এটা আমাকে গভীর ভাবে বিষণ্ণতার দিকে ঠেলে দিচ্ছিলো । কিন্তু আমার এটা বুঝতে সময় লেগেছিল প্রায় ৫ বছর। ২০১৭ সালে আমি সাধারণ চেকআপ করার জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে তিনি আমাকে সাইকোলজিস্টের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। পরে জানতে পারি, আমি গভীর ডিপ্রেশনে ভুগছি। তখন আমার একা থাকতে ভয় লাগত। বিশেষ করে সন্ধ্যার সময়টা বিষন্নতা ঘিরে ধরত। মাঝে মাঝে আত্মহত্যা করার কথা ভাবতাম। পরে কলকাতার মনোচিকিৎসকের স্মরনাপন্ন হলে ওনার দেয়া চিকিৎসা সেবা নিয়ে আস্তে আস্তে ভালো হই।
এটা বলতে এখন কোনো দ্বিধা নেই। কিন্তু ওই সময়টায় বলতেও ভয় লাগত। তাই সবার প্রতি অনুরোধ বিষন্নতা যে কোন কারনেই আসতে পারে, এক এক জনের ক্ষেত্রে এক একভাবে বিষন্নতা আমাদের গ্রাস করে। তাই অবহেলা নয় যত দ্রুত বুঝতে পারবেন তত দ্রুত চিকিৎসকের স্মরনাপন্ন হোন। আর পাশের মানুষেদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ আপনার পাশে থাকা মানুষটির মনের আবেগ অনুভুতি গুলোর খেয়াল রাখুন।