স্টাফ রিপোর্টার-
রাজধানির কামরাঙ্গীরচর থানার সেকশন বেড়িবাঁধ এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের ময়লাবাহী ভ্যান গাড়ি উল্টো পথে যেতে বাধা দেওয়ায় কর্তব্যরত ট্রাফিক কনস্টেবলের উপর হামলার ঘটনায় জড়িত হামলাকারীকে একজনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতের নাম- ইসমাইল হোসেন জীবন (২৪)। গতকাল সোমবার তাকে রংপুর জেলার গঙ্গাচরা থানার গঙ্গাচড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এরআগে গত ২১ ডিসেম্বর দুপুরে কর্তব্যরত কনস্টেবল মতিয়ার রহমান (৫০) ওপর হামলা করেন জীবন। হামলা তিনি গুরুত্বর আহত হন।
মঙ্গলবার ( ২৬ ডিসেম্বর ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) জাফর হোসেন এ তথ্য জানান।
ডিসি জাফর বলেন, কামরাঙ্গীরচর থানার সেকশন বেড়িবাঁধ এলাকায় গত ২০ ডিসেম্বর দুপুরের দিকে একটি সিটি কর্পোরেশনের ময়লাবাহী ভ্যান গাড়ি উল্টো পথে যাওয়ার সময়ে ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল মতিয়ার রহমান বাধা দেন। এই বিষয় নিয়ে পুলিশ সদস্যের সঙ্গে বাকবিতান্ডায় জড়িয়ে যায় জীবন। পরবর্তীতে উপস্থিত অন্য পুলিশ সদস্য ও সার্জেন্টরা বিষয়টি মিমাংসা করে দেন। কিন্তু তাকে বাঁধা দেওয়া ও কথাকাটাটির জেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ট্রাফিক সদস্য মতিয়ারের ওপর হামলার পরিকল্পনা করেন। পরের দিন (২১ ডিসেম্বর) একই স্থানে দায়িত্বরত ট্রাফিক কনস্টেবল মতিয়ার দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় কাঠের ষ্ট্যাম্প দিয়ে পিছন থেকে মাথায় আঘাত করে।
হামলায় কনস্টেবল মতিয়ারের মাথা ফেটে গুরুত্বর আহত হন। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। অবস্থান অবনতি হওয়ায় প্রথমে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে পরবর্তীতৈ ন্যাশনাল ইন্সটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই ঘটনায় আহত ট্রাফিক সদস্যের ছেলে সাব্বির বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে কামরাঙ্গীচর থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তে নেমে ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হয়। হামলার ঘটনায় জড়িত ময়লাবাহী ভ্যানের চালক জীবনকে শনাক্ত করতে কামরাঙ্গীচারসহ আশাপাশের এলাকার ময়লা সংগ্রহকারী ইজারাদারসহ ৩০০ থেকে সাড়ে ৩৫০ জন পরিচ্ছন্ন কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এতে আসামি জীবনের অনুপস্থিতির বিষয়টি বেড়িয়ে আসে। পরবর্তীতে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের কাছ থেকে আসামি জীবনের পরিচয় ও ঠিকানা পাওয়া যায়। তবে এই ঘটনায় কাজ করতে গিয়ে পুলিশ দেখে ময়লা পরিবহন ও সংগ্রহের সঙ্গে জড়িত কর্মীদের কোনো তথ্য ভান্ডার নেই। ফলে তাকে শনাক্ত করতে বেগ পেতে হয় তদন্তকারী কর্মকর্তাকে।
লালবাগ বিভাগরে ডিসি আরও বলেন, ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের ওপর হামলায় জড়িত পলাতক আসামি জীবনের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ শেষে পুলিশ জানতে পারে রংপুর গঙ্গাচরা থানা এলাকায় আত্মগোপনে আছে। পরবর্তীতে গঙ্গাচরা থানা পুলিশের সহযোগিতায় হামলাকারী জীবনকে গ্রেফতার করে ঢাকায় আনা হয়।
এই হামলার ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কি না জানতে চাইলে ডিসি জাফর বলেন, ঘটনার পর আসামি জীবন দুজনের সঙ্গে কথা বলা তথ্য আমাদের দিয়েছেন। কিন্তু হামলায় তাদের সংশ্লিষ্টতা আছে কি না সে বিষয় তদন্ত করা হবে। তবে হামলার সময়ে তিনি একা ছিলেন। আর হামলায় ব্যবহৃত স্ট্যাম্পটি তার বাসায় ছিলো বলে দাবি তার। তবে সব কিছু সামনে রেখে আমরা তদন্ত করছি। পুলিশের ওপর হামলার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।