ইকরামুল হাসান-
মহান বিজয় দিবস,আগামীকাল শনিবার বাংলাদেশ পা দিবে বিজয়ের ৫৩ বছরে। বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল এই দিনটি‘কে উদযাপনের জন্য লাল-সবুজের রঙে সেজেছে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশ। দেশের পতাকা যেন এখন বহুতল ভবনের দেয়ালে দেয়ালে, রঙিন আলোর ছটায় আরও উজ্জ্বল হয়ে ধরা দিচ্ছে। রাতের এই দৃশ্য বিজয় দিবসের প্রাক্কালে বাঙালির জাতীয় চেতনাকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
আজ শুক্রবার ছুটির দিন সন্ধ্যার পর রাজধানীতে ঘুরে দেখা যায়, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনগুলোয় জাতীয় পতাকার আদলে আলোর প্রোজ্জ্বলন করা হয়েছে। জাতীয় সংসদ ভবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সংস্থার সদরদপ্তর -কার্যালয় সাজানো হয়েছে নানা রঙে। এছাড়া সকল বিভাগ,জেলা ,উপজেলার বিভিন্ন সরকারি স্থাপনাসহ বেসরকারি বিভিন্ন ভবনেও লাল-সবুজ রঙের আলো জ্বালানো হয়েছে। এর মধ্যে বাণিজ্যিক ভবনের পাশাপাশি বাসা-বাড়িও রয়েছে।
অনেক সড়ক লাল-সবুজ ঝাড়বাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে। কোথাও সড়কদ্বীপ, কোথাও সড়কবাতি ঝলমল করছে। কোথাও আবার লাল-নীল আলোর মাঝে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশাল ছবি শোভা পাচ্ছে, কোথাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি জ্বলমল করছে।
মহান বিজয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর ভোরে ঢাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন। বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ ফুল দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
দিনটিতে সরকারি ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি সকল সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাগুলো আলোকসজ্জায় সজ্জিত হবে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলোকে জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকায় সজ্জিত করা হবে। ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিভিন্ন বাহিনীর বাদক দল বাদ্য বাজাবেন।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণী দিয়েছেন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এদিন সংবাদপত্রগুলোয় প্রকাশ করা হবে বিশেষ ক্রোড়পত্র। এ ছাড়া ইলেকট্রনিক মিডিয়া মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করবে।