নিজস্ব প্রতিবেদক-
বাংলাদেশের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র কোনো পক্ষ নেবে না। ওয়াশিংটন কোনো একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না, বরং বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নিঃশর্ত সংলাপ চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লুর পাঠানোর বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এ কথা বলেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে ম্যাথিউ মিলারকে প্রশ্ন করা হয়, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলগুলো মধ্যে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। কিন্তু বিরোধী দলের অধিকাংশ রাজনৈতিক নেতা কারাগারে থাকা অবস্থায় কোনো সংলাপ কীভাবে হবে? আমি অবাক হচ্ছি এটা ভেবে যে, সরকারি ক্র্যাকডাউনের শিকার হওয়ায় বিরোধীদের কে বা কারা (ডোনাল্ড লুর) চিঠি গ্রহণ করেছে? সরকার বিরোধীদের ওপর সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে—তো এই পরিস্থিতির মধ্যে সংলাপ কীভাবে হতে পারে?
এই প্রশ্নের সরাসরি জবাব এড়িয়ে মুখপাত্র মিলার বলেন, ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে আমাকে আকৃষ্ট করায় সাংবাদিকদের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই এবং আমি তা করা থেকে (বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি) বিরত থাকব। বাংলাদেশের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র কোনো পক্ষ নেবে না। আমরা এক রাজনৈতিক দলের ওপর অন্য দলকে প্রাধান্য দেই না। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থন করি।’
দিল্লিতে ভারতীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের বৈঠকের বিষয়ে ইঙ্গিত করে ম্যাথিউ মিলারের কাছে জানতে চাওয়া হয়, আওয়ামী লীগ ছাড়া সব প্রধান রাজনৈতিক দলই রাষ্ট্রদূত পিটার হাস এবং অন্যান্য দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে সহযোগিতা করছে। তবে কেন মার্কিন সরকারকে বাংলাদেশের ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে? এটা কি ইঙ্গিত করে না যে, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার আমাদের দেশকে ইতিমধ্যে ভারতের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে? যুক্তরাষ্ট্র কি বিশ্বাস করে যে, ভারতীয়রা বাংলাদেশে যা খুশি তাই করতে পারবে?
এসব প্রশ্নের জবাবেও মিলার সরাসরি কোনো উত্তর না দিয়ে বলেন, ‘আমি অনেকবার যা বলেছি তা আবারও বলতে চাই—আমরা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করি। আমরা মনে করি, বাংলাদেশ সরকারের ভবিষ্যৎ দেশটির জনগণ দ্বারাই নির্ধারিত হওয়া উচিত। এ বিষয়ে আর কোনো কথা নয়।’
অপর এক প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয়, দিল্লিতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষ পর্যায়ের মন্ত্রীদের মধ্যকার ২ + ২ বৈঠকে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে ভারতীয় ও বাংলাদেশি গণমাধ্যমে। এ বিষয়ে ম্যাথিউ মিলার স্পষ্ট কোনো ধারণা দিতে পারবেন কি না?
জবাবে মিলার বলেন, বৈঠকে কি আলোচিত হয়েছে তা আমরা সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করেছি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিল্লিতে থাকাকালীন বিবৃতিতেও বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন। সুতরাং এ বিষয়ে আরও স্পষ্ট করে বলার কিছু নেই।