ডেস্ক রিপোর্ট –
বৃষ্টিকে একটা ধন্যবাদ দিতেই পারে পাকিস্তান। বেরসিক বৃষ্টির কারণেই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন টিকে রইল পাকিস্তানের। আজ নিউজিল্যান্ডকে ২১ রানে তারা হারিয়েছে বৃষ্টি আইনেই।
জিততে হলে আজ রেকর্ড গড়তে হতো পাকিস্তানকে। বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার। কেননা এর আগে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে কখনো ৪ শ বা তার বেশি রান তাড়া করে জেতার নজির নেই। যদিও বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৩৪৫ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড পাকিস্তানেরই। এবারের বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কীর্তিটি গড়েছে তারা।
বেঙ্গালুরুতে আজ পাকিস্তানের লক্ষ্য ছিল ৪০২ রানের। সেদিক থেকে ম্যাচে জয় পাওয়া পাকিস্তানের জন্য কঠিনই ছিল। আবার বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারিয়ে বসে পাকিস্তান। দলীয় ৬ রানে আউট হন আবদুল্লাহ শফিক। তবে বাবর আজমকে নিয়ে ম্যাচে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ান আরেক ওপেনার ফখর জামান।
দ্বিতীয় উইকেটে রেকর্ড ১৯৪ রানের অপরাজিত জুটি গড়েন বাবর–ফখর। বিশ্বকাপের ইতিহাসে পাকিস্তানের হয়ে যেকোনো উইকেটে যৌথভাবে সর্বোচ্চ। ১৯৯৯ বিশ্বকাপ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই সমান ১৯৪ রানের কীর্তি গড়েছিলেন সাঈদ আনোয়ার ও ওয়াজাহাতুল্লাহ ওয়াস্তি।
দুর্দান্ত এই জুটিতে চাপে পড়ে যায় নিউজিল্যান্ড। টিম সাউদি পাকিস্তানকে শুরুতে ধাক্কা দিলেও পরে ফখর–বাবরের হাতে বেধড়ক পিটুনিই খেয়েছে তাঁর সতীর্থেরা। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করছিলেন ফখর। প্রতিপক্ষের বোলারদের কোনো সুযোগই দিচ্ছিলেন না বাঁহাতি ব্যাটার। এতটাই আক্রমণাত্মক ছিলেন যে ৬৩ বলে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তিনি। বিশ্বকাপে তাঁর প্রথম সেঞ্চুরিটি আবার পাকিস্তানের হয়ে দ্রুততম।
ফখরের আগে রেকর্ডটি ছিল ইমরান নাজিরের। ২০০৭ বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৯৫ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। ফখর ৮১ বলে ১২৬ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৮ চার ও ১১ ছক্কায়। তাঁর মতো আক্রমণাত্মক ব্যাটিং না করলেও দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন বাবর। ৬৩ বলে ৬৬ রান করেছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক। তাঁর অপরাজিত ইনিংসে ৬ চারে বিপরীতে ছক্কা ২ টি।
বাবর–ফখর দুর্দান্ত ব্যাটিং করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিলেও প্রথমবার বৃষ্টি আসার আগ পর্যন্ত লক্ষ্যটা বেশ কঠিনই ছিল। ২১.৩ ওভারে পাকিস্তান যখন ১ উইকেটে ১৬০ রানে তখন প্রথমবার ম্যাচে বৃষ্টি আঘাত হানে। সে সময় হাতে ৯ উইকেট থাকলেও জিততে হলে আরও ২৪২ রান করতে হতো পাকিস্তানকে। যা বেশ কঠিনই ছিল। দুই ঘন্টা খেলা বন্ধের পর তাদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪১ ওভারে ৩৪১ রানের। ৪ ওভার পর আবারও বৃষ্টি আসলে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত আর খেলা না হওয়ায় ডিএলএস পদ্ধতিতে ২১ রানে জয় পায় পাকিস্তান।
এ জয়ে সেমিফাইনালের দৌড়ে থাকল পাকিস্তানও। ১৯৯২ চ্যাম্পিয়নদের জয়ে ভারতের পর দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ চারও নিশ্চিত হয়েছে। বাকি দুটি জায়গার জন্য চার দল লড়াই করছে। সেই চার দল হচ্ছে— অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। সবারই পয়েন্ট ৮। পাকিস্তান ৮ ম্যাচে ৮ পয়েন্টে পাঁচে আছে। সমান ম্যাচ ও পয়েন্ট হলেও রান রেটে এগিয়ে থাকায় কিউইরা চারে। আর ৭ ম্যাচে ৮ পয়েন্টে ছয়ে আছে আফগানরা। অন্যদিকে তিনে থাকা অস্ট্রেলিয়ার পয়েন্ট ৬ ম্যাচে ৮।