নিজস্ব প্রতিবেদক
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে বাংলাদেশে পাঠাতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক।
শুক্রবার (১৮আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ আয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।নানক বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে এ রাজপথে রক্তের প্লাবন বইয়ে দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ সেদিন হত্যার লীলাভূমিতে পরিণত করেছিল তারেক রহমান। তার পরিকল্পনায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে শান্তি সমাবেশে একটি, দুইটি, পাঁচটি নয়; ১৪টি গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হলো। শেখ হাসিনাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য এ হামলা করা হয়েছিল। নেতাকর্মীরা মানবঢাল দিয়ে তাকে রক্ষা করে যখন গাড়িয়ে ওঠানো হচ্ছিল, তখন তার গাড়িতেও গুলি চালানো হয়।
এ সময় তিনি বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে বাংলাদেশ পাঠিয়ে দেয়ার জন্য যুক্তরাজ্যের কাছে দাবি জানান।
বিভিন্ন দেশ বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করে নানক বলেন, এখন পর্যন্ত যাদের খুঁজে পাওয়া গিয়েছে তাদের মধ্যে নুর চৌধুরী আছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, কানাডায় আছেন মেজর কিসমত। আমাদের প্রশ্ন এই খুনিরা যে দেশ দুটিতে রয়েছে সেই দেশ দুটি মানবাধিকার, গণতন্ত্র সভ্যতার কথা বলে আর খুনিদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়। সেটা ধিক্কার জানানোর ভাষা জানা নেই।বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল বলেছেন, জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত নন। আমরা প্রশ্ন রাখতে চাই, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর সর্বোচ্চ সুবিধাভোগী কে হয়েছে? সেই সুবিধাভোগী জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর জেনারেল জিয়া অবৈধভাবে আইন লঙ্ঘন করে সেদিন হ্যাঁ-না ভোট দিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে আত্ম-স্বীকৃত খুনিদের এমপি বানিয়ে এনেছিলেন। মির্জা ফখরুল জবাব দেবেন কী কারণে বঙ্গবন্ধুর আত্ম-স্বীকৃত খুনিদের সংসদে এনেছিলেন।
যখন খুনিদের বিরুদ্ধে জাগরণ গণ-ধিক্কার সৃষ্টি হয়েছে, তখন খুনিদের বিশেষ বিমানে বিদেশে কে পাঠিয়েছিল? জিয়াউর রহমান। বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি কে দিয়েছিল, জিয়াউর রহমান। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বিধায় হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী জিয়াউর রহমান এ খুনিদের দেশ থেকে বাইরে পাঠিয়ে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিল।
এ সময় মির্জা ফখরুলকে ইতিহাস জেনে কথা বলার পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগের এ নেতা।মানববন্ধনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বাঙালি জাতির জীবনে শান্তি সৃষ্টি করতে হলে, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করতে হলে, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে বাঁচাতে হলে ও অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ রক্ষা করতে হলে সেই খালেদা-তারেকের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে হলে, পঁচাত্তরের খুনিদের এবং ২১ আগস্টের খুনিদের অবশ্যই বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে বিচারের রায় কার্যকর করতে হবে। তা না হলে বাংলাদেশ নিরাপদ নয়, গণতন্ত্র নিরাপদ নয়।
তিনি বলেন, জঙ্গিদের প্রশয় আশ্রয় দিয়ে সম্প্রীতির বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চায় বিএনপি-জামায়াত। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর স্বাভাবিক মৃত্যুর পরও বিএনপির ইন্ধনে রাতের আধারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা করেছে। হামলা করেছে পথচারীদের ওপর, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর, বোমা মেরেছে, অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তার মানে এখনো তারা ধ্বংসের পথে হাঁটছে।
যুব মহিলা লীগের সভাপতি আলেয়া সারোয়ার ডেইজির সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুনতানা লিলি সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।
এছাড়াও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুব মহিলা লীগের সভাপতি ফারজানা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক নিলুফা রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি তাহেরা খাতুন লুৎফা, সাধারণ সম্পাদক শামীমা রহমান বক্তব্য রাখেন।
বা বু ম / অ জি