জাহাঙ্গীরনগর সংবাদদাতা
অ্যাম্বুলেন্স দিতে দেরি করায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে তালা ঝুলিয়ে আড়াই ঘণ্টা পর আবার খুলে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাওলানা ভাসানী হল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান দুই ফটক ও ফার্মেসির কক্ষে তালা দেন। এতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা ভোগান্তিতে পড়লে রাত পৌনে নয়টার দিকে তাঁরা তালা খুলে দেন।
শিক্ষার্থী ও চিকিৎসাকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাওলানা ভাসানী হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঢাকার হাসপাতাল থেকে রোগীকে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে অ্যাম্বুলেন্স চান ভাসানী হলের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় চিকিৎসাকেন্দ্র-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অ্যাম্বুলেন্স দিতে দেরি করলে সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে তালা লাগিয়ে দেন তাঁরা।
মাওলানা ভাসানী হল ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী নাহিদুল হক বলেন, ঢাকায় চিকিৎসাধীন তাঁদের হলের এক শিক্ষার্থীকে আনতে বেলা তিনটার দিকে হলের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে যোগাযোগ করেন। তখন সেখানকার কর্মকর্তারা জানান, তাঁদের অ্যাম্বুলেন্সের কাগজপত্র না থাকায় সেটি ঢাকায় যেতে পারবে না। পরে হলের প্রাধ্যক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে বিষয়টি জানানো হয়। তাঁরা অনুমতি দিলেও চিকিৎসাকেন্দ্র অ্যাম্বুলেন্স দিতে দেরি করে। অ্যাম্বুলেন্সচালকেরা নাকি ঢাকায় যেতে চান না বলে নানা টালবাহানা শুরু করেন। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে চিকিৎসাকেন্দ্রে তালা লাগিয়ে দেন।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান কর্মকর্তা শামছুর রহমান আলম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের কোনো গাড়ির কাগজপত্র নেই। ঢাকায় মাঝেমধ্যে ট্রাফিক পুলিশ অ্যাম্বুলেন্সগুলো ধরে চালকদের বিরুদ্ধে মামলা দেয় । চালকদের জরিমানা করলে সেই টাকা প্রশাসন দেয় না। এ জন্য চালকেরা ঢাকায় যেতে চান না। আজ ভাসানী হলের শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্স নিতে চাইলে চালকেরা যেতে রাজি হননি। চিকিৎসাকেন্দ্রে তালা ঝোলানোর বিষয়টি প্রশাসন ছাত্রলীগের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করছে বলে তিনি জানান।
গাড়ির কাগজপত্র না থাকার বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে কি না জানতে চাইলে শামছুর রহমান আলম বলেন, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিষয়টি কয়েক দফায় লিখিতভাবে জানিয়েছেন। এরপরও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন কার্যালয়ের প্রধান অধ্যাপক আওলাদ হোসেন বলেন, তিনি পরিবহনের দায়িত্ব নিয়েছেন কয়েক দিন আগে। গাড়িগুলোর কাগজপত্র নেই তিন বছর ধরে। তিন দিন আগে ঢাকায় এক অ্যাম্বুলেন্সচালককে পুলিশ মামলা দিলে চালকেরা বিষয়টি তাঁকে জানান। কিন্তু রাতারাতি তো সমাধান করা সম্ভব নয়। চালকদের তিনি কাগজপত্র প্রস্তুত করে বিআরটিসিতে নিয়ে যেতে বলেছেন। তাঁরা গেলেই অনুমোদন দিয়ে দেবে। কিন্তু চালকেরা নিয়ে যান না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘শুনেছি চিকিৎসাকেন্দ্রে কিছু শিক্ষার্থী তালা ঝুলিয়েছে। আমি সিনিয়র শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছি।’
বা বু ম / অ জি