বরিশাল সংবাদদাতা
সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার সাড়ে চার বছর পর গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন বরিশাল-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
মঙ্গলবার (২০ জুন) দুপুরে বরিশাল নগরীর কবি জীবনানন্দ দাশ সড়কের একটি কনভেনশন হলে তিনি এই মতবিনিময় করেন।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানান। একইসঙ্গে আগামী নির্বাচনের বাকি যে সময় রয়েছে সেই সময়ে বরিশালের কল্যাণের জন্য মিলেমিশে কাজ করার আহ্বান জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিগত বছরগুলোতে কী কারণে আমি শহরের উন্নয়নে হাত দিতে পারিনি তা আপনারা ভালো জানেন। সিটি নির্বাচনে আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ মেয়র নির্বাচিত হলে শহরের সকল সড়ক সংস্কার করে দেওয়া হবে। তিনি এখন ঢাকায় রয়েছেন, নয়তো আজকের মতবিনিময় সভায় তারও উপস্থিত থাকার কথা ছিল। তাছাড়া তিনি থাকলেও এই মুহূর্তে এমন আয়োজনে তারা আসাটা ঠিক হবে না। যেহেতু তিনি এখনও শপথ নেননি। শপথ নেওয়ার পর আমরা দুজনে মিলে নগরীর উন্নয়ন কাজে হাত দেব।
জাহিদ ফারুক বলেন, আলেকান্দা এলাকার একটি টয়লেট আমার অনুসারী পরিচয় দিয়ে দখল করেছে এরকম একটি সংবাদ কয়েক দিন আগে প্রকাশ হয়েছে। এমন কোনো ঘটনা ঘটলে সরাসরি আমাকে কল দিবেন অথবা খান মামুনকে (মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক) জানাবেন। আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। বিশ্বাস করেন, আমি এসব একদম সহ্য করি না। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি আমি মেনে নেব না। তাতে যদি আমার প্রতিমন্ত্রীত্ব চলে যায়, তাতেও সমস্যা নেই।
তিনি আরও বলেন, অনেক সময় সংবাদের শিরোনাম দেখলেই একটা লোক সর্ম্পকে নেগেটিভ ধারণা তৈরি হয়ে যায়। অথচ ওই সংবাদের ভেতরে পড়লে দেখা যায় শিরোনামে যতটা নেগেটিভভাবে লেখা হয়েছে ভেতরে ততটা নেই। এখনকার সময়ে পাঠকদের পুরো সংবাদ পড়ার তেমন সময় নেই। এজন্য একটু বিবেচনা করে সংবাদ প্রচারের আহ্বান জানান তিনি।
বরিশালের মানুষ তাকে বেশি সময় পান না এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য। শুধু এই আসন নিয়ে বসে থাকলে একজন সিনিয়রকে আমার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে দিয়ে দিতে পারেন। তাছাড়া সদর আসনের পাশাপাশি আমাকে পুরো দেশ দেখতে হয়। তারপরও প্রতি সপ্তাহে আমি বরিশালে আসি। কেউ বলতে পারবে না যে আমার কাছে গিয়ে খালি হাতে ফিরেছে। তারপরও ভুলত্রুটি হতে পারে। ভুল তো মানুষেরই হয়। আগামী দিনগুলোতে আমরা মিলেমিশে নতুন বরিশাল গড়ে তুলতে কাজ শুরু করবো।
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনেক এলাকায় ভাঙন ঠেকানো যেত না। আমি উদ্যোগ নিয়ে ভাঙন বন্ধ করেছি। দেশের ৪০০ এলাকায় আমি ভ্রমণ করেছি। সেসব জায়গায় মানুষের দুর্ভোগ শুনে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি ওইসব এলাকার মানুষ আমাকে দেবতা মনে করেন।
তিনি আরও বলেন, বরিশাল একেবারে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। প্রাচ্যের ভেনিস শেষ হয়ে গিয়েছিল। নতুন মেয়রকে নিয়ে আমাদের বরিশালের গৌরবান্বিত সময় ফিরিয়ে আনব। নগরীর সাতটি খাল খনন করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনব। যাতে করে সামনের বছর থেকে বরিশালে জলাবদ্ধতা না হয়।
সাড়ে চার বছর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কেন মতবিনিময়ের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিল, মুঠোফোনে প্রতিমন্ত্রীকে পাওয়া যায় না এবং সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে দেওয়া পরামর্শ কী কোনো সতর্কতা বহন করে? সাংবাদিকদের করা এসব প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
মতবিনিময় সভায় সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমান মধু, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহামুদুল হক খান মামুন, সিটি কর্পোরেশনের ২০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লব, ২৫নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।
বা বু ম / অ জি