রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় অবস্থিত প্যারামাউন্ড কোল্ড ষ্টোরেজে র্যাব-২ এর অভিযানে ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুর মজুদ ও বাজারজাতকরণের অভিযোগে ০৬ জনকে ১৭ লক্ষ টাকা জরিমানা এবং বিপুল পরিমাণ নষ্ট ও মেয়াদোত্তীর্ণ বিভিন্ন প্রকারের খেজুর জব্দ।
র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃংখলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। র্যাব শুরু থেকে যে কোন ধরনের অপরাধ, ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা, প্রতারণা মূলক অপরাধ প্রতিরোধ এবং প্রতারক চক্রকে সনাক্ত ও গ্রেফতারের জন্য নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে। এছাড়া, এসকল প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে র্যাব-২ একটি বিশেষ দল গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
র্যাব-২ গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে বিভিন্ন জাতের ভেজাল, মেয়াদোত্তীর্ণ, নষ্ট খেজুর মজুদ এবং বাজারজাত করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা নজরদারীর ভিত্তিতে গত ২৭/০৪/২০২১খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক ১২০০ ঘটিকা হতে ২৩০০ পর্যন্ত র্যাব-২ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা এলাকায় অবস্থিত প্যারামাউন্ড কোল্ড ষ্টোরেজ লিঃ এ র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধির সহযোগিতায় অভিযান পরিচালনা করা হয়।
উক্ত অভিযান পরিচালনার সময় আভিযানিক দল কোল্ড ষ্টোরেজে রক্ষিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পণ্যের গুণগত মান যাচাইকালে নষ্ট, ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুর মজুদ ও বাজারজাতকরণের অপরাধে ০৬টি প্রতিষ্ঠানের মালিক ক। মোঃ হাসনাইন (৩৮), মালিক, মেসার্স সাকিব ট্রেডিং, মিরপুর-১১, ঢাকা’কে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা, খ। মোঃ আরিফুল ইসলাম (৪২), মালিক, মদিনা ফুডস শপ, বনানী, ঢাকা’কে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা, গ। তারিক আল দীন (৩৮), মালিক, এলডুরাডু এন্টারপ্রাইজ, পূর্ব তেজতুরী বাজার, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, ঢাকা’কে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা, ঘ। মোঃ কামরুজ্জামান (৩৫), মালিক, কামরুজ্জামান এন্টারপ্রাইজ, শ্রীপুর, গাজীপুর’কে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা, ঙ। মোঃ গোলাম মোস্তফা (৪৩), মালিক, সোর্স ডিস্ট্রিবিউশন, দক্ষিণখান, ঢাকা’কে ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা এবং চ। মোঃ জাবের (৩০), মালিক, উত্তরা ফুডস, রাজলক্ষী, ঢাকা ’কে ২ লক্ষ টাকা জরিমানাসহ ১৭ লক্ষ টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমান আদালত এবং আনুমানিক ২১,২৬০ কেজি পরিমাণ ভেজাল, নষ্ট ও মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুর জব্দ করতঃ ধ্বংস করা হয়।
প্রাথমিক অনুসন্ধান ও জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, বেশিরভাগ খেজুরের প্যাকেট/কার্টুনে আমদানীকারকের বিস্তারিত তথ্য নেই। আরও উল্লেখ্য যে, মেয়াদোর্ত্তীনের তারিখ আলাদাভাবে পেষ্টিং করে নতুন ভাবে কার্টুনে বসানো হয়। বেশ কিছু কার্টুনে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্নের তারিখ নেই। আসামীরা প্রত্যেকেই স্বীকার করে যে তারা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের ভেজাল, মেয়াদোত্তীর্ণ ও নষ্ট ভোগ্যপণ্য আমদানি করে তা খোলাবাজারে সরবরাহ/বিক্রয় করে আসছে। মূলত পবিত্র মাহে রমজান’কে টার্গেট করে তারা কম দামে ভেজাল, মেয়াদোত্তীর্ণ, নষ্ট ও মানহীন খেজুর বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করে উক্ত কোল্ড ষ্টোরেজে মজুদ করেছে এবং অধিক মুনাফালোভী এই চক্র মানহীন এসব খেজুর খুচরা বাজারে বাজারজাতকরণের মাধ্যমে দেশের সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে।
ফলে সাধারণ জনগণের স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধিসহ খাদ্যের সঠিক পুষ্টিমান থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।উপরোক্ত বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।