গতকাল শনিবার সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সভা শেষে এমন সিদ্ধান্ত নেয় সংগঠনটি। সম্প্রতি বিদেশি শিল্পীদের দেশীয় বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্রে কাজের ক্ষেত্রে নতুন নীতিমালা তৈরি হয়েছে। দেশের চলচ্চিত্রে বিদেশি অভিনয়শিল্পী, কলাকুশলী, সংগীতজ্ঞ, সংগীতশিল্পী ও বিজ্ঞাপনে বিদেশি শিল্পীর অংশগ্রহণ সংক্রান্ত নীতিমালা-২০২০ (সংশোধিত) জারি করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়।
দেশীয় বিজ্ঞাপনে বিদেশি শিল্পী অংশগ্রহণের অনুমোদনের জন্য বিজ্ঞাপন-নির্মাতা কোনো ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান সরাসরি এবং চলচ্চিত্র নির্মাণসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রযোজক/পরিচালক/প্রতিষ্ঠানকে তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে।নীতিমালায় আরো বলা হয়, এ ধরনের বিদেশি শিল্পীর অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিজ্ঞাপনচিত্র তৈরির ক্ষেত্রে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান/ব্যক্তিকে প্রত্যেক বিদেশি শিল্পীর জন্য পাঁচ লাখ টাকা এবং নির্মিত বিজ্ঞাপন প্রচারের সময় টিভি চ্যানেলের এককালীন প্রতি মিনিট ব্যাপ্তির জন্য ১০ হাজার টাকা সরকারকে দিতে হবে।
বিনা পারিশ্রমিকে বিদেশি অভিনয়শিল্পী, কলাকুশলী, সংগীতজ্ঞ, সংগীতশিল্পী ও বিজ্ঞাপনে বিদেশি শিল্পীদের অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ করা যাবে না। শিল্পীদের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিপত্রে পারিশ্রমিকের পরিমাণ ও পারিশ্রমিক পরিশোধের পদ্ধতি উল্লেখ থাকতে হবে। বিদেশি শিল্পীর প্রাপ্ত সম্মানী দেশের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী আয়কর ও ভ্যাটের আওতাভুক্ত হবে বলে সংশোধিত নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
অনুমোদনের জন্য সুপারিশকৃত বিদেশি অভিনয়শিল্পী, কলাকুশলী, সংগীতজ্ঞ, সংগীতশিল্পী ও বিজ্ঞাপনে বিদেশি শিল্পীদের তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে ওয়ার্ক পারমিট গ্রহণ করতে হবে। সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে স্থানীয় চলচ্চিত্রে বিদেশি কণ্ঠশিল্পীর গাওয়া গান ব্যবহার করা যাবে। বিদেশি শিল্পী সরকার অনুমোদিত সময় পর্যন্ত দেশে অবস্থান করবেন। সরকারি অনুমোদন ছাড়া ভিন্ন কোনো ছবির কাজে বা বেসরকারি কোনো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
অনিবার্য কারণবশত পূর্বানুমোদিত শিল্পীর পরিবর্তন প্রয়োজন হলে বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে সরাসরি এবং চলচ্চিত্রসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হবে।এ প্রসঙ্গে প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এখন শুধু বাংলাদেশ চিন্তা করে চলচ্চিত্র নির্মাণ করলে চলচ্চিত্র চলবে না। নির্মাণ করতে হবে বিশ্বমানের চলচ্চিত্র।
আর বিশ্বমানের চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে গেলে দেশ-বিদেশের শিল্পী ও কলাকুশলী প্রয়োজন। তা ছাড়া হাতেগোনা কয়েকজন শিল্পী ও কলাকুশলীর কাছে আমরা জিম্মি, এই আইন যদি কার্যকর হয়, তবে আমরা আরো বেশি জিম্মি হয়ে যাব। তাই আমরা চাই বিদেশি শিল্পী ও কলাকুশলীদের ক্ষেত্রে যে কর ধরা হয়েছে, তা বাতিল করা হোক। আমরা চাই বিনা করে শিল্পী ও কলাকুশলীরা যেন আমাদের দেশের চলচ্চিত্রে কাজ করতে পারেন।’খসরু আরো বলেন, ‘আমরা এফবিসিসিআইয়ের অন্তর্ভুক্ত। তাদের মাধ্যমে আমরা তথ্য মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি নিয়ে আবেদন করছি।
যেন শিল্পী ও কলাকুশলীদের অবাধে দেশের ছবিতে কাজ করাতে পারি। আমাদের কার্যনিবাহী কমিটির সভায় সবাই এ বিষয়ে একমত হয়েছি। অন্যথায় অনেক প্রযোজকই চলচ্চিত্র নির্মাণে এগিয়ে আসবে না।’‘গল্পের প্রয়োজনে শিল্পী প্রয়োজন হয়, সব চরিত্রে অভিনয় করার মতো শিল্পী কি আমাদের আছে? টেকনিক্যালি আমরা অনেকটাই পিছিয়ে আছি।
এখন ভালো মানের কিছু তৈরি করতে গেলে দক্ষ কলাকুশলী প্রয়োজন। এখন সরকার যদি এদের নিয়ে কাজ করতে বেশি বেশি ট্যাক্স চায়, তবে তো ভালো কাজ করা সম্ভব নয়। আর যা-তা কাজ করলে এখন আর দর্শক দেখবে না। তাই আমাদের সরকারের কাছে আকুল আবেদন, তারা যেন বিষয়টি সুবিবেচনা করেন,’ যোগ করেন খসরু।